গত ২৩ জুলাই পুজোর অনুদান ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়ার ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় নানা স্তরে প্রতিবাদ চলছে। এ বার আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে দুর্গাপুজোয় সরকারি অনুদান না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল হুগলির একটি ক্লাব। সমাজমাধ্যমে অন্যদেরও অনুদান না-নিতে আবেদন জানাচ্ছে উত্তরপাড়ার শক্তি সঙ্ঘ। সরকারি অনুদানের ৮৫ হাজার টাকা প্রত্যাখ্যান করে তাদের বার্তা, ‘মেয়ের বিচার দিন, মায়ের পুজো নিজেরা বুঝে নেব।’ তৃণমূল একে ক্লাব সদস্যদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হিসাবে দেখছে। বিজেপি ওই ক্লাবকে সাধুবাদ জানিয়েছে। তবে তারা অনুদান গ্রহণ করে এলাকার নিরাপত্তার কাজে লাগানোর পরামর্শ দিচ্ছে। আর সংশ্লিষ্ট ক্লাব কর্তৃপক্ষের দাবি, এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই। আরজি কর-কাণ্ডে যখন সারা দেশ প্রতিবাদ জানাচ্ছে, তখন তাঁরাও নিজেদের মতো করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
আরজি করে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের এক সপ্তাহ হল শুক্রবার। ইতিমধ্যে ওই মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। অন্য দিকে, চিকিৎসক সংগঠন থেকে বিভিন্ন স্তরের মানুষ বিচার চেয়ে পথে নামছেন। এই প্রেক্ষিতে উত্তরপাড়ার নামী দুর্গাপুজো কমিটি রাজ্য সরকারের কাছ থেকে এ বার অনুদান গ্রহণ করছে না বলে ঘোষণা করেছে। ক্লাবের এক সদস্যের কথায়, ‘‘এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার দোষীদের শাস্তির দাবিতে আমরা দুর্গাপুজোর অনুদানের টাকা-না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ পাশাপাশি, ওই ক্লাবের প্রচারের পর আরও বেশ কয়েকটি ক্লাব একই পথে হাঁটছে। উত্তরপাড়ার শক্তি সঙ্ঘের সদস্য জ্যোৎস্না পাত্র বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত কোনও ভাবে রাজনৈতিক নয়। কারণ, আমাদের ক্লাবের কোনও রাজনৈতিক রং নেই। এই প্রতিবাদ আরজি কর-কাণ্ডে দোষীদের দ্রুত শাস্তির দাবিতে। এই সিদ্ধান্তের ফলে এ বছর আমরা আর্থিক অসুবিধার মধ্যে পড়ব ঠিকই, কিন্তু ক্লাবের সকল সদস্য সর্বসম্মত ভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’
তৃণমূল সরকার প্রতি বছর দুর্গাপুজো কমিটিগুলোকে আর্থিক সাহায্য করে। প্রথম দিকে আর্থিক অনুদানের পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার টাকা। বাজারদরের কথা মাথায় রেখে প্রতি বছরই সেই আর্থিক অনুদানের পরিমাণ কিছুটা করে বৃদ্ধি হয়। চলতি বছর পুজো কমিটিগুলিকে ৮৫ হাজার টাকা করে সরকারি আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বছর এই আর্থিক সাহায্যের পরিমাণ ছিল ৭০ হাজার। শক্তি সঙ্ঘের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের ব্যাখ্যা, সরকার অনুদানের সিদ্ধান্ত নেয় অর্থনীতি সচল করার জন্য। উত্তরপাড়া পুরসভার শহর তৃণমূলের সভাপতি ইন্দ্রজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পথে নেমেছেন। দোষীদের দ্রুত শাস্তি দেওয়ার জন্য সরকার সব রকম ভাবে চেষ্টা করছে। সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে। এখন যদি কোনও ক্লাব এই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে, সেটা সম্পূর্ণই তাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত। কিন্তু, এই সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরে লিখিত আকারে নির্দিষ্ট জেলা প্রশাসনের কাছে জানানো দরকার।’’ আর এ নিয়ে বিজেপি নেতা পঙ্কজ রায় বলেন, ‘‘যদি কোনও ক্লাব এই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে, আমি বলব, এই অনুদান ফিরিয়ে না দিয়ে এলাকায় নারীদের নিরাপত্তা বাড়াতে সিসি ক্যামেরা লাগানো, পুলিশ কোয়ার্টারের বেহাল অবস্থা ঠিক করা— এই রকমের ভাল কাজ করা হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy