বন্ধ ভদ্রেশ্বরের শ্যামনগর নর্থ জুটমিল। রবিবার সকালে। ছবি: তাপস ঘোষ।
রিষড়ার ওয়েলিংটনের পরে এ বার ভদ্রেশ্বরের শ্যামনগর নর্থ। আরও একটি জুটমিল বন্ধ হল হুগলিতে।
শ্রমিকদের একাংশের অসহযোগিতার কারণ দেখিয়ে রবিবার ভদ্রেশ্বরের ওই জুটমিলে বন্ধের নোটিস ঝোলান কর্তৃপক্ষ। এর ফলে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে মিলের প্রায় সাড়ে চার হাজার শ্রমিক বিপাকে পড়লেন।
চন্দননগরের উপ-শ্রম কমিশনার মনীষা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মিল বন্ধের কথা কর্তৃপক্ষ আগাম কিছু জানাননি। তাঁদের এবং শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে মিল খোলার চেষ্টা করা হবে।’’ মিলের এক কর্তা বলেন, ‘‘শ্রমিকরা কাজ না করায় উৎপাদন ব্যাহত হয়। অনেক টাকা লোকসান হয়েছে। বাধ্য হয়েই মিল বন্ধের সিদ্ধান্ত।’’ কর্তৃপক্ষের নির্দেশ না মেনে কিছু শ্রমিক শৃঙ্খলাভঙ্গ করছেন বলেও মালিকপক্ষের অভিযোগ।
কোথায় সমস্যা?
শ্রমিকদের ক্ষোভ, কাজের পরিবেশ নষ্টের অভিযোগে শুক্রবার ‘ড্রইং’ বিভাগের আট অস্থায়ী শ্রমিককে কর্তৃপক্ষ বসিয়ে দেন। তাঁরা মিলের পুরনো শ্রমিক। তাঁদের পরিবর্তে কম টাকায় বাইরে থেকে শ্রমিক নিয়োগ করার জন্য তাঁদের বসানো হয় বলে শ্রমিকদের দাবি। এই ‘অন্যায়’ সহকর্মীরা মানতে পারেননি। ওই শ্রমিকদের কাজে বহালের দাবিতে শনিবার শ্রমিকদের বড় অংশ কাজ বন্ধ করে দেন। উৎপাদনে তার প্রভাব পড়ে।
শ্রমিকদের গরহাজিরা এবং ‘ড্রয়িং’ বিভাগের ওই আট জনের বিরুদ্ধে কাজের পরিবেশ নষ্টের কারণ দেখিয়ে রবিবার সকালে কর্তৃপক্ষ মিল বন্ধের নোটিস ঝুলিয়ে দেন। শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ে। কাজে এসে অনেকে ফিরে যান। তাঁদের অভিযোগ, আগাম কিছু না জানিয়ে কর্তৃপক্ষ একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অশান্তি এড়াতে মিল চত্বরে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
শ্রমিকদের অভিযোগ, অস্থায়ী শ্রমিকদের কাজ না দিয়ে কম পয়সায় বাইরে থেকে লোক এনে কাজের চেষ্টা অনেক দিন ধরেই চলছে।
বসে যাওয়া শ্রমিকরা রোজগার হারাচ্ছেন। তা ছাড়া, যেখানে মেশিনপিছু তিন জন শ্রমিকের প্রয়োজন, সেখানে একজনকে দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। যখন-তখন শ্রমিকদের অন্য বিভাগে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের তরফেও এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে বলা হলেও লাভ হয়নি। তাঁদের দাবি, এ ভাবে কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ কর্তৃপক্ষই নষ্ট করছেন। সমস্যার কথা জানাতে যাওয়াতেই ওই আট শ্রমিককে শুক্রবার বসানো হয়।
কর্তৃপক্ষের ‘কোপে’ পড়া শ্রমিকদের মধ্যে অমিত বেহেরা বলেন, ‘‘আমরা অশান্তিবা শৃঙ্খলাভঙ্গ করিনি। কাজে অসুবিধার কথা বলে সমাধানের আর্জি জানিয়েছিলাম। তাতে আমাদের বের করে দেওয়া হল। এ কেমন বিচার?’’
শ্রমিক অসন্তোষের জেরে ২০১৫ সালের মে মাসে এই জুটমিল বন্ধ হয়েছিল। ৪২ দিন বন্ধের পরে মিল খোলে। তারপরে, গত বছরেও একই কারণে মিল বন্ধ হয়েছিল। আলোচনার মাধ্যমে তিন দিন পরেই উৎপাদন চালু হয়।
এ বার কত দিনে সমস্যা মেটে, সেটাই প্রশ্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy