যুযুধান: সিপিএমের এজেন্টকে মারধর করে নর্দমায় ফেলে দেওয়ার চেষ্টা তৃণমূল সমর্থকদের। মঙ্গলবার, বালির জগাছায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
মারের বদলে মার! ভোটের ফলাফল যা-ই হোক না কেন, মঙ্গলবার ভোট গণনার দিনেও হাওড়ায় শাসকদলের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দিল সিপিএম-সহ বিরোধী দলগুলি। বিরোধী-পক্ষে ভোট দেওয়া ব্যালট ছিঁড়ে ফেলে দেওয়া, গণনা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী-সহ এজেন্টদের মেরে বার করে দেওয়া, গণনা কেন্দ্রের বাইরে ইট দিয়ে থেঁতলে মাথা ফাটানো— সব অভিযোগই উঠল হাওড়ার বালি-জগাছায়।
এ দিন সকাল ৮টায় গণনা শুরুর কথা থাকলেও হাওড়ার বালি-জগাছা ব্লকের দুর্গাপুর পল্লিমঙ্গল বিদ্যামন্দির এবং ডোমজুড়ের আজাদ হিন্দ কলেজ কেন্দ্রে গণনা শুরু হয় অনেক দেরিতে। এ দিন ওই দুই জায়গায় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল প্রশাসন। তার পরেও সকাল ১০টায় দুর্গাপুর পল্লিমঙ্গল বিদ্যালয়ের গণনা কেন্দ্রের ভিতরে গোলমাল শুরু হয়। দুর্গাপুর-অভয়নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপির দুই মহিলা প্রার্থী পুতুল গায়েন ও অপর্ণা মণ্ডলকে মারধর করে জামাকাপড় ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগকে ঘিরে উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে। এর পরেই বিজেপি প্রার্থীরা একে একে গণনা কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে এসে অভিযোগ করেন যে, তাঁদের এজেন্টদের মেরে বার করে দিচ্ছে তৃণমূল। একই অভিযোগ করেন সিপিএমের এজেন্টরাও। প্রতিবাদ করায় পুলিশের সামনেই সাঁপুইপাড়া বসুকাঠি গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রার্থী সায়ন সেনকে রাস্তায় ফেলে মারধর করেন তৃণমূলের কিছু সমর্থক। এর পরেই সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষ শুরু হয়। তাতে এক তৃণমূলকর্মীর মাথা ফাটে। উত্তেজিত সিপিএম সমর্থকেরা ওই গণনা কেন্দ্রের দরজা ও মেটাল ডিটেক্টরের গেট টেনে ভাঙচুর করে নর্দমায় ফেলে দেন।
এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই তৃণমূলের সাঁপুইপাড়া বসুকাঠি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থী তাপস দাসের মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট কমল দাসকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ ওঠে সিপিএমের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, নর্দমায় ফেলে মাথায় ইট দিয়ে মারা হয় তাঁকে। রক্তাক্ত অবস্থায় কমলকে স্থানীয় চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
বেলা ১১টার সময়ে ওই গণনা কেন্দ্রের বাইরে পাঁচিলের পাশে একটি নালার মধ্যে কিছু ব্যালট পেপার উদ্ধারকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা চরমে ওঠে। দেখা যায়, ওই ব্যালট পেপারগুলিতে ভোট পেয়েছেন সিপিএম প্রার্থী। এর পরেই সিপিএম সমর্থকেরা পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। দু’পক্ষের ধাক্কাধাক্কিও শুরু হয়ে যায়। ডিসি (উত্তর) অনুপম সিংহ-সহ হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ কর্তারা কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে সিপিএম-তৃণমূল সমর্থকদের সরিয়ে গার্ডরেল বসিয়ে দেন।
এর কিছু পরে গণনা কেন্দ্রে উপস্থিত এসএফআই নেত্রী দীপ্সিতা ধর বলেন, ‘‘নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই এই কেন্দ্র থেকে সব এজেন্টদের তুলে নিয়েছি। ব্যালট পেপার রাস্তায় ফেলে দেওয়ার বিচার চাইতে প্রয়োজনে আদালতে যাব।’’ প্রতিবাদে নিশ্চিন্দা থানার সামনে টোল-ফ্রি রাস্তাও অবরোধ করে সিপিএম। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে অবরোধ তুলে দেয়।
এর পরে দুপুর আড়াইটে নাগাদ ওই গণনা কেন্দ্রে গিয়ে তৃণমূলের হাওড়া জেলা সদর সভাপতি কল্যাণ ঘোষ বলেন, ‘‘হেরে যাচ্ছে বুঝেই সিপিএম আমাদের কর্মীকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়। নিজেরাই রাস্তায় ব্যালট পেপার ফেলে নাটক করছে। ও সব করে লাভ নেই, মানুষ রায় দিয়ে দিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy