এর আগে, তিনি ‘মুঙ্গেরের লাঠি’ হাতে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছিলেন। এ বার ব্যান্ডেলে রেলের জমি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা হলে, রেল রক্ষী বাহিনীকে (আরপিএফ) দা-বঁটি-কুড়ুল নিয়ে তাড়া করার ‘নিদান’ দিলেন চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার। কটাক্ষ করেছে বিজেপি।
রেলের দাবি, ব্যান্ডেলের আমবাগান, সাহেবপাড়া প্রভৃতি এলাকায় তাদের ফাঁকা আবাসনে বহু বছর ধরে ‘জবরদখলকারীরা’ বাস করছেন। গত কয়েক বছরে একাধিক বার উঠে যাওয়ার নোটিস দেওয়া হলেও, সরেননি। গত শনিবার ফের নোটিস দেওয়া হয়। তাতে লেখা হয়েছে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরে না গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ‘আদেশানুসারে পূর্ব রেল’ লেখা থাকলেও, নোটিসে কারও সই বা স্ট্যাম্প নেই। তবে রেলের আধিকারিকেরা জানান, ওই নোটিস রেলের তরফেই দেওয়া হয়েছে।
বছর খানেক আগে রেলের দেওয়া একই নোটিস দেখে ‘মুঙ্গেরের লাঠি’ হাতে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছিলেন অসিত। সোমবার সকালে আমবাগান এলাকায় সভা করেন বিধায়ক। তৃণমূলকর্মী এবং উচ্ছেদের নোটিস পাওয়া মানুষজন সেখানে ছিলেন। সভা শেষে, মিছিল করে রেলের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের (ওয়ার্কস) কার্যালয়ে যান আন্দোলনকারীরা। ওই আধিকারিক না থাকায় প্রথমে স্মারকলিপি নিতে চাননি কার্যালয়ের কর্মীরা। পরে নেন। গোলমাল এড়াতে আরপিএফ কর্মীরা সেখানে ছিলেন। সেখানে দাঁড়িয়েই মাইক্রোফোন হাতে বিধায়ককে বলতে শোনা যায়, ‘‘আরপিএফ উচ্ছেদ করতে এলে দা-বঁটি-কুডু়ল-ঝাঁটা নিয়ে তাড়া করুন। আমরা আছি আপনাদের সঙ্গে।’’ যোগ করেন, ‘‘এটা রেলের অফিস না চিড়িয়াখানা! রেল এখানে বিহারিদের নিয়োগ করেছে। বাংলা বোঝে না।’’
ব্যান্ডেল আরপিএফের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক শুভম ওয়াস্তি জানান, পরিত্যক্ত আবাসনগুলি ভাঙার জন্য রেল নিলাম ডেকেছে। ঠিকাদার সংস্থা ভাঙতে আসবে। তাই নোটিস দেওয়া হয়েছে। বিধায়কের মন্তব্য নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘চাকরি জীবনে ও সব আমাদের শুনতে হয়।’’ পূর্ব রেলের ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক দীপ্তিময় দত্ত বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে মন্তব্য করব।’’
অসিতের ‘নিদান’ শুনে এ দিন বাঁশবেড়িয়ায় সরস্বতী পুজোর উদ্বোধনে এসে বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেন, ‘‘ওঁরা এ-ছাড়া আর কী পারবেন! উচ্ছেদের নোটিস রেলের সিদ্ধান্তে পড়েছে। পুনর্বাসনের বিষয়েও ভাবা হচ্ছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)