Advertisement
১৩ অক্টোবর ২০২৪
Kalyan Banerjee

পুলিশ নয়, নারীর সম্মান রক্ষার ভার পুরুষের! মত কল্যাণের, দীপ্সিতার খোঁচা, ‘আগে নিজেকে বদলান’

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, পুরুষেরা সম্মান দিতে না পারলে নারীর সম্মান এক হাজার পুলিশ দিয়েও রক্ষা করা যায় না। তাই বাংলার মহিলাদের সম্মানরক্ষার জন্য সকল পুরুষের কাছে তিনি আবেদন করেছেন।

Kalyan and Dipsita

(বাঁ দিকে) কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। (ডান দিকে) দীপ্সিতা ধর। ছবি: ফাইল এবং ফেসবুক।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:৩১
Share: Save:

পুরুষেরা সম্মান দিতে না পারলে নারীর সম্মান এক হাজার পুলিশ দিয়েও রক্ষা করা যায় না। দুর্গোৎসবের মাঝে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওই মন্তব্যের সমালোচনায় মুখর বিরোধীরা। সিপিএম নেত্রী দীপ্সিতা ধরের খোঁচা, ‘‘যিনি এই কথা বলেছেন, তিনি মহিলাদের সম্পর্কে যে ভাষায় কথা বলেন, সেটা আগে পরিবর্তন করুন। তার পর নয় সমাজ পরিবর্তনের কথা বলবেন।’’

আরজি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে উৎসবে না ফেরার ডাক দিয়েছিলেন নাগরিক সমাজের একাংশ। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের অবশ্য দাবি, সরকারই আন্দোলন বনাম উৎসব পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছে। তাঁরা উৎসবের বিরোধী নন। এ বার ‘আন্দোলনের উৎসব’ করছেন। এই তর্কবিতর্কের মধ্যে দুর্গাপুজোর ক’টা দিন মণ্ডপে মণ্ডপে ভিড় হয়েছে। উৎসবে অংশ নেওয়ার জন্য সবাইকে শুভেচ্ছা জানালেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ। শনিবার রাতে একটি পুজো কমিটির সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানমঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন কল্যাণ। সেখানে তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘‘উৎসবে মেতেছে মানুষ। এই সময়ে মায়ের কাছে প্রার্থনা, অশুভ চিন্তার বিনাশ করে দাও।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘পুরুষেরা সম্মান দিতে না পারলে নারীর সম্মান এক হাজার পুলিশ দিয়েও রক্ষা করা যায় না। তাই বাংলার সব পুরুষের কাছে আবেদন, প্রত্যেক মহিলার সম্মানরক্ষা করুন। প্রত্যেক মহিলাকে নিরাপত্তা দেব আমরা পুরুষেরা। দুর্গাপুজোর সময় সেই প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। বাংলার মেয়েদের এই প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। তবেই মেয়েরা সুরক্ষিত হবেন।’’ কল্যাণের সংযোজন, ‘‘মা দুর্গাকে সম্মান করেছিলেন শিব। মা কালীকে সম্মান করেছিলেন শিব। তবেই না মা, মা হতে পেরেছেন।’’

লোকসভা ভোটের প্রচারে কল্যাণ এবং দীপ্সিতার বাক্‌যুদ্ধ তুঙ্গে উঠেছিল। কল্যাণের শনিবারের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে গত লোকসভা ভোটে তৃণমূল নেতার প্রতিদ্বন্দ্বী তথা সিপিএম নেত্রী দীপ্সিতার কটাক্ষ, ‘‘উনি তো ঠিকই বলেছেন। কিন্তু সমাজব্যবস্থা শোধরানোর দায়িত্ব কার?’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যাঁরা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হন, যাঁরা দাঁড়িয়ে বলেন ‘রেপটেপ ছোট ঘটনা’, যাঁরা মাইকে বলেন, ‘আমার সরকারকে বদনাম করতে বলা হচ্ছে,’ বা যে জনপ্রতিনিধিরা এগারো বছরের মেয়ে গণধর্ষণ হয়ে খুন হওয়ার পর সন্দেহ প্রকাশ করেন তার চরিত্র নিয়ে, সমাজের এই অবস্থার জন্য দায়ী তো তাঁরাই। ওই জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের কথা ও কাজের মধ্যে দিয়ে প্রতি দিনই প্রমাণ করছেন, যাঁরা অপরাধী, তাঁদের জন্য সরকার এবং রাজ্যের শাসকদল থাকবে। আগে রাজ্যের শাসকদল নিজেদের পরিবর্তন করুক।’’ কল্যাণের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কটাক্ষ করেছে পদ্মশিবিরও। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য স্বপন পাল বলেন, ‘‘তৃণমূলের রাজত্বে বাংলার নারীর সম্মান নেই, এটা প্রমাণিত। এক জন মহিলা চিকিৎসককে অত্যাচার করে খুন করা হয়েছে। সেই ঘটনাকে ধামা চাপা দিতে সরকার তথা শাসকদল যে তৎপরতা দেখিয়েছে, তার পরে তৃণমূল সাংসদ এ সব বলেন কী ভাবে! যে সরকারের মুখ্যমন্ত্রী এক জন মহিলা, সেই রাজ্যে মহিলারাই সুরক্ষিত নন। তাই এই কথা বলছেন সাংসদ। আগে ওঁর দল এবং সরকারের সংশোধন প্রয়োজন। সেই সংশোধন হতে পারে এই সরকারের বিদায়ের মধ্য দিয়ে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kalyan Banerjee Dipsita Dhar TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE