পাঁচলা নুরপাড়ায় রাস্তায় ইট বিছাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। —নিজস্ব চিত্র।
বেহাল রাস্তা সংস্কারের দাবিতে বছরের পর বছর প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। কিন্তু সেই দাবিতে কর্ণপাত করেনি প্রশাসন। উপায় না দেখে নিজেরাই রাস্তার সংস্কারে নেমে পড়েছেন তাঁরা। সোমবার থেকে শুরু হয়েছে পাঁচলার নুরপাড়ার ওই পথে ইট পাতার কাজ। বাসিন্দারা জানান, সব টাকা এক লপ্তে জোগাড় না হওয়ায় দফায় দফায় ইট পাতবেন। বর্ষার আগেই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে তাঁদের দাবি।
রাস্তাটির নাম ‘নলডাঙার বাঁধ’। প্রায় সাত ফুট চওড়া, এক কিলোমিটার রাস্তাটিতে প্রশাসনের উদ্যোগে মাটি ফেলে উঁচু করা হয়েছিল বছর কুড়ি আগে। বাসিন্দাদের দাবি মেনে কিছুটা পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে ঢালাই করা হয় বছর তিনেক আগে। এলাকায় প্রায় ৩০০ পরিবারের বাস। তাঁদের অভিযোগ, বর্ষাকালে ওই পথে যেতে নাকাল হতে হয়। বুকসমান জলে ডুবে যায় পথ। সে সময়ে পড়ুয়াদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ। রোগীদের কাঁধে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়।
রাস্তার এই অংশ সংস্কার করার জন্য বাসিন্দারা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে চিঠি লেখেন। এমনকী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতেও ফোন করে দাবি জানান। কাজ না হওয়ায় সিদ্ধান্ত নেন, নিজেরাই চাঁদা তুলে রাস্তা বানাবেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তাঁরা কাজে নেমে পড়েন। এই রাস্তার পাশ দিতে বয়ে গিয়েছে পুঁটিখালির খাল। সেখান থেকে যন্ত্রের সাহায্যে মাটি তুলে রাস্তা উঁচু করা হয়। খরচ পড়ে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা। সম্প্রতি তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এই রাস্তায় এ বার ইট পাতা হবে। কাজ চলছে চাঁদা তুলেই।
বাসিন্দারা জানালেন, তাঁরা নিজেরা যেমন চাঁদা দিয়েছেন, অন্যান্য এলাকা থেকেও চাঁদা এসেছে। ইট পাতার খরচ ধরা হয়েছে সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা। ফকির সিপাই নামে এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘আমাদের এলাকার বাসিন্দারা অধিকাংশই গরিব। তবুও নিজেদের স্বার্থে যে যা পারছেন দিচ্ছেন। অন্য এলাকার বাসিন্দারাও চাঁদা দিচ্ছেন।" প্রায় ২ হাজার ফুট রাস্তা এ ভাবে সংস্কার করা হচ্ছে। এই কাজে মূল উদ্যোগী স্থানীয় বাসিন্দা জাকির মল্লিক। তিনি বলেন, "সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে রাস্তাশ্রী-পথশ্রী প্রকল্পে কত রাস্তা হল। অথচ, আমাদের রাস্তা সংস্কারের কথা কেউ ভাবল না!’’
এলাকাটি ফরওয়ার্ড ব্লক অধ্যুষিত। দলের নেতা ফরিদ মোল্লার অভিযোগ, ‘‘এই রাস্তা না সংস্কার হওয়ার পিছনে রাজনীতি আছে। এলাকাটি ফরওয়ার্ড ব্লক প্রভাবিত হওয়ার জন্যই কাজ হয়নি। গ্রামবাসীরা নিজেরা উদ্যোগী হয়ে প্রশাসনের এই বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।’’
পাঁচলা পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মোমিন মল্লিক অবশ্য বলেন, ‘‘রাস্তার কিছুটা এইচআইটি করেছে। বাকি অংশ জলে ডুবে থাকায় তারা কাজ শেষ না করে চলে যায়। গ্রামবাসীরা মাটি ফেলেছেন। বাকি কাজ করার পরিকল্পনা আমাদের আছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy