স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে টিউমার অস্ত্রোপচার, সুস্থ দ্রৌপদী। নিজস্ব চিত্র।
বছর দু’য়েক ধরে হাতের মধ্যে বাসা বেধেছিল প্রায় ২ কেজি ওজনের একটি টিউমার। কনুইয়ের নীচ থেকে পাঞ্জা পর্যন্ত বাঁ হাতটি ফুলে গিয়েছিল আস্বাভাবিক ভাবে। ওই হাতে কাজ তো দূর, ঠিক মতো নাড়তেই পারতেন না পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড় এলাকার বছর পঁচিশের তরুণী দ্রৌপদী কালা। রাজ্যে, রাজ্যের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করিয়েও সুফল মেলেনি। সম্প্রতি উলুবেড়িয়ার ফুলেশ্বরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে টিউমারটি অপারেশন করিয়ে বর্তমানে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ওই মহিলা। বুধবার হাতের সেলাই কেটে বাড়ি ফিরে গেলেন তরুণী। এই অস্ত্রোপচারের খরচ আনুমানিক খরচ ৪ লক্ষ টাকা। যদিও পুরো চিকিৎসাই হয়েছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে বিনামূল্যে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, দিন পনেরো আগে ওই মহিলা এই হাসপাতালে হাতের চিকিৎসার জন্য আসেন। চিকিৎসক হুমায়ুন আলি শাহ তরুণীর হাতের টিউমারটি দেখে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেন। চিকিৎসক জানান, জটিল ও ব্যয়বহুল ওই অস্ত্রোপচারটি করতে প্রায় চার ঘণ্টা সময় লেগেছে। বাদ দেওয়া হয়েছে প্রায় ২ কেজির টিউমারটি। হাত সচল রাখার জন্য ওই তরুণীর পা থেকে ৬ইঞ্চি হাড় কেটে হাতে জোড়া লাগানো হয়েছে। বর্তমানে তরুণী সুস্থ। ওই হাত দিয়ে স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে তাঁর আর কোনও সমস্যা হবে না।
সোমবার হাসপাতালে শুয়ে তরুণী জানান, স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে তাঁর অভাবের সংসারে তিনি অন্যতম রোজগেরে সদস্য। দিনমজুরি করে সংসার চলে। গত দু’বছরে বহু চিকিৎসক দেখিয়েছেন। তাঁদের কেউ কেউ বলেছিলেন হাতের কিছুটা অংশ কেটে বাদ দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘হাত বাদ দেওয়ার কথায় চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। হাত না থাকলে খাব কি? এই হাসপাতালের চিকিৎসক ভগবানের মতো কাজ করেছেন। এখন আমি সুস্থ। মনে হচ্ছে নতুন জীবন পেলাম।’’
হাসপাতালে কর্ণধার চিকিৎসক শুভাশিস মিত্র বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে এর আগেও অনেক জটিল অস্ত্রোপচার হয়েছে। মানুষ সুস্থ হয়েছেন। ওই তরুণী আবার নতুন জীবন ফিরে পেলেন, এটা ভেবেই ভাল লাগছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy