দূরত্ববিধি শিকেয়। মাস্কহীন যাত্রী ট্রেনের অপেক্ষায়। সোমবার ব্যান্ডেল স্টেশনে ছবি: তাপস ঘোষ
মাস্ক না পরে ট্রেনে উঠলে ৫০০ টাকা করে জরিমানা আদায়ের ঘোষণা করেছিলেন রেল কর্তৃপক্ষ। নির্দেশ পাওয়ার পর থেকেই লোকাল ট্রেনের কামরায় উঠে তল্লাশি শুরু করেছে রেল পুলিশ। আর সেটা করতে গিয়ে যেন লুকোচুরি খেলা শুরু হয়েছে ট্রেনে।
রেলের নির্দেশ খুব একটা বিশ্বাস করছিলেন না তিরোলের মধ্যবয়স্ক ব্যবসায়ী সুনীল চক্রবর্তী। সোমবার সকালে আরামবাগ থেকে হাওড়ার ৮টা ৩৫ মিনিটের ট্রেনের টিকিট কাটার লাইনের দিকে এগোতেই দেখেন, রেল পুলিশ সবাইকে মাস্ক পরতে বলছে। অনেকেই পকেট থেকে মাস্ক বের করে পরছেন। সুনীলের সঙ্গে মাস্কই ছিল না। রেল পুলিশের মুখ ঝামটা খেয়ে মুখে রুমাল বাঁধলেন সুনীল।
গোঘাট, আরামবাগ থেকে তারকেশ্বর এবং হাওড়া পর্যন্ত মোট ১৬টি ট্রেন যাতায়াত করে। দৈনিক গড়ে যাত্রী সংখ্যা প্রায় ১০ হাজারের উপর। ‘আরামবাগ রেলওয়ে প্যাসেঞ্জার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ নামে নিত্যযাত্রীদের একটি সংগঠনের কর্মকর্তা রূপক মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রায় সবাই মাস্ক নিয়ে বের হন। কিন্তু সারাক্ষণ মাস্ক পরে থাকার অভ্যেস তৈরি হয়নি। রেল পুলিশের পাশাপাশি সংগঠনের পক্ষেও তা নিয়ে নিয়মিত সচেতন করছি। তবে এখনও জরিমানা নেওয়ার ঘটনা ঘটেনি।”
ব্যান্ডেল স্টেশনের ছবিটা একই। সচেতনতা ফেরেনি অধিকাংশ যাত্রীরই। অনেকেরই মাস্ক পকেটে, কারও থুতনির নীচে নামানো। পুলিশকে দেখলেই মাস্কে ঢাকা পড়ছে নাক-মুখ। রেল দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘মানুষ নিজে সতর্ক না হলে জরিমানা বা ধরপাকড়ে কোনও লাভ নেই।’’
সোমবার সকালে বৈদ্যবাটী শেওড়াফুলি ও ভদ্রেশ্বর স্টেশনে যাত্রীদের অনেকের মুখে ছিল মাস্ক। তবে রেল পুলিশের নজরদারি তেমন ছিল না। এ বিষয়ে শেওড়াফুলি জিআরপি থানার এক পুলিশ কর্তা জানান, নিয়মিত নজরদারি চলছিল। তবে কাউকে জরিমানা করা হয়নি। স্টেশনে যাত্রীদের মাস্ক পরে ট্রেনে ওঠার জন্য সচেতন করা হয়েছে। রেল পুলিশ সূত্রে খবর, যাত্রীদের ৯০ শতাংশের সঙ্গে মাস্ক থাকে ঠিকই, কিন্তু অধিকাংশ পকেটে রেখে দেন কিংবা গলায় ঝুলিয়ে রাখেন। কয়েকদিন সতর্ক করা হচ্ছে, এরপর জরিমানা আদায় হবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সোমবার গ্রামীণ হাওড়ার বিভিন্ন স্টেশনে গিয়ে দেখা গিয়েছে, বেশিরভাগ যাত্রীই মাস্ক পরে প্লাটফর্মে ঢুকেছেন। ট্রেনের যাত্রীদের মুখেও দেখা গিয়েছে মাস্ক। গুটিকয় যাত্রীর মুখে অবশ্য মাস্ক দেখা যায়নি। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর বিভাগে গত দু’দিনে ২১ জন যাত্রীর কাছ থেকে ৭ হাজার ৮০০ টাকা জরিমানা আদায় করেছে পুলিশ। দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘হাজার হাজার যাত্রী ট্রেনে চাপছেন। সেই তুলনায় জরিমানা আদায়ের হার সামান্যই। তার মানে সিংহভাগ যাত্রীই মাস্ক পরছেন। এটা ভাল লক্ষণ। জরিমানা আদায় আমাদের লক্ষ্য নয়। আসল কথা হল জরিমানার কথা বলে যাত্রীদের সচেতন করা। সেটা অনেকাংশেই সফল হয়েছে বলে আমরা মনে করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy