Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
WB Panchayat Election 2023

দুই জেলা পরিষদেই ‘নতুন দল’ তৃণমূলের

হাওড়ার বিদায়ী বোর্ডের ৪০ জন তৃণমূল সদস্যের মধ্যে সাত কর্মাধ্যক্ষ-সহ ৩২ জনই এ বার টিকিট পাননি। এ বারে জেলা পরিষদের আসনসংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪২।

হাওড়া জেলা পরিষদের প্রার্থী পদে প্রথম বার মনোনয়ন জমা দিলেন রাজ্য যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তুষারকান্তি ঘোষ (বাঁ দিকে)। হুগলি জেলা পরিষদের নয়া প্রার্থী নির্মাল্য চক্রবর্তী। তিনি জেলা তৃণমূল আইনজীবী সেলের সভাপতি।  নিজস্ব চিত্র

হাওড়া জেলা পরিষদের প্রার্থী পদে প্রথম বার মনোনয়ন জমা দিলেন রাজ্য যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তুষারকান্তি ঘোষ (বাঁ দিকে)। হুগলি জেলা পরিষদের নয়া প্রার্থী নির্মাল্য চক্রবর্তী। তিনি জেলা তৃণমূল আইনজীবী সেলের সভাপতি।  নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৩ ০৯:৪০
Share: Save:

কার্যত ‘নতুন দল’ নিয়ে দুই জেলা পরিষদে (হাওড়া ও হুগলি) লড়তে নামছে তৃণমূল। গত বারের সদস্যদের মধ্যে সাকুল্যে ১৩ জন টিকিট পেয়েছেন হুগলিতে। অর্থাৎ, বাদ পড়েছেন ৩৭ জন। গত বার জেলা পরিষদের আসন ছিল ৫০টি। এ বার ৫৩টি।

হাওড়ার বিদায়ী বোর্ডের ৪০ জন তৃণমূল সদস্যের মধ্যে সাত কর্মাধ্যক্ষ-সহ ৩২ জনই এ বার টিকিট পাননি। এ বারে জেলা পরিষদের আসনসংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪২। এই প্রথম হাওড়া জেলা পরিষদে এত বেশি সংখ্যক আসনে প্রার্থী বদল করল তৃণমূল। যা নজিরবিহীন বলে মনে করছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ।

হাওড়া গ্রামীণ জেলা তৃণমূল সভাপতি অরুণাভ সেন বলেন, "সংরক্ষণের কারণে অনেক ভাল কর্মাধ্যক্ষ এবং সদস্য বাদ পড়েছেন। আবার অনেকের ভূমিকা ভাল ছিল না। দল সব দিক বিবেচনা করে প্রার্থী-তালিকা করেছে। যাঁরা বাদ পড়েছেন, তাঁদের মধ্যে হয়তো ব্যক্তিগত স্তরে কিছুটা ক্ষোভ আছে, তা স্বাভাবিকও। তবে এর কোনও প্রভাব আশা করি পড়বে না।’’ পূর্তমন্ত্রী পুলক রায় বলেন, ‘‘তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার মিশেল এই প্রার্থী-তালিকা।’’

নতুন করে যাঁরা টিকিটি পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে আবার এমন অনেক প্রার্থী আছেন, যাঁরা ২০১৩-তে জেলা পরিষদের সদস্য ছিলেন। কিন্তু নানা কারণে ২০১৮ সালে বাদ পড়েন। তাঁদের মধ্যে আছেন মানস বসু, শীলা মাখাল, সুলেখা পাঁজার মতো প্রার্থীরা। সুলেখা উদয়নারায়ণপুর পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী বোর্ডের সভাপতি। আবার আনকোরা প্রার্থীও আছেন। যেমন, জেলা পরিষদের প্রার্থী পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন রাজ্য যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তুষারকান্তি ঘোষ। এটা তাঁর ভোটের প্রথম লড়াই।

বিদায়ী বোর্ডের যে সব পদাধিকারী ও কর্মাধ্যক্ষ থেকে গিয়েছেন, তাঁরা হলেন সভাধিপতি কাবেরী দাস, সহ-সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য, বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ গোপা ঘোষ এবং মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ অজয় মণ্ডল।

হুগলি জেলা পরিষদ থেকে বাদ পড়ার তালিকায় রয়েছেন সিঙ্গুর কৃষিজমি আন্দোলনের অন্যতম নেতা মানিক দাস। তিনি বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। আরও তিন কর্মাধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ নিশেষ ঘোষও টিকিট পাননি। টিকিট না-পাওয়াএক সদস্যের কথায়, ‘‘কেন বাদ পড়লাম, জানি না। নবজোয়ারের ভোটের ফল প্রতিফলিত হয়েছে বলে তো মনে হয় না।’’

প্রার্থী চূড়ান্ত করতে মনোনয়নের শেষ দিন পর্যন্ত অপেক্ষায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের একাংশ ক্ষুব্ধ। অনেক পুরনো মুখ বাদ পড়া নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে। এ নিয়ে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী তথা তৃণমূলের মুখপাত্র স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ এবং দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে প্রার্থী-তালিকা তৈরি করা হয়েছে। নতুন-পুরনোর ব্যাপার নেই। পুরনো কেউ বাদ পড়ে থাকলে, তাঁরা সংগঠনের কাজ করবেন। এ নিয়ে কোনও সমস্যা আছে বলে মনে হয় না।’’ কৃষি বিপণনমন্ত্রী বেচারাম মান্নার বক্তব্য, ‘‘অনেকেই দলীয় প্রতীকেরআশায় মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। প্রতীক যাঁরা পাবেন না, তাঁরা নাম প্রত্যাহার করে নেবেন।’’

টিকিট জুটেছে বিদায়ী মাত্র তিন কর্মাধ্যক্ষের— সুবীর মুখোপাধ্যায়, মনোজ চক্রবর্তী ও আব্দুল জব্বারের। পোলবা-দাদপুরের মনোজ লড়বেন খানাকুল-১ ব্লকে। তৃণমূল শিবিরের খবর, খানাকুলের ওই আসনে দল মনোনীত করেছিল অসিত সিংহরায়কে। ‘শারীরিক কারণে’ তিনি না দাঁড়ানোয় শিকে ছেঁড়ে মনোজের। গত দু’বারের সভাধিপতি মেহেবুব রহমানকে ‘নিজের জায়গা’ পুরশুড়া থেকে সরে খানাকুল-১ ব্লক থেকে দাঁড়াতে হয়েছে।

‘নতুন’ যাঁরা টিকিট পেলেন, তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য গোঘাটের প্রাক্তন বিধায়ক মানস মজুমদার, বলাগড়ের প্রাক্তন বিধায়ক অসীম মাজি, আরামবাগের প্রাক্তন বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা। এর মধ্যে মানসের জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষের পদ সামলানোর পুরনো অভিজ্ঞতা রয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy