অপেক্ষা: হাওড়া জেলা হাসপাতাল চত্বরে প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য লম্বা লাইন। সোমবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
প্রায় এক পক্ষকাল পরে ৪৫ বছর ও তার চেয়ে বেশি বয়সিদের জন্য কোভিশিল্ড প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় দেওয়া ফের শুরু হল হাওড়ায়। প্রতিষেধক নিতে তাই সোমবার সকাল থেকেই কোভিড-বিধির তোয়াক্কা না করে দীর্ঘ লাইন পড়ল হাওড়ার বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে। সংক্রমণ রুখতে রাজ্য জুড়ে জারি হওয়া কড়াকড়ির মধ্যেই প্রতিষেধক নিতে কেউ এলেন নিজের গাড়িতে, কেউ বা টোটো ভাড়া করে বা হেঁটে।
হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, প্রতিষেধকের জোগান অপ্রতুল। তাই ৭০ বছরের বেশি বয়সিদের অগ্রাধিকার দিয়ে এ দিন সারা জেলায় আট হাজার প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ করা হয়। সেই কারণে সকলকে এ দিন প্রতিষেধক দেওয়া সম্ভব হয়নি। দীর্ঘক্ষণ লাইন দেওয়ার পরেও প্রতিষেধক না পেয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে অনেককেই।
প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য এ দিন শেষ রাত থেকে হাওড়া হাসপাতালে লাইন দিতে শুরু করেছিলেন অনেকে। এক সময়ে সেই লাইন হাসপাতালের মূল গেট পেরিয়ে হাওড়া আদালতের দিকে চলে যায়। প্রতিষেধক পাওয়ার আশায় কয়েকশো মানুষ এ দিন ভিড় জমান হাওড়া পুরসভার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র-সহ হাওড়া জেলা হাসপাতালে। ফলে দূরত্ব-বিধি না মেনে এ ভাবে লাইনে দাঁড়ানোয় সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের চিকিৎসকেরা।
এ দিন হাওড়া জেলা হাসপাতালে আসা সোনালি ভট্টাচার্য নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘প্রতিষেধক নিতে ভোর সাড়ে ৪টে থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছি। টোটো ভাড়া করে মা-বাবাকে সঙ্গে নিয়ে এসেছি। তা সত্ত্বেও প্রতিষেধক পাবে কি না ঠিক নেই।’’ ভোর ৪টে থেকে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়ানো, কদমতলার সমন্বয় রায় বলেন, ‘‘ভোর ৪টের সময়ে হেঁটে প্রতিষেধক নিতে এসেছি। এতক্ষণ চড়া রোদে দাঁড়ানোর পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, ২০০ জনের বেশি লোককে প্রতিষেধক দেওয়া যাবে না।’’
এ দিন কোভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ় নিতেও একই সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন অনেকে। তাঁদেরই এক জন, শিবপুর সন্ধ্যাবাজারের বিমল সাঁতরা বলছেন, ‘‘যাঁদের দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়ার কথা, তাঁদের ফোন নম্বর তো হাওড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে ছিল। তা হলে যে ২০০ জনকে প্রতিষেধক দেবে, শুধু তাঁদেরই ফোন করে ডেকে নিতে পারত! তা হলেই এত ভিড় হত না। সামাজিক দূরত্বও বজায় রাখা যেত।’’
এ দিন হাওড়া জেলা হাসপাতালে প্রতিষেধক নিতে পাঁচশো থেকে সাতশো জনের লাইন পড়ে। একই অবস্থা হয় হাওড়া পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতেও। সেখানেও দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে প্রতিষেধক পাননি অনেকে। পর্যাপ্ত প্রতিষেধক না আসার কারণেই এই সমস্যা বলে স্বীকার করছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘সোমবার হাওড়ায় বিভিন্ন কেন্দ্রে ৪৫ বছর ও তার চেয়ে বেশি বয়সিদের প্রথম ডোজ় দেওয়া ফের শুরু হয়েছে। এ দিন জেলায় প্রায় ৮ হাজার ভায়াল কোভিশিল্ড এসেছিল। কিন্তু চাহিদার তুলনায় তা খুবই সামান্য।’’
ওই স্বাস্থ্যকর্তা জানান, হাওড়া জেলা হাসপাতাল চত্বরে সে ভাবে কোনও ছাউনি নেই, জায়গাও অপ্রতুল। ফলে লাইনে দূরত্ব-বিধি বজায় রাখা যাচ্ছে না। তাই প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেখানে ছাউনি দেওয়া জায়গা তৈরির চেষ্টা হচ্ছে, যেখানে মানুষ প্রতিষেধকের জন্য অপেক্ষা করতে পারবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy