প্রতীকী ছবি
দূষণের পরোয়া না করে ফের খোলা জায়গায় দাহ করা হল হাওড়া মর্গের শতাধিক বেওয়ারিশ দেহ। আদালতের নির্দেশ অমান্য করে একসঙ্গে এত দেহ দাহ করার প্রতিবাদ জানিয়ে হাওড়ার জেলাশাসককে চিঠি দিয়েছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। সেই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে তিনি আদালতে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তবে জেলা প্রশাসনের দাবি, কোভিড পরিস্থিতি এবং টানা বৃষ্টির কারণে বহু বেওয়ারিশ দেহ মর্গে জমে গিয়েছিল। তাই সমস্ত বিধি মেনেই সেগুলি দাহ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রের খবর, হাওড়ার মল্লিকফটকের পুলিশ মর্গে জমে থাকা শতাধিক বেওয়ারিশ দেহ রবিবার গভীর রাতে শিবপুর শ্মশানে নিয়ে গিয়ে কাঠের চুল্লিতে দাহ করা হয়। এর ফলে কালো ধোঁয়া আর তীব্র কটু গন্ধে ভরে যায় গোটা এলাকা। শীতকাল বলে সেই ধোঁয়া আর গন্ধ অনেকক্ষণ ধরে স্থায়ী হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, হাওড়ার পুলিশ মর্গে একসঙ্গে ৪০টি মৃতদেহ সংরক্ষণ করা সম্ভব। ১০টি মৃতদেহ সংরক্ষণের জন্য একটি করে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র বরাদ্দ রয়েছে। মর্গে এমন মোট চারটি যন্ত্র রয়েছে, যেগুলির সাহায্যে ১০টি করে দেহ সংরক্ষণ করা যায়। অর্থাৎ, মোট ৪০টি দেহ একসঙ্গে রাখা সম্ভব। সেই জায়গায় দেহ জমে গিয়েছিল ১১৯টি।
এরই মধ্যে আবার মর্গের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রগুলি কয়েক মাস ধরে খারাপ হয়ে পড়ে থাকায় দেহগুলি সংরক্ষণ করে রাখাও আর সম্ভব হচ্ছিল না। দুর্গন্ধে টেকা দায় হয়ে পড়েছিল। তাই সব দেহ একসঙ্গে দাহ করার ব্যবস্থা হয়। রবিবার রাতে পলিথিন ব্যাগে দেহগুলি মুড়িয়ে লরিতে করে শিবপুর শ্মশানে নিয়ে গিয়ে দাহ করা হয়।
সোমবার সকালে শিবপুর শ্মশানে গিয়ে দেখা যায়, শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লির পাশে একটি ফাঁকা জায়গায় ছাইয়ের স্তূপের মধ্যে তখনও পড়ে রয়েছে দাহ না হওয়া িকছু হাড়গোড়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে সুভাষবাবু বলেন, ‘‘১৯৯৫ সালে এ ভাবে বেওয়ারিশ দেহ পোড়ানো নিয়ে কলকাতা হাই কোর্ট ও পরবর্তী কালে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছিল। ১৯৯৬ সালের জুন-জুলাই মাসে হাই কোর্টের বিচারপতিরা হাওড়ার পুলিশ মর্গ দেখেছিলেন। ওই সময়ে পরিবেশ দূষিত করে এ ভাবে দেহ দাহ করায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আদালত। ফের এ ভাবে বেওয়ারিশ দেহ দাহ করা চূড়ান্ত বেআইনি ও অনৈতিক কাজ হয়েছে।’’
এ দিন সুভাষবাবু জানান, গোটা ঘটনাটি জানিয়ে তিনি জেলাশাসককে চিঠি দিয়েছেন। হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন বলেও জানিয়েছেন।
তবে হাওড়া জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তার দাবি, ‘‘রেলে কাটা পড়া অনেক বেওয়ারিশ দেহ দূরদূরান্ত থেকে হাওড়া পুলিশ মর্গে আসে। সেগুলির শনাক্তকরণ না হওয়ায় দিনের পর দিন পড়ে থাকে। এই ভাবে দেহের পাহাড় জমে যায়। তখন এই ভাবে একসঙ্গে দাহ করা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy