উদয়নারায়ণপুরে দামোদরের পারে হয়েছে কংক্রিটের বাঁধ। নিজস্ব চিত্র।
তাদের টাকায় হাওড়া-হুগলিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণের প্রথম পর্যায়ের কাজের অগ্রগতি দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাঙ্ক। ফের এক হাজার কোটি টাকা ঋণ দিতেও রাজি হয়েছে তারা। কিন্তু ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের একাংশ আগ্রহ না দেখানোয় ওই ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্য সেচ দফতরের কিছু কর্তা।
সেচ দফতরের একটি সূত্রের খবর, প্রথম পর্যায়ে যে কাজ হয়েছে, তার মধ্যে ছিল না এমন কিছু কাজের প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে ওই এক হাজার কোটি টাকায়। তা হলে হাওড়া ও হুগলির বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজ সম্পূর্ণ করা যাবে। কিন্তু এক সেচ-কর্তা বলেন, ‘‘ঋণ এবং কাজের প্রস্তাব আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করি। প্রথম দিকে আগ্রহ দেখালেও এখন এই বিষয়টি নিয়ে আর না এগোনোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
কিন্তু কেন?
সেচ দফতর বা দফতরের সচিবালয়ের কেউ সরকারি ভাবে এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি। সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি প্রথমে বলেন, ‘‘কী জানতে চান, বলুন।’’ তারপরে সব শুনে ফোন কেটে দেন।
চার বছর ধরে বিশ্বব্যাঙ্কের প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার ঋণে দামোদর অববাহিকা সংলগ্ন পাঁচটি জেলায় সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজ চলছে। সেই কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা আগামী বছরের শেষে। সপ্তাহখানেক আগে বিশ্বব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা যে কাজ চলছে, তা পরিদর্শন করতে আসেন। পরিদর্শন শেষে সেচ দফতরের সঙ্গে বৈঠকে বসে দ্বিতীয় পর্যায়ে যে ঋণ বিশ্বব্যাঙ্ক দিতে চায়, সে বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই বৈঠকের আগেই উপর মহল থেকে ঋণের বিষয়টি নিয়ে উচ্চবাচ্চ না করার জন্য তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হয় বলে রাজ্য সেচ দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানান।
ওই সেচ-কর্তা বলেন, ‘‘কেন ঋণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে বারণ করা হল, তার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। তবে এই বিষয়ে আলোচনা না হওয়ায় বিশ্বব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা কিছুটা হতাশ হয়েছেন।’’
এক হাজার কোটি টাকার নতুন যে কাজের প্রস্তাব বিশ্বব্যাঙ্ককে দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে আছে মূলত হুগলির খানাকুল ২ এবং হাওড়ার আমতা ২ ব্লক। এই দুই ব্লকের বেশ কিছু কাজ বিশ্বব্যাঙ্কের চলতি প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত নেই। দ্বিতীয় পর্যায়ে ঋণ পেলে সেই সব কাজ করা যাবে এবং দু’টি জেলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে সেচ দফতর সূত্রের দাবি। দ্বিতীয় পর্যায়ের পরিকল্পনায় রাখা হয়েছে আমতা ২ ব্লকের ‘দ্বীপাঞ্চল’ বলে পরিচিত ভাটোরা এবং ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান— এই দুই পঞ্চায়েতকে বাঁধ দিয়ে ঘিরে ফেলা এবং এই এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া রূপনারায়ণের ড্রেজ়িং।
সেচ দতরের এক কর্তা জানান, ডিভিসি যে জল ছাড়ে, তা দামোদরবাহিত হয়ে এসে আমতা ২ ব্লক দিয়ে বয়ে যাওয়া রূপনারায়ণ এবং মুণ্ডেশ্বরী নদী হয়ে হুগলি নদীতে পড়ে। কিন্তু রূপনারায়ণ মজে যাওয়ায় সেই জল মসৃণ ভাবে বেরোতে পারে না। ফলে, আমতা ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। জলের চাপে বাগনান ১ ব্লকেও রূপনারায়ণের পার ভাঙে। ড্রেজ়িং হলে সেই সমস্যা মিটবে। আবার মুণ্ডেশ্বরীর বাঁধ সংস্কার হলে ফি বছর প্লাবিত হওয়ার হাত থেকে বাঁচবে খানাকুল ২ ব্লকও।
এখন বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়ার অংশবিশেষ, হাওড়া এবং হুগলিতে সেচ ব্যবস্থার সংস্কার এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজ চলছে। সেচ সংস্কারের কাজ হচ্ছে দুই বর্ধমান এবং বাঁকুড়ায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy