উলুবেড়িয়া স্টেডিয়াম মাঠ।
এক সময়ে ফুটবল পায়ে মাঠ কাঁপিয়েছেন। প্রাক্তন ভারতীয় ফুটবলার বিদেশ বসু বছর আড়াই ধরে উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক। অথচ, এই কেন্দ্রেই খেলাধুলো কার্যত লাটে উঠেছে বলে অভিযোগ বহু মানুষের। সেই তালিকায় প্রাক্তন খেলোয়াড়েরাও রয়েছেন। বছর পনেরো ধরে উলুবেড়িয়া থানা ফুটবল লিগ বন্ধ। কয়েক কোটি টাকা খরচ করে ২০১৬ সাল নাগাদ উলুবেড়িয়া স্টেডিয়াম সংস্কার করা হলেও খেলা হয় না।
এলাকাবাসীর অনেকের কটাক্ষ, রাজনীতিতে এসে খেলার প্রতি ভালবাসা হারিয়েছেন বিদেশ। সরকারি স্তরেও খেলাধুলোর প্রতি বাড়তি আগ্রহ দেখানো হচ্ছে না বলে তাঁদের অভিযোগ। বিদেশ এ কথা মানেননি। তাঁর দাবি, ‘‘এলাকায় খেলাধুলোর প্রসারে অনেক চেষ্টা করছি। কলকাতা থেকে দল এনে প্রদর্শনী ম্যাচ করিয়েছি। স্টেডিয়াম মাঠের অবস্থা ভাল নয়। ফলে খেলাধুলোয় সমস্যা হচ্ছে। তা ছাড়া, স্থানীয় অনেক খেলোয়াড়ের সহযোগিতা চেয়েও পাইনি। তবে শীঘ্রই উলুবেড়িয়া স্টেডিয়াম ঠিক হয়ে যাবে। আবার পুরোদমে খেলা শুরু হবে।”
অন্যত্র ভাল মাঠ না থাকায় এক সময়ে এই বিধানসভা কেন্দ্রে সব রকম খেলার আয়োজন হত স্টেডিয়ামে। নিয়মিত ফুটবল লিগ হত। খেলোয়াড়েরা উৎসাহ পেতেন। কিন্তু ধীরে ধীরে স্টেডিয়ামটি বেহাল হয়ে পড়ায় খেলার আয়োজন কমতে থাকে। পনেরো বছর আগে থানা ফুটবল লিগ বন্ধ হয়ে যায়। অন্য খেলাধুলোও আর হয় না। প্রবীণদের একাংশের আফসোস, এখন গ্রামীণ হাওড়ার অন্য থানায় ফুটবল লিগ চালু থাকলেও বন্ধ শুধু উলুবেড়িয়ায়।
এলাকাবাসীর দাবি মেনে বছর সাতেক আগে স্টেডিয়ামটি সংস্কারে উদ্যোগী হয় রাজ্য সরকার। কাজ করে পূর্ত দফতর। কিন্তু তারপরেই বা খেলাধুলো চালু হল কই!
উলুবেড়িয়া থানা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সম্পাদক রথীন মজুমদারের হতাশা, কয়েক কোটি টাকা খরচ করে তৈরি স্টেডিয়াম বন্ধ পড়ে। খেলা আয়োজনের কোনও উদ্যোগ নেই প্রশাসন বা বিধায়কের। একই মত স্থানীয় বাসিন্দা তথা এক সময়ের খেলোয়াড় শেখ নকিবউদ্দিনের। তাঁর খেদ, “সব রকম পরিকাঠামো থাকার পরেও ফুটবল হয় না, এটা লজ্জার।”
স্টেডিয়ামটি দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে উলুবেড়িয়া পুরসভা। পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন ফুটবলার শেখ ইনামুর রহমান জানান, প্রথমে মাঠ তৈরিতে কিছু গোলমাল হয়েছিল। তা ঠিক করাতে বিধায়ক একটি সংস্থাকে বরাত দেন। তারাই মাঠ তৈরিতে দেরি করছে। ইতিমধ্যে জেলা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে। মাঠ তৈরি শেষ হলেই ফুটবল লিগ আবার শুরু হবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
খেলাধুলো বন্ধ থাকায় সিপিএম নেতা সাবিরউদ্দিন মোল্লার টিপ্পনী, ‘‘বাম আমলে স্টেডিয়ামে লিগ চলত। এই সরকার সব বন্ধ করে দিয়েছে। তৃণমূল নেতাদের অফিস হয়ে উঠেছে স্টেডিয়াম!” হাওড়া গ্রামীণ জেলা বিজেপি সভাপতি অরুণ উদয় পাল চৌধুরীর কটাক্ষ, “বিধায়ক যতই খেলোয়াড় হোন, তাঁর ইচ্ছেতে কিছুই হবে না। সব কলকাঠি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। রাজ্যটাকে তৃণমূল রসাতলে পাঠিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy