পুরুষদের শৌচালয়ে যেতে বাধ্য হন মহিলারাও। —নিজস্ব চিত্র।
‘অমৃত ভারত’ প্রকল্পে কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিভিন্ন রেল স্টেশনকে ঝাঁ-চকচকে করার পরিকল্পনা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের কথা বলা হচ্ছে। অথচ, পূর্ব রেলের হাওড়া-বর্ধমান শাখার পান্ডুয়া স্টেশনে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে মহিলাদের শৌচাগার বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। তাতে সমস্যায় পড়ছেন মহিলা যাত্রীরা। উপায়ান্তর না দেখে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে অনেক মহিলা প্ল্যাটফর্মে পুরুষদের শৌচাগারে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ মহিলা যাত্রীরা। রেলের উদাসীনতা নিয়ে তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন। তাঁদের একাংশের অভিযোগ, সমস্যার কথা স্টেশন কর্তৃপক্ষকে জানালেও সমাধান কবে হবে তার সদুত্তর মেলেনি। স্টেশন ম্যানেজার নাগেশ্বর পাসোয়ান বলেন, ‘‘মহিলাদের শৌচাগারটি ২০ দিনের বেশি বন্ধ রয়েছে। কারণ, শৌচাগারের নর্দমা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পরিষ্কার করার জন্য খবর দিয়েছি। যাঁদের সেই কাজ করার কথা, তাঁরা এখনও তা করেননি। আশা করছি, দ্রুত কাজটি শুরু হবে।’’
ব্যস্ত পান্ডুয়া স্টেশন হয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মহিলা-পুরুষ যাতায়াত করেন। চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে ওভারব্রিজের নীচে পুরুষ ও মহিলাদের পৃথক দু’টি শৌচাগার পাশাপাশি রয়েছে। পুরুষদের শৌচাগারটি অবশ্য খোলা রয়েছে। স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানান, ওই প্ল্যাটফর্মেই মহিলাদের বিশ্রামাগারে আরও একটি শৌচাগার রয়েছে। তবে, সেটি তালাবন্ধ থাকে। মহিলাদের প্রয়োজনে স্টেশন কার্যালয় থেকে চাবি এনে শৌচাগার খুলে ব্যবহার করতে হয়। তবে ওই শৌচাগারের কথা যে মহিলা যাত্রীরা তেমন ভাবে জানেন না, স্টেশন কর্তৃপক্ষ মানছেন। ওই শৌচাগারের কথা ‘পাবলিক অ্যাড্রেস সিস্টেমে’ ঘোষণা করা হবে বলে স্টেশন ম্যানেজার জানান।
পান্ডুয়ার দাবরা গ্রামের বাসিন্দা শিপ্রা পাল কলকাতায় বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। তিনি পান্ডুয়া স্টেশন হয়ে যাতায়াত করেন। তিনি বলেন, ‘‘গ্রাম থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে পান্ডুয়া স্টেশন। আমি সকাল সাড়ে ন’টায় এখান থেকে ট্রেন ধরি। মহিলাদের শৌচাগার বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়তে হয়। কবে চালু হবে কে জানে!’’ চুঁচুড়া, শ্রীরামপুর, শেওড়াফুলি প্রভৃতি জায়গা থেকে আসা আনাজ এবং মাছ ব্যবসায়ী মহিলারাও এই সমস্যা নিয়ে ক্ষোভের কথা জানান। এক মহিলা নিত্যযাত্রী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন স্টেশনকে ‘মডেল স্টেশন’ করছে। প্ল্যাটফর্ম আধুনিক করা হচ্ছে। সেখানে পান্ডুয়া স্টেশনে মহিলাদের শৌচাগার বন্ধের দিকে রেলের নজর নেই! নিরুপায় হয়ে মেয়েরা ছেলেদের শৌচাগারে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এ ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া উচিত।’’ চার নম্বর বাদে অন্য প্ল্যাটফর্মেও শৌচাগারের দাবি রয়েছে।
স্টেশন ম্যানেজার জানান, স্টেশন চত্বরে একটি সুলভ শৌচাগারের জন্য সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে প্রায় চার মাস আগে চিঠি দেওয়া হয়। বিদায়ী সাংসদ লকেটের বক্তব্য জানা যায়নি। তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএস-এর উত্তরও দেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy