(বাঁ দিকে) ভাইরাল হওয়া সেই ‘বিতর্কিত চিঠি’। (ডান দিকে) রিষড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান। —নিজস্ব চিত্র।
দলীয় প্যাড ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়েছেন হুগলির রিষড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদ হাসান। তাঁর সই করা পুরনো চিঠি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর শোরগোল এলাকায়। চিঠি প্রসঙ্গে জাহিদের মন্তব্য, ‘‘এই কাজ বিরোধীরা করেনি। দলের (তৃণমূলের) লোকেরই কাজ।’’ অন্য দিকে, রিষড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান যখন দলীয় গোষ্ঠীকোন্দলের দিকে আঙুল তুলছেন, তখন বিজেপির খোঁচা, ‘‘এ ভাবেই তো তৃণমূল তোলাবাজি করে।’’
গত শুক্রবার হুগলির এক কাউন্সিলরের সই করা বৈদ্যবাটি পুরসভার প্যাডের ছবি প্রকাশ্যে আসে। অভিযোগ ওঠে বাড়ি বাড়ি কার্তিক ফেলে টাকা চাইছেন কাউন্সিলর এবং তাঁর সহযোগীরা। এ নিয়ে বিতর্কে ওই পুরসভার চেয়ারম্যান জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেন ওই কাউন্সিলর এ কাজ করেছেন, জবাব চাওয়া হবে। এ বার বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া রিষড়া শহর তৃণমূলের প্যাডে লেখা রিষড়ার কাপড় কারখানার ভাইস প্রেসিডেন্টকে দেওয়া চিঠি নিয়ে। চিঠিতে ইদ উপলক্ষে জন্য ১০ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে। জানানো হয়, এলাকার দুঃস্থ মানুষের জন্য পোশাক কিনতে ওই আর্থিক সাহায্যের প্রয়োজন। চিঠির শেষাংশে রিষড়ার ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদের সই এবং স্টাম্প দেওয়া রয়েছে। এ নিয়ে জাহিদের দাবি, তিনি দলের কোনও প্যাড ব্যবহার করে ‘ডোনেশন’ তোলেননি। জাহিদ বলেন, ‘‘আমার নিজের যা ক্ষমতা, সেটা দিয়েই কাজ করি। লোকসভা ভোটে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে তাঁর ওয়ার্ডে হারানোর চেষ্টা করেছেন এক কাউন্সিলর। তিনি বিজেপি এবং সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন। ভোটের সময় ওই ওয়ার্ডের দায়িত্ব পেয়েছিলাম আমি। সেখান থেকে লিডও দিয়েছি। কিন্তু দলের লোক বিজেপির সঙ্গে মিশে রিষড়া অঞ্চলে তৃণমূলের ক্ষতি করছে।’’ তাঁর দাবি, যে ছবি ভাইরাল হয়েছে, সেটি ভুয়ো। তৃণমূলের এক কাউন্সিলরই এই কাজ করেছেন বলে জাহিদের দাবি।
উল্লেখ্য, আরামবাগের প্রাক্তন সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের স্বামী সাকির আলি রিষড়ার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর। তাঁর সঙ্গে জাহিদের ‘মধুর সম্পর্ক’ সর্বজনবিদিত। মনে করা হচ্ছে, নাম না করে জাহিদ সাকিরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত করছেন। সাকির নিজে বলছেন, ওই চিঠি সত্যি না ভুয়ো, সেটা তদন্তসাপেক্ষ। তিনি বলেন, ‘‘কে কোথায় কোন কারখানায় প্যাড পাঠিয়েছেন, আমি জানি না।এটা দলের তদন্তের বিষয়। দল যদি সঠিক তদন্ত করে তবে দলীয় প্যাড কেন ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা নিশ্চয়ই ধরা পড়বে। আমার এ বিষয়ে কিছু বলার নেই।’’
অন্য দিকে, বিজেপির রাজ্য অফিস সম্পাদক প্রণয় রায় বলেন, ‘‘যে চিঠি ভাইরাল হয়েছে সেটা আমার নজরেও পড়েছে। তৃণমূল সরকারি পদ, সরকারি স্টাম্প ব্যবহার করে তোলাবাজি করছে। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান যদি লেটারহেডে লিখে স্ট্যাম্প দিয়ে কারখানার কাছে টাকা চান, তখন সেটা মেনে নেওয়া ছাড়া মালিকপক্ষের কাছে কোনও বিকল্প থাকে না। এটাই তৃণমূলের সরকারি তোলাবাজি।’’ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব বলছেন, কোথাও একটা ভুল হচ্ছে। তৃণমূলের শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘জাহিদ হাসান খান ৩০ বছরের কাউন্সিলর। তাঁকে এবং দলকে বদনাম করার জন্য বিরোধীরা চক্রান্ত করছে। বিজেপি ভোটে জিততে পারছে না। তাই যে কোনও ভাবে তৃণমূলকে কালিমালিপ্ত করতে চাইছে। তবে সেটা সম্ভব হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy