রাতে বন্ধ শৌচাগার। আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। —নিজস্ব চিত্র।
রাত ৯টার পরেই তালা পড়ে যায় আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরের দু’টি সুলভ শৌচাগারেই। ফলে, রাতভর অসুবিধায় পড়তে হয় রোগীর পরিজনদের। সমস্যায় বেশি পড়েন মহিলারা। রাতবিরেতে তাঁদের
আড়াল এবং আধো-অন্ধকার জায়গা খুঁজতে হয়। এখানে বিনা পয়সার শৌচাগার নেই।
কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হওয়া স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের এই ছবি সভ্য সমাজকে লজ্জা দেয় বলে অভিমত শহরের বহু বাসিন্দার। এ নিয়ে রোগীর পরিজনদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ বিস্তর।
অসুবিধার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মেডিক্যালের অধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ রায়। তিনি বলেন, “নিখরচায় ব্যবহারের জন্য আমাদের নতুন দু’টি শৌচাগার তৈরি করা হচ্ছে। দরপত্র হয়ে কাজের বরাতও দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। আপাতত সুলভ শৌচালয়টি ২৪ ঘণ্টা খুলে রাখার ব্যবস্থা হচ্ছে। আরও দু’টি প্রতীক্ষালয়ও তৈরি হচ্ছে।’’ পুরপ্রধান সমীর ভান্ডারী বলেন, “হাসপাতাল চত্বরে পুরসভার শৌচাগারটি ২৪ ঘণ্টা খুলে রাখার মতো পরিকাঠামো আমাদের নেই। রাতে আরও ঘণ্টাখানেক খোলা রাখা যায় কি না, দেখছি।”
চিকিৎসাধীন স্বামীর জন্য দিন তিন ধরে হাসপাতাল চত্বরে রাত কাটানো খানাকুলের প্রৌঢ়া মিনতি মালিকের অভিজ্ঞতা, “রাতে হাসপাতালে রোগীর কাছে এক জনকে থাকতে দেয়। পুরুষ ওয়ার্ডে মেয়েদের থাকা নিষেধ। বাইরে রাত কাটাতে হয়। রাতে শৌচাগার বন্ধ থাকায় খুব অসুবিধা হয়।” হাওড়ার ভাটোরার এক ব্যক্তি মূত্রনালির সমস্যা নিয়ে সোমবার
ভর্তি হয়েছেন। স্ত্রী কল্পনা সামন্তের ক্ষোভ, “শৌচাগার বন্ধ থাকায় যাচ্ছেতাই অবস্থা হয়। আলো এড়িয়ে নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়েই কিছুটা আড়ালে গিয়ে প্রাকৃতিক কাজ
সারতে হচ্ছে।” এমন খেদ রয়েছে গোঘাটের হাজিপুর থেকে আসা এক রোগীর আত্মীয় রেশমা বিবি-সহ অনেকেরই।
দেড় মাসের শিশুকে সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি করে টানা ১৮ দিন ধরে হাসপাতাল চত্বরে রাত কাটাচ্ছেন খানাকুলের কেদারপুরের শান্তিনাথ ভুক্ত। তাঁর কথায়, “পুরুষেররা হাসপাতাল চত্বরেই ইতিউতি চলে যেতে পারেন, মেয়েদের খুবই অসুবিধায় পড়তে দেখছি।’’ সকলেরই প্রশ্ন, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এই অবস্থা কেন?
এই হাসপাতালে শয্যা ৫৯৪টি। জানা গিয়েছে, রাতে রোগীর আত্মীয়-স্বজন, পুরুষ-মহিলা মিলিয়ে গড়ে শ’দুয়েক থাকেন। প্রতীক্ষালয়ে সকলের জায়গা হয় না। সে জন্য নতুন বহির্বিভাগ ভবন, পুরনো হাসপাতাল ভবন, সুপার স্পেশালিটি ভবনের সামনেও রাত কাটান অনেকে। দু’টি সুলভ শৌচাগারের একটি ক্যান্টিনের পাশে। সেটি পুরসভা চালায়। অন্যটি হাসপাতালের। সেটি হাসপাতালের প্রশসানিক ভবনের কাছে রাস্তার গায়ে এবং পুলিশ ক্যাম্পের সামনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy