n সবুজদ্বীপ পর্যটনকেন্দ্রের কাটা গাছ। নিজস্ব চিত্র।
সবুজদ্বীপে বেআইনি ভাবে গাছ কাটার অভিযোগ তুলেছেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী স্বয়ং। দলের স্থানীয় নেতাদের একাংশ ওই অভিযোগ মানছেন না। তাঁদের দাবি, নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে মরে যাওয়া গাছ কাটা হয়েছে।
কী ভাবে সেখানে গাছ মরছে, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তৃণমূলের সোমড়া-২ পঞ্চায়েত সভাপতি হারু হালদার। তাঁর কথায়, ‘‘সবুজ গাছে পানকৌড়ি, বক বাসা বাঁধে। সেখানে তারা মলমূত্র ত্যাগ করার জন্যই অনেক গাছ মরে গিয়েছে।’’
হারুবাবুর এ হেন ব্যাখ্যায় আকাশ থেকে পড়ছেন বিশেষজ্ঞরা। হুগলি বন দফতরের রেঞ্জ অফিসার রাজেশ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গাছের উপরে পানকৌড়ি, বক মলমূত্র ত্যাগ করলে গাছের ভাল হয়, কোনও ক্ষতি হয় না।’’ শ্রীরামপুর কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক সুমন দত্তের অভিমত, ‘‘পাখির বিষ্ঠা খারাপ নয়, বরং গাছ এবং সংলগ্ন জলাশয়ের জন্য তা আশীর্বাদ। পাখির বিষ্ঠা ক্ষতিকর নয়, বরং সার হিসেবে গাছের কাজে লাগে। ফলে এর জন্য গাছের মারা যাওয়ার সম্ভাবনার বিষয়টি আমার জানা নেই। তা ছাড়া, ওই বিষ্ঠা জলে পড়লে জলের উর্বরতা বাড়ে, মাছের সংখ্যা বা আকার বাড়ে।’’ বন্যপ্রাণ নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনের সম্পাদক বিশাল সাঁতরা বলেন, ‘‘পাখির মলমূত্রের কারণে গাছ মরে যায়, এমন বক্তব্যের মধ্যে বিজ্ঞানভিত্তিক কোনও যুক্তি আছে বলে মনে হয় না। কিছু বলার আগে বিজ্ঞানীদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।’’
বিধায়কেরও বক্তব্য, ‘‘গাছে পাখিরা বাসা বাঁধবে, মলমূত্র ত্যাগ করবে, এটাই পৃথিবীর নিয়ম। বড় বড় জঙ্গলেও এ ভাবেই গাছে পাখি থাকে। কোথাও গাছ মরছে না, শুধুমাত্র সবুজদ্বীপ পর্যটন কেন্দ্রে মরছে! এটা যুক্তি হল?’’ পরিবেশ বা প্রকৃতিপ্রেমীদের বক্তব্য, নির্বিচারে সবুজ গাছ কাটা হয়ে থাকলে আখেরে জীববৈচিত্রের ক্ষতি হবে। পাখি আশ্রয় হারাবে। দিন কয়েক আগে বিধায়ক সবুজদ্বীপে যান। তাঁর অভিযোগ, একদল দুষ্কৃতী গাছ কেটে ওই চত্বর শ্মশান বানিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প সবুজদ্বীপ পর্যটন কেন্দ্রে আর একটাও গাছ কাটতে দেব না। কে বড় বড় সবুজ গাছ কেটেছে, তদন্ত করতে হবে।’’
বিধায়কের অভিযোগ উড়িয়ে সোমড়া-২ পঞ্চায়েতের প্রধান সোমা ঘোষ বলেন, ‘‘সবুজ গাছ কাটা হয়নি। পঞ্চায়েত থেকে শুকনো গাছ কাটার টেন্ডার হয়েছিল। সেই মতোই শুকনো গাছ কাটা হয়েছে।’’ হারুরও বক্তব্য, পঞ্চায়েতের তরফে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার টেন্ডার হয় শুকনো গাছ কাটার জন্য। সেইমতো শুকনো গাছই কাটা হয়। সবুজ গাছ কাটা হয়নি। এই বিষয়ে বলতে গিয়েই বক, পানকৌড়ি মলমূত্রের কারণে গাছ মরে যাওয়ার কথা বলেন দলের ওই নেতা। মনোরঞ্জনের অভিযোগ প্রসঙ্গে হারুর ক্ষোভ, ‘‘বিধায়ক দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।’’
বিধায়কের দাবি, ‘‘আমি দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছি না। তবে, দলের মধ্যেও কেউ ভুল বা অন্যায় করলে, আমি প্রতিবাদ করব। নিজের চোখে দেখেছি, সবুজদ্বীপে বড় বড় সবুজ গাছ কাটা হয়েছে। পুলিশকে দিনরাত পাহারার জন্য বলেছি।’’ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সবুজদ্বীপে পুলিশি নজরদারি চলছে। বলাগড় ব্লকের এক আধিকারিক জানান, গাছ
কাটায় অনিয়ম হয়েছে কি না, তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy