ডিজে বাজিয়ে শোভাযাত্রা চুঁচুড়ায়। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP
হুগলি শিল্পাঞ্চলে ডিজে বক্সের দাপট অব্যাহত। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দৈত্যাকার ডিজে বক্স নিয়ে গঙ্গাপাড় ধরে শোভাযাত্রা হল চুঁচুড়ার বড়বাজারের পঞ্চমুখী হনুমান মন্দির কমিটির বাৎসরিক পুজো উপলক্ষে। তাতে শামিল হলেন তৃণমূলেরস্থানীয় বিধায়ক অসিত ওরফে তপন মজুমদার এবং সপ্তগ্রামের বিধায়ক তপন দাশগুপ্ত। তপন চুঁচুড়ার বড়বাজারের বাসিন্দা।
দুই বিধায়ক ফিরে যাওয়ার পরে পুলিশ ডিজে বন্ধ করে। তার আগে পর্যন্ত কান ঝালাপালা হয়েছে এলাকার বাসিন্দাদের। জোড়াঘাট এলাকার এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘জানলা-দরজা বন্ধ করেও মুক্তি মেলেনি। মনে হচ্ছিল, দেওয়াল ফেটে যাবে।’’
বেআইনি ডিজে-র সঙ্গে মিছিলে দুই বিধায়ক কী করে হাঁটলেন? তাঁদের উপস্থিতির জন্য শুরুতে কেন প্রশাসন ডিজে বন্ধের ব্যবস্থা নেয়নি, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
দুই বিধায়কেরই দাবি, মিছিলের সামনে থাকায় ডিজের শব্দ তাঁদের কানে ঢোকেনি। অসিতের সংযোজন, ‘‘আমরা মিনিট পাঁচেক ছিলাম। পরে ডিজে বাজার কথা জেনে আমিই পুলিশে জানাই।’’ চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তার দাবি, খবর পেয়েই পুলিশ বকুলতলা ঘাটের কাছে গিয়ে ডিজে বন্ধ করে। বিধায়কদের উপস্থিতির সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রায় দেড় তলা বাড়ির সমান উচ্চতাবিশিষ্ট ডিজে বক্স বাজিয়ে শতাধিক মানুষ শোভাযাত্রায় হাঁটেন। শুধু বন্ধ না-করে পুলিশ কেন বক্স বাজেয়াপ্ত করল না, এ নিয়ে কমিশনারেটের আধিকারিকের কাছ থেকে সদুত্তর মেলেনি।
পুজো কমিটির সদস্য বিশাল কাহারের দাবি, ডিজে নয়, সাধারণ বক্স বাজানো হয়েছিল। তবে, শব্দ খানিক বেশি হয়ে গিয়েছিল। মানুষের অসুবিধা বুঝে তাঁরা নিজেরাই বন্ধ করেছেন। পুলিশকে হস্তক্ষেপকরতে হয়নি।
শাসক দলের বিধায়কদের উপস্থিতিতে শব্দের দৌরাত্ম্য নিয়ে অবশ্য বিরোধীরা সরব। সিপিএমের চুঁচুড়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ডিজে-র ক্ষতিকর দিকের কথা বারবার তুলে ধরা হচ্ছে। কিন্তু, তৃণমূল তার ধার ধারে না। বিধায়করা দিব্যি ডিজে-র সঙ্গে হাঁটলেন। তবে, পুলিশ শেষমেশ বন্ধ করেছে, এটা ভাল।’’ বিজেপির রাজ্যনেতা স্বপন পালের কটাক্ষ, ‘‘আইন শুধু বিরোধীদের জন্য! তৃণমূল মানে আইন ভাঙা। সেটাই দেখা গেল।’’
তবে, উল্টো ছবি দেখা গিয়েছে গ্রামীণ এলাকা জাঙ্গিপাড়ার রাজবলহাট-২ পঞ্চায়েতের দিঘিরপাড়ের রক্ষাকালী পুজোয়। সেখানে বছরের পর বছর চলে আসা রাতভর ডিজে-র কানফাটানো আওয়াজ উধাও। শান্তিতে ঘুমিয়ে পুজো উদ্যোক্তাদের সচেতনতার প্রশংসা করছেন এলাকাবাসী। বুধবার পুজো ছিল।
পুজোর উদ্যোক্তারা মানছেন, প্রত্যেক বছরই ডিজে বক্স বাজানো হত। ডিজের বিরুদ্ধে এখানে জোরদার নাগরিক আন্দোলন হয়। পুলিশ-প্রশাসনও ডিজে বন্ধের চেষ্টা করে। পূজারি রঘু ভট্ট বলেন, ‘‘গত বছর থেকেই ডিজে বাজছে না। শান্তিতে পুজো হচ্ছে। পঞ্চায়েত প্রধান তুষারকান্তি রক্ষিত-সহ অনেকেই ডিজে বন্ধে আর্জি জানান।’’
বাজি ও ডিজে বিরোধী মঞ্চের তরফে চিকিৎসক প্রভাস দাস বলেন, ‘‘ওই পুজো কমিটির সচেতনতার পরিচয় দেওয়ায় মানুষের কষ্ট দূর হয়েছে। সবাইকে সচেতন হতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy