দ্বারকেশ্বর নদ থেকে ট্রাক্টরে করে বালি বোঝাই চলছে। গোঘাটের ভাবাপুরে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।
প্লাবনের পরে জল কমতেই আরামবাগ মহকুমার বিভিন্ন নদনদী থেকে বালি চুরি ফের শুরু হয়ে গিয়েছে। টাস্ক ফোর্স গঠন, অভিযান, ধরপাকড়, জরিমানা আদায়— কোনও কিছুতেই চুরি আটকানো যাচ্ছে না। এ বার আবার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া বৈধ খাদান এলাকাগুলি থেকে বালি চুরি বেশি হচ্ছে বলে অভিযোগ নদ-নদী সংলগ্ন গ্রামগুলির বাসিন্দাদের। একই অভিযোগ ইজারার মেয়াদ উত্তীর্ণ বিভিন্ন বালিখাদের মালিকদেরও।
টানা ছুটির অবকাশে নদনদীগুলিতে এমনিতেই সে ভাবে নজরদারি নেই। পুলিশ অবশ্য বিভিন্ন রাস্তায় ‘চেকিং’ চালাচ্ছে। সে ভাবেই শনিবার রাতে গোঘাটে দ্বারকেশ্বর নদের বিভিন্ন জায়গা থেকে বালি চুরি করে পাচারের অভিযোগে তিনটি বালি ভর্তি ট্রাক্টর আটক করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় তিন চালককে। ট্রাক্টরগুলি আরামবাগের দিকে যাওয়ার সময় দফায় দফায় ভাদুর মোড় থেকে ধরা হয়। ধৃত সৈকত ঘোষ, বিশ্বজিৎ পাল এবং শেখ মুস্তাকিনকে রবিবার আরামবাগ আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
মহকুমা ভূমি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্বারকেশ্বর নদ এবং মুণ্ডেশ্বরী নদী মিলিয়ে মহকুমায় মোট বৈধ বালিখাদ ১৪টি। এর মধ্যে ১০টির ইজারার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকি চারটির ইজারার মেয়াদ আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই শেষ হবে। বালি চুরির ঘটনা অস্বীকার করেনি ভূমি দফতর। জেলা ভূমি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘রাতের অভিযানে কিছু সমস্যা থাকলেও আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের প্রক্রিয়া শুরু করেছি। বেআইনি বালি তোলার খবর পেলেই আমরা ধরছি। বালি চুরি রুখতে নিয়মিত অভিযান চলে। রাজস্বও আদায় হয়। তবে রাতের চুরিগুলির ক্ষেত্রে অভিযানের কিছু সমস্যা আছে। সেগুলো মোকাবিলার প্রক্রিয়া চলছে।’’ ওই ভূমি আধিকারিক আরও জানান, মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া বালিখাদগুলি থেকে চুরির অভিযোগ মিলেছে। দফতর নজর রাখছে। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনগুলিরও সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
এসডিপিও (আরামবাগ) অভিষেক মণ্ডল বলেন, ‘নির্দিষ্ট চালান ছাড়া বালির গাড়ি রাস্তায় পেলেই আমরা আটকাচ্ছি। গত ১৫ দিনে চারটি থানায় ৪টির বেশি মামলা হয়েছে। পুলিশের সক্রিয়তায় চুরি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ হয়েছে।’’
মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া খাদগুলির মালিকদের অনেকের অভিযোগ, তাঁদের খাদগুলি থেকে ব্যাপক বালি চুরিতের মদত দিচ্ছে বা প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত আছে তাঁদের অংশীদারদেরই একাংশ। গ্রামবাসীরা জানান, দ্বারকেশ্বর নদের দু’পাড় সংলগ্ন তিরোল পঞ্চায়েত এলাকার পারআদ্রা, বাইশ মাইল, সালেপুর ১ ও ২, খানাকুলের কিশোরপুর ১ ও ২, ঘোষপুর, ঠাকুরানিচক, গোঘাটের কুমারগঞ্জ, ভাদুর, কুমুড়শা এবং বালি পঞ্চায়েত এলাকার বালিও সাফ হয়ে যাচ্ছে। একই ভাবে মুণ্ডেশ্বরী নদীর দু’পাড় জুড়ে আরামবাগের মলয়পুর ১ ও ২, হরিণখোলা ১ ও ২, আরান্ডি ২, খানাকুলের তাঁতিশাল, বালিপুর, রামমোহন ১, অরুন্ডা, চিংড়া, নতিবপুর ১ ও ২, পলাশপাই ১ ও ২, শাবলসিংহপুর এবং মাড়োখানা থেকেও দেদার বালি উঠছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy