Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Parking

Howrah: পার্কিং ফি-র নামে ‘তোলাবাজি’, তিন বছরে এক টাকাও জমা পড়েনি হাওড়া পুরসভায়

হাওড়া শহরে পুলিশ ও পুরসভার চোখের সামনেই চলছে অবৈধ পার্কিংয়ের রমরমা কারবার।

বেআইনি পার্কিং ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় গজিয়ে উঠেছে সিন্ডিকেট।

বেআইনি পার্কিং ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় গজিয়ে উঠেছে সিন্ডিকেট।

দেবাশিস দাশ
হাওড়া শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২২ ০৪:৪১
Share: Save:

হাওড়া শহরে পুলিশ ও পুরসভার চোখের সামনেই চলছে অবৈধ পার্কিংয়ের রমরমা কারবার। বেআইনি পার্কিং ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় গজিয়ে উঠেছে সিন্ডিকেট। অভিযোগ, সেখান থেকে মোটা টাকা ‘কাটমানি’ হিসেবে পকেটে পুরছেন এলাকার ‘দাদারা’। যে কারণে গত তিন বছরে পার্কিং বাবদ পুর কোষাগারে একটি টাকাও জমা পড়েনি। এই খাতে রাজস্বের ক্ষতি হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা।

হাওড়ায় ২০১৮-র পর থেকে নির্বাচিত পুর বোর্ড না থাকায় কাজের পরিবেশ কার্যত তলানিতে। পাল্লা দিয়ে কমেছে আয়। বর্তমানে নুন আনতে পান্তা ফুরনোর অবস্থা। কারণ, দু’-একটি ছাড়া অধিকাংশ দফতরেরই রাজস্ব আদায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। এমনই একটি দফতর হল পার্কিং। আগে ওই দফতর বছরে প্রায় এক কোটি টাকা আয় করত। কিন্তু কমতে কমতে এখন সেই আয়ের পরিমাণ কার্যত শূন্য।

হাওড়ার মতো ঘিঞ্জি শহরে বৈধ পার্কিংয়ের জায়গা এমনিতেই খুব কম। তা সত্ত্বেও ১৩৯টি অনুষ্ঠান বাড়ি সংলগ্ন পার্কিং এবং শহরের আরও ৩৮টি পার্কিং লট পুরসভার নিজস্ব। সূত্রের খবর, এই সমস্ত পার্কিং থেকে পুরসভার বছরে প্রায় এক কোটি টাকা আয় হত ২০১৭-’১৮ সাল পর্যন্ত। কিন্তু ২০১৯ থেকে ২০২১ পর্যন্ত পার্কিং থেকে একটি টাকাও আয় হয়নি তাদের। যার ফলে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা।

কিন্তু কেন? পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্কিং-ফি আদায়ের জন্য দরপত্র ডেকে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু গত কয়েক বছরে বার বার দরপত্র চাওয়া হলেও কোনও সংস্থা তাতে সাড়া দেয়নি। যার ফলে বৈধ ভাবে পার্কিং-ফি আদায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

দরপত্রে সাড়া মিলল না কেন?

পুরসভার এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘সিন্ডিকেটের স্থানীয় তোলাবাজদের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ানোর ভয়ে এই ব্যবসায় কেউ আর আসতে চাইছে না। এখন স্থানীয় তোলাবাজেরাই পার্কিং থেকে টাকা তুলছে অবাধে। পুরসভার নিজস্ব পরিকাঠামো না থাকায় এটা আটকাতে পারছে না। পুলিশও সব জেনেশুনে চুপ করে আছে।’’

পুরসভার নিজস্ব পার্কিং লট থেকে ফি আদায় বন্ধ হওয়ায় ইতিমধ্যেই হাওড়া স্টেশন চত্বর ও হাওড়া বাসস্ট্যান্ড-সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায়, বিশেষ করে মঙ্গলাহাট চলাকালীন, রবি থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত অবৈধ পার্কিং লটগুলিতে সিন্ডিকেটের গুন্ডারা দাপিয়ে বেড়ায়। মঙ্গলাহাটের তিন দিন বঙ্গবাসী মোড়ের কাছে পেট্রল পাম্পের পাশেই গজিয়ে ওঠে অবৈধ পার্কিং। যার জেরে ট্যাক্সি ও মালবাহী গাড়ির ভিড়ে রাস্তা কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। বঙ্কিম সেতুও হয়ে যায় পার্কিংয়ের জায়গা। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এক শ্রেণির ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীর সঙ্গে স্থানীয় সিন্ডিকেটের বোঝাপড়াতেই অবাধে এই পার্কিং ব্যবসা চলে। যে কারণে পথ চলাই দায় হয়ে ওঠে সাধারণ মানুষের।

হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (ট্র্যাফিক) অর্ণব বিশ্বাস বলেন, ‘‘পুরসভার পার্কিং লটগুলি দেখাশোনার দায়িত্ব কিন্তু পুরসভারই। তবে অন্য যে সব জায়গায় অবৈধ পার্কিং তৈরি হয়েছে, সেগুলি খতিয়ে দেখে আমরা ‘নো পার্কিং জ়োন’-এর নির্দেশিকা জারি করেছি। আরও যে সব জায়গায় এই কাণ্ড হচ্ছে, সেগুলির উপরেও নজর রাখা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Parking Howrah Municipaity
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy