বিক্ষোভ অভিভাবকদের। —নিজস্ব চিত্র।
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শিক্ষককে বিদ্যালয়ে ঢুকতে বাধা দিলেন অভিভাবকরা। সোমবার শ্যামপুরের শ্রীকোল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা। অভিভাবকদের অভিযোগ, মিড ডে মিলের অনেক টাকা আত্মসাৎ করেছেন শিক্ষক পলাশতনু সামন্ত। তিনি হিসেব না বোঝালে তাঁকে বিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হবে না। ওই শিক্ষক অন্য একটি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পেয়েছেন। সেখানে যাওয়ার জন্য এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের থেকে তাঁর রিলিজ় অর্ডার পাওয়ার কথা। সেটাও তাঁকে নিতে দেওয়া হয়নি। অভিভাবকদের অভিযোগ অবশ্য মানেননি পলাশতনু।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমীরকুমার নাগ বলেন, ‘‘অভিভাবকদের বাধায় রিলিজ় অর্ডার দিতে পারিনি ওই শিক্ষককে। ওই শিক্ষক যেমন যেতে পারছেন না, তেমনই আমাদের এখানেও কাজে অসুবিধা হচ্ছে।’’
শ্যামপুর-১ অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক নীলাঞ্জনা দীর্ঘাঙ্গি বলেন, ‘‘পলাশবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত হবে। তারপর তাঁকে রিলিজ় অর্ডার দেওয়া হবে।’’ একই সুর হাওড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংসদের সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষেরও। তিনি বলেন, ‘‘ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটা গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। সেটার তদন্ত হবে। তারপর তিনি অন্য বিদ্যালয়ে যোগ দিতে পারবেন।’’
শ্রীকোল প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছিল ১৯১৮ সালে। সেখানে এখন পড়ুয়া সংখ্যা ৩০১ জন। শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যা ৯ জন। ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবসর নেওয়ার পর দায়িত্বে ছিলেন পলাশতনু।লকডাউনের জন্য সেই সময় বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন বন্ধ ছিল। মিলের সামগ্রী অভিভাবকদের হাতে দেওয়া হত। ২০২২ সালে ফের পড়ুয়াদের মিল খাওয়ানো শুরু হয়।
স্থানীয় গ্রামবাসী অশোককুমার মাইতি ও নির্মল বেরার অভিযোগ, ‘‘ভুল পড়ুয়া সংখ্যা দেখিয়ে মিড ডে মিলে গরমিল করতেন ওই শিক্ষক। তা জানাজানি হতে অভিযোগ মেনে নেন পলাশতনু। তখনই ঠিক হয়েছিল, যে টাকা নিয়েছেন সে টাকা ফেরত দেবেন। তা উনি করেননি।’’
পুজোর ছুটির পর সোমবার বিদ্যালয় খুলতেই রিলিজ় অর্ডার নিতে আসেন পলাশতনু। এই খবর জানাজানি হতেই তাঁকে আটকান অভিভাবকরা। প্রধান শিক্ষককে বাধা দেওয়া হয় ওই প্রয়োজনীয় কাগজ দিতে। বিক্ষোভের মুখে পড়ে পলাশতনু ফিরে যান। তাঁর দাবি, ‘‘আমি বিজেপি করি। তাই তৃণমূলের লোকেরা টাকা নেওয়ার জন্য এই বদনাম দিচ্ছে।’’
স্থানীয় বিজেপি নেতা কৌশিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই শিক্ষক এক সময় বিজেপি করতেন। তবে এখন তাঁর সঙ্গে দলের কোনও যোগ নেই।’’ আর রাজনীতির প্রসঙ্গ উড়িয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা অনুপম রায় বলেন, ‘‘গ্রামের বাসিন্দারা মিথ্যা বলছেন না। ওই শিক্ষক এখন নিজেকে বাঁচাতে রাজনীতি জুড়ছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy