ধৃত তিন দুষ্কৃতী। ছবি: দীপঙ্কর দে ও সঞ্জীব ঘোষ
ভরদুপুরে বন্দুক উঁচিয়ে সোনার দোকান থেকে গয়না লুট করে পালিয়েছিল ছয় দুষ্কৃতী। বৃহস্পতিবার তিনটে নাগাদ ডানকুনির টিএন মুখার্জি রোডের সেই ডাকাতির পাঁচ ঘণ্টার মধ্যেই গোঘাট থেকে চার দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলল পুলিশ। তাদের থেকে মিলেছে প্রচুর সোনার গয়না।
হুগলির পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) আমনদীপ বলেন, ‘‘আগ্নেয়াস্ত্র ও সোনার গয়না সমেত চার দুষ্কৃতী ধরা পড়েছে। দোকানের সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে ও ধৃতদের জেরা করে বাকিদের সন্ধান চলছে।’’
চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার অমিত পি জাগালভি বলেন, ‘‘আসানসোল পর্যন্ত নাকা চলছিল। সব থানায় দুষ্কৃতীদের ছবিও পাঠানো হয়েছিল। সেই ছবি দেখেই গোঘাট থানার পুলিশ অভিযুক্তদের চিহ্নিত করেছে। অধিকাংশ সোনাই উদ্ধার হয়েছে।’’
ডানকুনির টিএন মুখার্জি রোডের যেখানে এই সোনার দোকান রয়েছে, সেটা জনবহুল এলাকা। তবে এ দিন দুপুরে দোকানে খদ্দের কম ছিল। অপেক্ষাকৃত ফাঁকা ছিল রাস্তাও। ওই সোনার দোকানের কর্মীরা জানিয়েছেন, দুপুর তিনটে নাগাদ দু’টো মোটরবাইক চেপে ছয় যুবক দোকানে আসে। তবে প্রথমে পাঁচজন ভিতরে ঢুকেছিল। একজন বাইরে অপেক্ষা করছিল। ওই পাঁচজনকে গয়না দেখাতে শুরু করেছিলেন কর্মীরা। সেই সময়ই বাইকে থাকা ওই যুবক পকেট থেকে নিরাপত্তারক্ষীর দিকে বন্দুক তাক করে দোকানে ঢুকে আসে। স্বমূর্তি ধরে বাকি পাঁচ জনও।
দোকানের কর্মী ও অন্য খদ্দেরদের একটি ঘরের সামনে মাথা নীচু করে বসিয়ে রাখা হয়। প্রত্যেকের থেকে কেড়ে নেওয়া হয় মোবাইল ফোন। সেই সময় চালক নিয়ে দোকানে ঢোকেন মালিক সঞ্জীবকুমার সেন। দু’জনকেই মারধর করে মাথা নীচু করে বসিয়ে রেখে চলে দেদার লুট। তারপর সব গয়না ব্যাগে ঢুকিয়ে বন্দুক তাক করে দোকান ছেড়ে পালায় তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, রাস্তার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, দোকান থেকে বেরিয়ে তারা টিএন মুখার্জি রোড ধরে ডানকুনি রেল ক্রসিংয়ের দিকে চলে যায়। এ দিকে খবর পেয়ে উত্তরপাড়া, রিষড়া, শ্রীরামপুর ও ডানকুনির সমস্ত রাস্তা আটকে নাকা শুরু করে পুলিশ। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ সিঙ্গুরের ছুটি পার্কের কাছে মেলে দুষ্কৃতীদের একটি মোটরবাইক। গুড়াপের কাছে দুই সন্দেহভাজন বাইকআরোহীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদও চলছিল।
ইতিমধ্যে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ খবর আসে আরামবাগের খাটুল-বাঁকুড়া সীমানা থেকে প্রচুর সোনার গয়না-সমেত চার জনকে ধরেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা। ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ ধৃতদের দেখেই নিশ্চিত হয়, এদেরই খোঁজ চলছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাঁকুড়ার জয়পুরগামী একটি বাস থেকে ওই চারজন নেমেই পালানোর চেষ্টা করছিল। তাঁদের সন্দেহ হওয়ায় দৌড়ে ধরে ফেলেন তিন জনকে। আর পাশের একটি ক্লাবের ছেলেরা আর একজনকে দৌড়ে ধরে। এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘ওরা বাসেও কোনও ঝামেলা করেছিল। তাই পালাচ্ছিল। ওরা কিছুতেই ব্যাগ খুলতেই চাইছিল না। ব্যাগ খুলতেই অত সোনার গয়না দেখে বুঝতে পারি, এরাই ওই সোনার দোকানে ডাকাতি করেছে।’’
তবে এমন ডাকাতির পর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ ক্রেতারা। এ দিন ওই দোকানে এসেছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের অন্তরা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘প্রাণ হাতে করে বাড়ি ফিরেছি। দোকানে কিছু কিনতে যেতেই এখন আতঙ্ক হচ্ছে। আজ যদি দুষ্কৃতীগুলো গুলি চালাত, তা হলে কী হত!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy