Advertisement
E-Paper

সংস্কার হয় না নিকাশির, বর্জ্য আর পাঁক জলে দুর্বিষহ অবস্থা হাওড়ায়

হাওড়া পুরসভার ড্রেনেজ ক্যানাল রোড থেকে ৯, ৪৯ এবং ৫০ ন‌ম্বর ওয়ার্ড দিয়ে গিয়ে পঞ্চায়েত এলাকা বাঁকড়া হয়ে হাওড়া-আমতা রোড মিশেছে ছ’নম্বর জাতীয় সড়কের সলপ মোড়ে।

An image of Sewage wastes

বেহাল: রাস্তায় জমা জল ভেঙেই চলছে গাড়ি। তারই পাশে বসেছে বাজারও। হাওড়ার বাঁকড়ায়, হাওড়া-আমতা রোডে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:৩৪
Share
Save

গোড়ালি ভেজা জলে ভাসছে কাটা মুরগির রক্ত, ছাল-চামড়া, মাছের তেল। তীব্র দুর্গন্ধে বমি উঠে আসার জোগাড়। তারই মধ্যে রাস্তার দু’দিক দখল করে নিয়েছে সার সার মুরগির দোকান ও বাজার। চলছে কেনাবেচা। বৃষ্টিতে উপচে পড়ছে বছরের পর বছর সংস্কার না হওয়া নিকাশি নালার দুর্গন্ধযুক্ত পাঁক জল। সেই দূষিত, কালো জল এবং বাজারের নোংরা জল এসে জমে থাকছে রাস্তায়। যার ফলে বছরের অধিকাংশ সময়ে রাস্তার প্রায় ৬০০ মিটার অংশে হাঁটাচলা করাই দায় হয়ে উঠেছে। এমনই অবস্থা হাওড়া পুরসভা ও বাঁকড়া বাজার লাগোয়া হাওড়া-আমতা রোডের। হাওড়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সেটি। এলাকার মানুষের অভিযোগ, গত ১০ বছর ধরে এমনই পরিস্থিতি সেখানে। তৃণমূলের নেতৃত্বাধীন স্থানীয় পঞ্চায়েতকে বার বার জানিয়েও ফল হয়নি। ওই বিষাক্ত জল মাড়িয়েই বাজার-দোকান, স্কুল-কলেজ বা অফিসে যেতে হয় এলাকার বাসিন্দদের।

হাওড়া পুরসভার ড্রেনেজ ক্যানাল রোড থেকে ৯, ৪৯ এবং ৫০ ন‌ম্বর ওয়ার্ড দিয়ে গিয়ে পঞ্চায়েত এলাকা বাঁকড়া হয়ে হাওড়া-আমতা রোড মিশেছে ছ’নম্বর জাতীয় সড়কের সলপ মোড়ে। প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে দূরপাল্লার বহু বাসের পাশাপাশি স্থানীয় রুটের অনেক বাস-সহ কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, জনবহুল এলাকায় ওই রাস্তার দু’পাশ দখল করে গজিয়ে উঠেছে একাধিক ক্লাব, কারখানা, দোকান ও বাজার। ফলে রাস্তা সঙ্কীর্ণ হয়ে গিয়েছে। যার জেরে নিত্যদিন দুর্ঘটনা লেগেই থাকছে সেখানে। গত দু’মাসে দু’টি দুর্ঘটনায় দু’জনের প্রাণ গিয়েছে। ছোটখাটো দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। এলাকাবাসীর বক্তব্য, তাতেও হুঁশ ফেরেনি প্রশাসনের।

সব চেয়ে খারাপ পরিস্থিতি বাঁকড়া বাজার এলাকায়। বাঁকড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের সব থেকে ঘন বসতিপূর্ণ ও দোকান-বাজারে ভরা এলাকা বাঁকড়া বাজার। তারই মধ্যে দিয়ে গিয়েছে হাওড়া-আমতা রোড। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তা দখল করে বাজার বসা থেকে বেআইনি নির্মাণ— সবই অবাধে চলছে
সেখানে। বছরের পর বছর পাঁক না তোলায় নিকাশি নালাগুলির জলধারণ ক্ষমতা কমে গিয়ে সেগুলি প্রায় অবরুদ্ধ। যার ফলে বাড়ির বর্জ্য জলই হোক বা বৃষ্টির জল, সবই জমে থাকছে রাস্তায়।সেই জলেই ভাসে বাজারের আবর্জনা ও মাংসের দোকানের বর্জ্য। এলাকার বাসিন্দা আমজাদ আলি বলেন, ‘‘বর্ষা হোক বা গ্রীষ্ম, সব সময়েই বাজারের রাস্তায় জল জমে থাকে। ওই জলেই মুরগির দোকানিরা সমস্ত ছাঁট ও রক্ত ফেলেন।’’ মুর্শেদ আলি নামে আর এক বাসিন্দা বললেন, ‘‘স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতকে বহু বার জানিয়েছি। প্রশাসনকেও জানিয়েছি। বিষাক্ত জল বার করতে কেউ উদ্যোগী হয়নি। আমরা চাই, অবিলম্বে রাস্তার পাশ থেকে বাজার তুলে দেওয়া হোক।’’

স্থানীয় পঞ্চায়েত-প্রধান আখতার হাসান মোল্লা অবশ্য তাঁর অপারগতার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কিছু করার নেই। ১০০ দিনের কাজের টাকা পাচ্ছি না এক বছর হল। কী ভাবে এই কাজ করাব? শ্রমিক না পেলে তো আর নিকাশির কাজ করানো যাবে না।’’ যা শুনে এলাকার বাসিন্দাদের প্রশ্ন, ১০ বছর ধরে এই অবস্থা। তা হলে আগে কাজ হয়নি কেন? পঞ্চায়েত-প্রধান বলেন, ‘‘এ নিয়ে আমি আর কিছু বলব না।’’

হাওড়া জেলা প্রশাসনের পঞ্চায়েত দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘কেন ওই জায়গায় জল জমছে, তা খতিয়ে দেখতে বলেছি। প্রয়োজনে আমাদের জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ারেরা গিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Poor condition of road Howrah sewage system Howrah Municipality

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}