Advertisement
E-Paper

প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ নিয়ন্ত্রণে অভিযান, ‘তিরস্কার-পুরস্কার’ও

শ্রীরামপুর মহকুমায় পুরসভা ছ’টি। ডানকুনি, উত্তরপাড়া-কোতরং, কোন্নগর, রিষড়া, শ্রীরামপুর এবং বৈদ্যবাটী। এর মধ্যে বৈদ্যবাটী পুর-কর্তৃপক্ষ নিয়মিত নজরদারি চালান।

ঘোষণা শ্রীরামপুর পুরভবনের গেটেও। নিজস্ব চিত্র

ঘোষণা শ্রীরামপুর পুরভবনের গেটেও। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪ ০৮:৩৬
Share
Save

ঢক্কানিনাদ কম হয়নি। কিন্তু কাজের কাজ শূন্য! হুগলি জেলা জুড়ে প্লাস্টিকের পাতলা ক্যারিব্যাগের রমরমা কমেনি। ওই ক্যারিব্যাগ বন্ধে এ বার শ্রীরামপুর মহকুমা জুড়ে পথে নামছে প্রশাসন। পুরসভাগুলিকে সঙ্গে নিয়েই আজ, শুক্রবার থেকে অভিযান শুরু হবে। মহকুমা প্রশাসনের দাবি, এ বার শুধু প্রচার নয়, ‘পুরস্কার-তিরস্কারের’ নীতি নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ, নিষিদ্ধ ক্যারিব্যাগ বর্জনে মিলবে পুরস্কার বা স্বীকৃতি। অন্যথায় দিতে হবে জরিমানা। জুটবে ‘তিরস্কার’।

সাধারণ মানুষের বক্তব্য, আগে অনেক পুরসভা দু’এক দিন দায়সারা প্রচার করেই থেমে গিয়েছে। ফলে, কাজের কাজ হয়নি। পরিবেশ সচেতন লোকজন মনে করছেন, প্রশাসনের কড়া মনোভাব যথাযথ ভাবে কার্যকর হলে বিষয়টি ফলপ্রসূ হবে। প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের বহুল ব্যবহারে পরিবেশের ক্ষতি, নিকাশি সমস্যা হয়।

শ্রীরামপুর মহকুমায় পুরসভা ছ’টি। ডানকুনি, উত্তরপাড়া-কোতরং, কোন্নগর, রিষড়া, শ্রীরামপুর এবং বৈদ্যবাটী। এর মধ্যে বৈদ্যবাটী পুর-কর্তৃপক্ষ নিয়মিত নজরদারি চালান। ইতিপূর্বে হাটে-বাজারে হানা দিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সচেতন করার পাশাপাশি জরিমানা আদায়, নিষিদ্ধ ক্যারিব্যাগ বাজেয়াপ্ত করেছেন তাঁরা। প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বন্ধ করে এক সময় নাম কুড়িয়েছিল উত্তরপাড়া-কোতরং। এখন ওই শহরেও প্লাস্টিকের পাতলা ক্যারিব্যাগের রমরমা। বাকি চার পুরসভার কথা কহতব্য নয়। ঢাকঢোক পিটিয়ে প্রচার, নানা ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসের পরেও মহকুমা শহর শ্রীরামপুর শোচনীয় ভাবে ব্যর্থ। নাগরিক সচেতনতাও কার্যত নেই।

সম্প্রতি এ নিয়ে লাগাতার কর্মসূচি নেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হন মহকুমাশাসক (শ্রীরামপুর) শম্ভুদীপ সরকার। মহকুমার ছয় পুরসভার কর্তাদের নিয়ে তিনি বৈঠক করেন। ঠিক হয়েছে, আজ একযোগে রাস্তায় নামবে পুরসভাগুলি। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই দু’এক দিন মাইকে প্রচার করা হয়েছে বলে প্রশাসনের দাবি।

মহকুমা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, শুধু আনাজ বা মাছ বাজার নয়, বিভিন্ন মার্কেট চত্বর, পার্ক, গঙ্গার ধার, ধর্মস্থান, ভিড় হয় এমন জায়গা— সর্বত্র নজরদারি চালানো হবে। তাঁর কথায়, ‘‘ধরা যাক কোনও ব্যবসায়ী প্লাস্টিকের নিষিদ্ধ ক্যারিব্যাগ পুরোপুরি বন্ধ করে দিলেন। দোকানের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের সময় তাঁকে ছাড় দেওয়ার কথা ভাবা হবে।’’

বৈদ্যবাটীর পুরপ্রধান পিন্টু মাহাতো বলেন, ‘‘আমরা ধারাবাহিক অভিযান চালাই। সব পুরসভা একত্রে তা করলে অভিযান আরও গতি পাবে।’’ শ্রীরামপুরের পুর-পারিষদ (জঞ্জাল) পিন্টু নাগ বলেন, ‘‘প্রথমেই আমরা পুরভবনকে প্লাস্টিকের নিষিদ্ধ ক্যারিব্যাগমুক্ত এলাকা হিসাবে ঘোষণা করলাম। এই সংক্রান্ত বোর্ডও লাগানো হয়েছে। কোনও পুরকর্মী নিষিদ্ধ ক্যারিব্যাগ নিয়ে ঢুকলে জরিমানা তাঁর বেতন থেকে কাটা হবে। বাইরের লোকজনের থেকেও জরিমানা আদায় করা হবে। শহর জুড়েই এই কাজে আর কোনও শিথিলতা থাকবে না।’’

পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী ১২০ মাইক্রনের কম ঘনত্বের ক্যারিব্যাগের পাশাপাশি প্লাস্টিকের থালা, বাটি, গ্লাস, পতাকা ইত্যাদিও নিষিদ্ধ। কিন্তু প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থাপনা শিথিল। ফলে, প্রশাসনের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। সর্বত্র এই ব্যবস্থা দরকার ধারাবাহিক ভাবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Serampore

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}