এভাবেই গাছগুলি কাটা হয়েছে। গোঘাটের ফলুই তালপুকুর এলাকায়।
নির্বিচারে কেটে ফেলা হচ্ছে একের পর এক গাছ!
মাস তিনেক আগে ‘বেআইনি’ ভাবে শ’তিনেক গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছিল গোঘাটের বদনগঞ্জের দুই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে গোঘাটের বদনগঞ্জ-ফলুই ১ পঞ্চায়েতের ডিঙ্গেরপাড় এলাকায় খাস জমি থেকে প্রায় পাঁচশো গাছ ওই দুই নেতার মদতে কেটে ফেলা হয়েছে বলে নতুন করে অভিযোগ উঠল। বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে।
ওই দুই নেতার এক জন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি তাপস ওরফে পিরু ঘোষ। অপর জন পঞ্চায়েতের উপপ্রধান প্রসেনজিৎ ওরফে কাল্টু ঘোষাল। তাঁদের বিরুদ্ধেই ওই সব গাছ কাটার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন স্থানীয় আদিবাসী পাড়ার লোকজন। কেটে ফেলা গাছের গুঁড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় রবিবার একটি ট্রাক আটকে পুলিশের হাতে তুলে দেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, গাছ কাটা নিয়ে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতিতে জানিয়েও লাভ হচ্ছে না। বন দফতরও উদাসীন। আগের বারেও কাটা গাছ বোঝাই ট্রাক আটক করেও থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে গ্রামবাসীদের দাবি। পুলিশের বক্তব্য, কোনও অভিযোগ জমা না পড়ায় গাড়ি ছেড়ে দিতে হয়েছিল। এ বারের ঘটনার ক্ষেত্রেও সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় লিখিত কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি।
শাসক দলের অঞ্চল সভাপতি গাছ কাটা নিয়ে দোষের কিছু দেখছেন না। তাঁর বক্তব্য, নিজের জমিতে গাছ কাটা যেতেই পারে। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি জায়গায় গাছ কাটা হচ্ছে না। আমরা যে যার বাবার বা নিজের জায়গায় গাছ কাটছি।’’ অনুমতির প্রশ্নে তাঁর জবাব, ‘‘অত উত্তর দিতে পারব না। যখন যেমন প্রয়োজন, পঞ্চায়েত প্রধানের অনুমতিপত্র (নো-অবজেকশন) নেওয়া হয়।’’ গাছ কাটার অনুমতি আছে কিনা, উপপ্রধানের তা অজানা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওই জমিতে আমরা প্রায় ৪০ জন অংশীদার মিলেই গাছ বিক্রি করছি। যাঁরা গাছ কিনছেন তাঁদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে, তাঁরাই প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে আইনগতভাবে গাছ কাটবেন। তাঁরা অনুমতি নিয়েছেন, নাকি নেননি, খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
জায়গাটি খাস নাকি ব্যক্তি মালিকানাধীন তা নিয়েও তদন্ত দাবি করেছেন গ্রামবাসী। পঞ্চায়েত কতৃপক্ষ জানিয়েছেন, জায়গাটির মালিকানা এবং সেখানে অতীতে পঞ্চায়েত গাছ লাগিয়েছে কিনা, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তাদের কাছে অভিযোগ আসেনি। তবে জায়গাটি সরকারি কিনা, খতিয়ে দেখা হবে। গোঘাট-২ পঞ্চায়েত সমিতির বন কর্মাধ্যক্ষ স্বপন সাহানা জানান, আগের বার যখন অভিযোগ ওঠে, তখনই বন দফতরের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। এ বারেও বিষয়টি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে। বিধায়ক মানস মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘জায়গা নিয়ে বিতর্ক যাই থাকুক অনুমতি ছাড়া গাছ কাটা যায় না। তেমন হলে তিনি যেই হোন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বন দফতর এবং পুলিশকে বলা হয়েছে।’’
বন দফতরের আরামবাগ চাঁদুরের রেঞ্জার রবীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, গাছ কাটা নিয়ে এই দফতরের অনুমতি নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘সরেজমিনে তদন্ত করা হবে। গরমিল দেখলে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy