স্বাস্থ্য সাথী শিবির । — ফাইল চিত্র।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা দিতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর হাওড়া শহরে ১১৩টি নার্সিংহোমের নাম নথিভুক্ত করলেও সেই সুবিধা মিলছে না তার মধ্যে ৪৯টি নার্সিংহোমে। যার ফলে নিত্যদিন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে ওই নার্সিংহোমগুলি নিয়ে বিস্তর অভিযোগ জমা পড়ছে। শুধু তা-ই নয়, যে ৬৪টি নার্সিংহোম রোগীদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেও রোগীদের থেকে অনৈতিক ভাবে অর্থ আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতি থেকে রোগীদের অব্যাহতি দিতে জেলা স্বাস্থ্য দফতর বাধ্যতামূলক ভাবে চলতি মাসেই সমস্ত নার্সিংহোমগুলিকেনিয়ে একটি প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে কোনও নার্সিংহোমে ভর্তি হওয়ার পরে যে তিন ধরনের অভিযোগ নিয়মিত আসছে সেগুলি হল — স্বাস্থ্যসাথী কার্ড প্রত্যাখ্যান, অতিরিক্ত বিল করা এবং রোগীকে বাইরে থেকে অতিরিক্ত ওষুধ কিনতে বাধ্য করা। এই তিনটি কারণে নিয়মিত বহু রোগী এবং তাঁর পরিজনদের হয়রান হতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে গত মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের বৈঠকে আলোচনাও হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে ভর্তি না করার পক্ষে নার্সিংহোমগুলির যুক্তি হল, এই কার্ডের টাকা আদায়ের ক্ষেত্রে থার্ড পার্টি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বা টিপিএ-গুলি সময় মতো টাকা পাচ্ছে না। দীর্ঘদিন ধরে লক্ষ লক্ষ টাকা বকেয়া থাকছে তাদের। পাশাপাশি, কোনও অস্ত্রোপচারের আগে ও পরে যে খরচ হয়, তা স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া, যে নার্সিংহোমগুলি স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করলেও তার সুবিধা দিচ্ছে না, তাদের বক্তব্য, উপযুক্ত প্রশিক্ষণের অভাবেই এই সমস্যা হচ্ছে। সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়ে এই প্রকল্প ‘অ্যাক্টিভেট’ করাতে গিয়ে তাঁরা সমস্যায় পড়ছেন বলে জানানো হয়েছে নার্সিংহোমগুলির তরফে।
হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে হাওড়ার সমস্ত বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, প্রত্যেককেই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে যোগ দিতে হবে। কারিগরি যে সব সমস্যার জন্য অনেকে যোগ দেননি, তাদের জন্য জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে একটি প্রশিক্ষণ শিবির করা হবে। এর পরে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে আর কোনও অভিযোগ শোনা হবে না।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, টিপিএ নিয়ে যে সমসা হচ্ছে, তা নিয়ে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে রিপোর্ট পৌঁছেছে। সেই সমস্যাগুলি কী ভাবে দ্রুত নিরসন করা যায়, সেই চেষ্টা চলছে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা সমস্ত স্তরের মানুষ যাতে পান, তা নিশ্চিত করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy