বন্ধ ভদ্রেশ্বরের শ্যামনগর নর্থ জুটমিল। নিজস্ব চিত্র
চালু হওয়ার তিন মাসের মধ্যে ফের বন্ধ হল ভদ্রেশ্বরের শ্যামনগর নর্থ জুটমিল। শ্রমিকদের একাংশের অসহযোগিতার কারণ দেখিয়ে সোমবার ভদ্রেশ্বরের ওই জুটমিলে বন্ধের নোটিস ঝোলান কর্তৃপক্ষ। এর ফলে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে মিলের প্রায় সাড়ে চার হাজার শ্রমিক বিপাকে পড়লেন।
শ্রমিকদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি স্পিনিং বিভাগে আধুনিক মেশিন চালিয়ে সংশ্লিষ্ট কাজে শ্রমিকের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছেন। চারজন শ্রমিকের পরিবর্তে দু’জনকে কাজ করতে হচ্ছে। তাতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শ্রমিকদের তরফে আপত্তি জানানো হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাতে কান দেননি। এই পরিস্থিতিতে রবিবার রাত থেকে মিলের সব বিভাগের শ্রমিক কাজ বন্ধ করে দেন। উৎপাদনে তার প্রভাব পড়ে। এর পরেই মিল বন্ধের সিদ্ধান্ত। সোমবার সকালে কাজে যোগ দিতে এসে মিল বন্ধের নোটিস দেখেন শ্রমিকরা। গোলমালের আশঙ্কায় ভদ্রেশ্বর থানার বিশাল বাহিনী মিলের বাইরে মোতায়েন ছিল। তবে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
স্পিনিং বিভাগে নতুন যন্ত্র এনে নির্দিষ্ট কাজে শ্রমিক কমিয়ে দেওয়ায় এবং উদ্বৃত্ত শ্রমিকদের অন্য বিভাগে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। শ্রমিকদের একাংশের আশঙ্কা, অন্যান্য বিভাগেও এ ভাবে কাজ করা হবে। সে ক্ষেত্রে অনেক শ্রমিককে বসিয়ে দেওয়া হতে পারে। মিল শ্রমিক রামদাস ভগতের ক্ষোভ, ‘‘একটা মেশিনে দু’জন শ্রমিক কাজ করতে গেলে যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ ভাবে কাজের চাপ বাড়িয়ে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করেছে কর্তৃপক্ষ।’’
মিল কর্তৃপক্ষের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শ্রমিক অসন্তোষের জেরে মিলে কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছিল। শ্রমিকরা কাজে যোগ না দেওয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। সে কারণেই মিল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’
চন্দননগরের উপশ্রম কমিশনার কল্লোল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মিল কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে মিল চালুর চেষ্টা করা হবে।’’
গত ২৮ ডিসেম্বর থেকে এই একই বিষয় নিয়ে শ্রমিক-মালিক দ্বন্দ্বের জেরে কারখানা বন্ধ ছিল। পরে চন্দননগরের উপ শ্রম কমিশনারের দফতরে মিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিক সংগঠনের বৈঠকের পর গত ১২ জানুয়ারি মিল চালু হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy