তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেলপথ নির্মাণের ক্ষেত্রে নিকাশি সমস্যা মেটানো হচ্ছে না বলে আগেই অভিযোগ তুলেছিলেন গোঘাট ২ ব্লকের পশ্চিম অমরপুর এবং পুকুরিয়া মৌজার আন্দোলকারীরা। নিকাশি সংক্রান্ত নির্মাণের কাজও তাঁরা বন্ধ করে দিয়েছিলেন সপ্তাহ তিনেক আগে। এ বার মাটি ফেলার কাজও বন্ধ করে দিলেন।
রবিবার বিকেলে আন্দোলনকারীরা বৈঠক করে কামারপুকুর কলেজের পিছনে অংশে নির্মীয়মাণ রেলপথ বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দেন। এতে পশ্চিম অমরপুর মৌজা থেকে পুকুরিয়া হয়ে বাঁকুড়ার জয়রামবাটী সীমানা পর্যন্ত প্রায় দু’কিলোমিটারের কাজ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হল। সমস্যা না মিটলে আর এই কাজ করতে দেওয়া হবে না বলেও তাঁরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট দু’টি মৌজার গ্রামবাসীদের নিয়ে গড়া ‘রেল চালাও, গ্রাম বাঁচাও’ কমিটির সম্পাদক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “আমাদের দাবি এবং রেলের প্রতিশ্রুতি মতো নিকাশি ব্যবস্থা না হওয়ায় আমরা মাঝে একটি জায়গায় ব্যারিকেড করে এতদিন অবস্থান-বিক্ষোভ করছি। মাটি ফেলার কাজ চালাতে দিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও সাড়া মেলেনি। তাই পুরো কাজটাই বন্ধ করে দিচ্ছি। রেলকে বোঝাতে চাইছি, আমাদের দাবি মেটানো কতটা গুরুত্বপূর্ণ।”
সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত পূর্ব রেলের এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘সোমবার কাজ করতে না দেওয়া হলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। তাঁরাই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন।” তিনি জানান, গ্রামবাসীদের দাবিমতো চিহ্নিত জায়গাগুলিতেই নিকাশি ব্যবস্থা হচ্ছে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক(ভারপ্রাপ্ত) দীপ্তিময় দত্ত বলেন, “আমরা তো কাজ করতে চাইছি। মানুষকে বোঝানোও হচ্ছে। উন্নয়নের কাজে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরবে বলেই আশা।”
ওই রেলপথ নির্মাণের ক্ষেত্রে ওই দুই মৌজার বিভিন্ন জায়গায় নিকাশি ব্যবস্থার জন্য বক্স কালভার্টের বদলে হিউম পাইপ বসানো হচ্ছে, এই অভিযোগে গত ৬ এপ্রিল থেকে পশ্চিম অমরপুরের এক জায়গায় বাঁশের ব্যারিকেড করে নিকাশি সংক্রান্ত নির্মাণের কাজ বন্ধ করেন আন্দোলনকারীরা। তবে, রেলপথে মাটি ফেলার কাজ চলছিল।
কমিটির দাবি, বন্যার বা বর্ষায় জল নিকাশির নিশ্চয়তা দিতে কোথায় কালভার্ট, কোথায় আন্ডারপাস তৈরি হবে, তা লিখিত ভাবে জানাতে হবে রেলকে। তাদের অভিযোগ, মৌখিক ভাবে এক রকম প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে, কাজ হচ্ছে অন্য রকম। বক্স কালভার্টের বদলে হিউম পাইপ বসানো হচ্ছে। নিজেদের দাবির স্বপক্ষে কমিটির ব্যাখ্যা, প্রস্তাবিত রেলপথের পুরো এলাকাটি সমতল থেকে অন্তত পাঁচ ফুট নিচু। উঁচু বাঁধ গড়ে রেললাইন করলে পশ্চিম অমরপুর, তাজপুর, আনুড়ের মতো প্রায় ১২টি গ্রাম থেকে বর্ষার জল বেরোতে পারবে না।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)