Advertisement
E-Paper

School Dropouts: স্কুলের ব্যাগ নয়, এখন সংসারের বোঝা বেশি ভারী! সহপাঠীদের ফেরাতে অভিযান বন্ধুদের

লকডাউন-পর্ব থেকেই সংসারের বোঝা ভারী লাগতে শুরু করেছিল অনেক পড়ুয়ার। তাই স্কুল খুললেও অনেকেই সেমুখো হচ্ছে না।

এখনও ফাঁকা স্কুলের বেঞ্চ।

এখনও ফাঁকা স্কুলের বেঞ্চ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২১ ১৭:৩৬
Share
Save

স্কুল খুলেছে অনেক দিন। কিন্তু স্কুলে আসছে না বহু পড়ুয়াই। স্কুলছুটদের শ্রেণিকক্ষে ফেরাতে এ বার নয়া উদ্যোগ নিল হুগলির পাণ্ডুয়ার বিলসরা রবীন্দ্রনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে নিয়ে সহপাঠীদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে গেল তারা।
স্কুলের ব্যাগ নয়, লকডাউন-পর্ব থেকেই সংসারের বোঝা ভারী লাগতে শুরু করেছিল অনেক পড়ুয়ার। তাই লকডাউন পর্ব শেষে স্কুল খুললেও অনেকে সে মুখো হচ্ছে না। বরং গত দু’বছরের মধ্যে অনেকেই পড়ুয়ার তকমা মুছে ফেলে অবতীর্ণ হয়েছে নতুন ভূমিকায়। বিলসরার বাসিন্দা যাদব ক্ষেত্রপাল যেমন বললেন, ‘‘আমার ছেলে নবম শ্রেণিতে পড়ত। কিন্তু এখন আর স্কুলে যায় না। আমার আর্থিক অবস্থা খারাপ। ছেলে এখন কাজে যায়। ও পোলট্রি ফার্মে কাজ করে।’’ একই কথা বললেন ওই গ্রামের বাসিন্দা নেপাল ক্ষেত্রপালও। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলে দু’বার ফেল করেছে বলে আর স্কুলে যেতে চাইছে না। এখন ও একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করে।’’

পাণ্ডুয়ার রবীন্দ্রনাথ বিলসরা উচ্চবিদ্যালয়ে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ২০৯ জন। লকডাউনে স্কুল খোলার পর সেই সংখ্যাটা অনেকটাই কমেছে। নভেম্বরে স্কুল খোলার পর প্রায় এক মাস হতে চলল। কিন্তু ছাত্র-ছাত্রীদের বেশিরভাগই অনুপস্থিত। তা দেখে বৃহস্পতিবার পড়ুয়াদের নিয়ে গ্রামে গ্রামে অভিযান চালান শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁরা পাণ্ডুয়ার তামলেপাড়া, বড়গ্রাম, বিলসরা, সরেনডাঙা এলাকায় ঘুরে ছাত্রছাত্রীদের বাড়ি বাড়ি যান। বিদ্যালয়ে গেলে মিলবে নানা সুযোগ সুবিধা, এ কথা স্কুলছুটদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বুঝিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

আবার শুনতে হয়েছে নানা অভাব অভিযোগের কথাও। ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির পড়ুয়া রিয়া ক্ষেত্রপাল। রিয়ার বক্তব্য, ‘‘আমার বাবা নেই। মা কাজে যায়। বোনকে দেখতে হয়। আমার বোন হাঁটতে চলতে পারে না। তাই স্কুলে যাই না।’’ ওই বিদ্যালয়ের একাশ শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন শ্যামা ক্ষেত্রপাল (নাম পরিবর্তিত)। এখন তিনি বিবাহিত। তাঁর কথায়, ‘‘আমি একাদশ শ্রেণিতে পড়তাম। এখন আমার ১৭ বছর বয়স। কিন্তু আমার পরিবারে আর্থিক সমস্যা ছিল। বাড়িতে অসুবিধা হচ্ছিল। তাই বিয়ে করেছি। শিক্ষক-শিক্ষিকারা আমাকে স্কুলে যেতে বললেন।’’ ওই বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র শমিত ক্ষেত্রপাল। স্কুল ছেড়ে এখন সে রাজকোট নিবাসী, অলঙ্কার শিল্পের শ্রমিক। শমিতের মা কল্পনা ক্ষেত্রপাল বলছেন, ‘‘আমার শরীর খুব খারাপ ছিল। টাকা পয়সার দরকার ছিল। রাজকোটে ওর দাদা থাকে। তাই সেখানে শমিত কাজ শিখতে গিয়েছে।’’

শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পড়ুয়াদের ওই দলটিতে ছিলেন ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী পারভিন সুলতানা। সহপাঠীদের বাড়িতে গিয়ে তাদের কথা শোনার পর তার সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, ‘‘কারও আর্থিক সমস্যা। কারও আবার বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তবে আমরা প্রত্যেককে বুঝিয়েছি। তা হলে সকলে মিলে আবার খুব মজা করব।’’

বিলসরা রবীন্দ্রনাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৈনাক মুখোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘আমরা ওদের পাশে আছি। বার বার স্কুলে আসার কথা বলেছি। এখন থেকে এই অভিযান চালিয়ে যাব।’’

school school dropouts

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।