Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Uttarkashi Tunnel Rescue Operation

উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে মাকে ফোন হুগলির সৌভিকের: কারও কিচ্ছু হয়নি, ভোলে বাবার জয়!

প্রথম এক জন শ্রমিক মাইক্রো টানেল থেকে বেরিয়ে আসতেই চোখ-মুখ পাল্টে যায় সৌভিকের পরিবার-পরিজনদের। সৌভিকের মায়ের কথায়, ‘‘এতগুলো দিন দু’চোখের পাতা এক করতে পারিনি। আজ আমি নিশ্চিন্ত হলাম।’’

সৌভিকের মা লক্ষ্মী পাখিড়া।

সৌভিকের মা লক্ষ্মী পাখিড়া। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
পুরশুড়া শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৩ ২৩:২৩
Share: Save:

দুশ্চিন্তার কালো মেঘ কেটে গিয়েছে। হাসছেন। আবারও হাসছেন লক্ষ্মী পাখিরা। ছেলের সঙ্গে গত ১৭ দিনের মধ্যে বারকয়েক কথা হয়েছে। কিন্তু তখন উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে ছিলেন। মঙ্গলবার ছেলে সৌভিক পাখিরা ভিডিয়ো কল এবং পরে ফোন করতেই হাসছেন লক্ষ্মী। ছেলে তাঁকে জানিয়েছে, ৪১ জন শ্রমিকের সকলেই ভাল আছেন। সবাই সুস্থ আছেন। কারও কিচ্ছু হয়নি। এ সব শুনে আশ্বস্ত হলেন মা। তাঁকে ঘিরে তখন প্রতিবেশীরা। সবাই আজ খুশি। এখন ছেলের ফেরার অপেক্ষায় মা।

আজ ফিরবে, কাল ফিরবে করে অনেকগুলো দিন পেরিয়েছে। কিন্তু উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গে আটকে থাকা হুগলির দুই ছেলের উদ্ধারের খবর মেলেনি। ছেলেদের ঘরে ফেরা নিয়ে আশঙ্কা আর উদ্বেগে দিন কাটছিল। তবে মঙ্গলবার হুগলির সৌভিক এবং জয়দেব প্রামাণিকের পরিবারে খুশির হাওয়া। উত্তরকাশী জেলার ব্রহ্মতাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কের উপর সিল্কিয়ারা এবং ডন্ডালহগাঁওের মধ্যে নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গে কাজ করতে গিয়েছিলেন হুগলির পুরশুড়ার বাসিন্দা সৌভিক এবং জয়দেব। গত ১২ নভেম্বর হঠাৎই সেই সুড়ঙ্গের একাংশে ধস নামে। সাড়ে আট মিটার উঁচু এবং প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গের ভিতরে আটকা পড়েন সৌভিক, জয়দেব-সহ মোট ৪১ জন শ্রমিক।

পুরশুড়ার দুই বাড়িতেই ভিড় উপচে পড়েছে। সৌভিকের মা ছেলের সঙ্গে যখন কথা বলছেন, তখনও তাঁকে ঘিরে আত্মীয় এবং প্রতিবেশীরা। ছেলের সঙ্গে বেশ কিছু ক্ষণ কথা হয় তাঁর। পরে লক্ষ্মী বলেন, ‘‘নিজের সব শক্তি আমি ওকে দিয়েছিলাম। ফোনে ছেলে হাসছে। কথা বলছে। বলছে, ‘মা আমার কিচ্ছু হয়নি। কারও কিচ্ছু হয়নি। সবাই সবাই যেমন ছিলাম তেমন আছি।’’ আবার হেসে ফেলেন লক্ষ্মী। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলে ফোন করে বলছে, ‘আমি আগের মতো আছি মা। জয়! ভোলে বাবার জয়!’’

লক্ষ্মী জানান, আচার্য জগদীশচন্দ্র কলেজ থেকে পড়াশোনা করে উত্তরাখণ্ডের ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থায় চাকরি করেতে গিয়েছিলেন বড় ছেলে। ছোট ছেলে ঋত্বিক ঝাড়খণ্ডে কাজ করেন। ১০ মাস আগে উত্তরাখণ্ডে কাজে যোগ দেন সৌভিক। দুর্গাপুজোর সময় বাড়ি এসেছিলেন। লক্ষ্মীপুজোর পর আবার উত্তরাখণ্ডে ফিরে যান। তার কয়েক দিনের মাথায় উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গে ছেলের আটকে পড়ার খবর পান লক্ষ্মী। তার পর থেকেই দুশ্চিন্তায় দু’চোখের পাতা এক করতে পারেননি। অবশেষে মঙ্গলবার এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। রাত তখন প্রায় ৮টা। প্রথম এক জন শ্রমিক মাইক্রো টানেল থেকে বেরিয়ে আসতেই চোখ-মুখ পাল্টে যায় সৌভিকের পরিবার-পরিজনদের। সৌভিকের মায়ের কথায়, ‘‘এত গুলো দিন দু’চোখের পাতা এক করতে পারিনি। ছেলেটা ওই অন্ধকূপে আটকে পড়ে ছিল। আজ সন্ধ্যার পর যত সময় পেরিয়েছে, ততই ভেবেছি, কখন বেরিয়ে আসবে ও। ছেলের সঙ্গে এখনও কথা বলতে পারিনি। শুনেছি, ওদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy