প্রতীকী চিত্র।
আর্থিক ভাবে দুর্বল ওরা সকলেই। ওদের একটি বড় অংশ আবার প্রথম প্রজন্মের সাক্ষর। পড়াশোনায় উৎসাহ থাকলেও বাড়িতে নেই স্মার্টফোন। যদি বা থাকে, তা হলেও তা রিচার্জ করার সামর্থ্য থাকে না সব সময়ে। যার জেরে ওরা বঞ্চিত হচ্ছে অনলাইন ক্লাসের সুবিধা থেকে। অতিমারির এই সময়ে ওদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই দরিদ্র পরিবারের এমন ১৯ জন ছাত্রীকে স্মার্টফোন কিনে দিচ্ছেন হাওড়া ময়দান এলাকার যোগেশচন্দ্র গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকারা। এর পাশাপাশি ৩৩ জন গরিব ছাত্রীর মোবাইল রিচার্জ করিয়ে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে করোনার সংক্রমণ। স্কুলের শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, পর পর দু’বছর টানা অনেকটা সময় ধরে লকডাউন বা আংশিক লকডাউনের জেরে বহু ছাত্রীরই পরিবারের আর্থিক অবস্থা বেশ শোচনীয়। অভিভাবকদের অনেকেরই বর্তমানে কাজ নেই। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শুভ্রা চক্রবর্তী বললেন, “আমাদের ছাত্রীদের অনেকেরই পরিবার আর্থিক ভাবে দুর্বল। কারও মা হয়তো পরিচারিকার কাজ করেন। বাবা দিনমজুর। তাঁদের অনেকেই অতিমারির সময়ে কাজ হারিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে সন্তানের জন্য অনলাইনে পড়াশোনার ব্যবস্থা করা ওঁদের পক্ষে অসম্ভব। বেশির ভাগেরই বাড়িতে স্মার্টফোন নেই। এই ধরনের পরিবার থেকে আসা ছাত্রীদের কথা ভেবেই আমরা পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির ১৯ জনকে স্মার্টফোন কিনে দিচ্ছি। ৩৩ জন ছাত্রীর মোবাইল রিচার্জও করানো হবে।”
ওই স্কুলে অবশ্য এমন আরও অনেক ছাত্রীই রয়েছে, যাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা বর্তমানে নড়বড়ে। তাদের সবাইকে অবশ্য একসঙ্গে স্মার্টফোন কিনে দেওয়া সম্ভব নয়। শুভ্রাদেবী বললেন, “প্রতিটি ক্লাস থেকে আর্থিক ভাবে দুর্বল, অথচ পড়াশোনায় উৎসাহ খুব বেশি, এমন ছাত্রীদেরই নির্বাচন করেছি আমরা। এই নির্বাচনের দায়িত্ব ছিল ক্লাস-টিচারদের উপরে।” করোনা পরিস্থিতি একই ভাবে চললে পরবর্তী পর্যায়ে আরও কিছু উৎসাহী ছাত্রীকে স্মার্টফোন কিনে দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন শিক্ষিকারা।
ছাত্রীদের ফোন কেনার জন্য স্কুলের শিক্ষিকারাই টাকা দিয়েছেন। স্কুলে তাঁরা তৈরি করেছিলেন একটি ওয়েলফেয়ার ফান্ড। সেই তহবিল থেকে কিছু জমানো টাকা পাওয়া গিয়েছে। বাকি টাকা যে যেমন পেরেছেন, দিয়েছেন। শুভ্রাদেবী বলেন, “আমরা শিক্ষিকাদের বলেছিলাম, অন্তত আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা করে দিলে ভাল হয়। অনেকে পাঁচ বা দশ হাজার টাকাও দিয়েছেন।”
২০২০ সালে ৯০ বছর পূর্ণ করেছে হাওড়ার ওই স্কুল। শিক্ষিকারা জানালেন, তাঁদের ইচ্ছে ছিল সেই উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠান করার। কিন্তু করোনার জন্য তা সম্ভব হয়নি। শুভ্রাদেবী বলেন, “এ বারও করোনার জন্য কোনও অনুষ্ঠান হচ্ছে না। তবে শনিবার, অর্থাৎ ১৯ জুন কোভিড-বিধি মেনে মেয়েদের ডেকে মোবাইল ফোন দেওয়া হবে। সেটাই ৯০ বছরের উদ্যাপন বলে ধরা যেতে পারে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy