বছর সাতেক আগে আরামবাগের পল্লিশ্রীতে দ্বারকেশ্বর নদের উপর রামকৃষ্ণ সেতুকে ‘বিপজ্জনক’ বলে চিহ্নিত করেছিল পূর্ত দফতর। সে সময়েই বিকল্প সেতু তৈরির প্রস্তাবও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠায় জেলা পূর্ত দফতর। কিন্তু ওই দফতরের পক্ষ থেকে ভগ্নদশা সেতুটির বার বার স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পরিদর্শন ছাড়া বিকল্পের কাজ এগোয়নি বলে অভিযোগ। গত ফেব্রুয়ারি মাসে রাজ্য পূর্ত দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তারা একদফা পরিদর্শনে এসেছিলেন। শুক্রবার রাজ্য পূর্ত দফতরের সচিব অন্তরা আচার্য এসে বেহাল সেতু পরিদর্শন করে সংস্কারের আশ্বাস দিয়ে গেলেন। কিন্তু বিকল্প সেতুর নিশ্চয়তা দিতে পারেননি তিনি।
এ দিন পূর্ত সচিবের সঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিগরি বিশেষজ্ঞেরা এবং রাজ্য পূর্ত দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার(হেড কোয়া্র্টার) অমিতকুমার বিশ্বাসও এসেছিলেন। পূর্ত সচিব বলেন, ‘‘এখানে দ্বিতীয় সেতুর ভাবনাচিন্তা আমাদের আছে। কিন্তু এ ধরনের সেতু তৈরিতে অনেক বড় আর্থিক ব্যবস্থাপনা দরকার। সেই সিদ্ধান্ত সরকার নেবে। তবে, পুরনো ক্ষতিগ্রস্ত সেতু যত তাড়াতাড়ি পুনরুদ্ধার করা যায়, সেই প্রচেষ্টা চলছে।’’
পূর্ত সচিব জানান, বর্তমান সেতুটির নষ্ট বা খয়ে যাওয়া যন্ত্রাংশ প্রতিস্থাপন-সহ সংস্কারের কাজে এখন যা পদক্ষেপ করা দরকার, কোনও গাফিলতি যাতে না হয়, সে সব দেখতেই বিশেষজ্ঞেরা এসেছেন। সেই কাজ চলাকালীন সেতু দিয়ে যান চলাচলের সমস্যা হতে পারে। তা কী ভাবে মোকাবিলা করা হবে, তা-ও দেখা হচ্ছে।
সেতুটি তৈরি হয় ১৯৬৫ সাল নাগাদ। ২০১৮ সালে সেতুটি ‘বিপজ্জনক’ বলে চিহ্নিত হয়। যে কোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে বলেও পূর্ত দফতরের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয় প্রশসানকে। তারপর থেকেই ধারাবাহিক ভাবে পরিদর্শন এবং সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে। মাঝেমধ্যে জরুরি ভিত্তিতে মেরামতিও চলছে।
ওই দফতর সূত্রের খবর, সাধারণ ভাবে এ ধরনের সেতুর আয়ু ধরা হয় বড়জোর ৪০-৫০ বছর। লম্বায় ৩২৫ মিটার এবং সাত মিটার চওড়া সেতুটি ভারবহনের যে নকশায় তৈরি হয়েছিল, সে তুলনায় যানবাহনের সংখ্যা অনেক গুণ বেড়েছে। সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন গড়ে ১২ হাজারের বেশি গাড়ি যাতায়াত করছে। তার মধ্যে ভারী পণ্যবাহী গাড়িও থাকছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)