শেষ বার রঙের প্রলেপ পড়েছে গত ২০১০ সাল নাগাদ বাম পুরবোর্ডে। আরামবাগ মহকুমার একমাত্র সরকারি প্রেক্ষাগৃহ রবীন্দ্রভবনের সার্বিক ভগ্নদশা নিয়ে বিস্তর ক্ষোভ এলাকার সংস্কৃতিমনস্ক মানুষদের। প্রেক্ষাগৃহ সংস্কারে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা।
উদাসীনতার অভিযোগ অস্বীকার করে পুরপ্রধান সমীর ভান্ডারী বলেন, “রবীন্দ্রভবন সংস্কারে আমরা ইতিমধ্যে ৩ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকার প্রকল্প রচনা করে রাজ্যস্তরে পাঠিয়েছি। পুরমন্ত্রী, রাজ্য তথ্য সংস্কৃতি দফতর-সহ বিভিন্ন স্তরে তা নিয়ে আমরা তদবিরও করছি। আশা, খুব শীঘ্র আর্থিক অনুমোদন মিলবে।’’
পুরসভা এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাম আমলে গোপাল কচ চেয়ারম্যান থাকাকালীন মোট সাড়ে ৮০০ আসনের প্রেক্ষাগৃহটি তৈরি হয়েছিল। ১৯৯৯ সালের ২০ মার্চ তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু রবীন্দ্রভবনের উদ্বোধন করেছিলেন। সে সময় নিয়মিত তদারকি করা হলেও ২০১৫ সাল থেকে তৃণমূল পুরবোর্ড যথাযত তদারকি করেনি বলে অভিযোগ। এখন দেখা যাচ্ছে, মূল আসনের অনেকগুলি নেই। ভাঙা আসনগুলির পরিবর্তে সেখানে প্লাস্টিক চেয়ার বসানো হয়েছে। দেওয়ালে কাঠের কাজগুলোয় উইয়ের পাহাড়। ১২টি বাতানুকূস যন্ত্রের ৭টি অকেজো। সাউন্ড সিস্টেম, আলো বা পাখার ব্যবস্থাও ধসে পড়েছে। গ্রীষ্মে কোনও অনুষ্ঠান হলে অশান্তি হয়। বাইরের চত্বরে বেশ কিছু আলো ভাঙা এবং গাছও আগের মতো নিয়মিত ছাঁটাই হয় না।
রবীন্দ্রভবনের ভগ্নদশা নিয়ে মহকুমার ইতিহাস গবেষক ও কবি খানাকুলের দেবাশিস শেঠ বলেন, “আমার চাইছি, রবীন্দ্রভবনের প্রয়োজনীয় সংস্কার হোক। পাশাপাশি তদারকিও হোক নিয়মিত।’’
রবীন্দ্রভবন সংস্কারের দাবিতে সরব বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন “রবীন্দ্রভবন সংস্কারের দাবি
বহুবার জানানো হয়েছে। কিছুই
হয়নি। উল্টে, রবীন্দ্রভবন, পার্ক ইত্যাদি যা সম্পদ ছিল তা ধংস করা হচ্ছে।” একই সুর বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা পুরশুড়ার বিধায়ক বিমান
ঘোষের গলাতেও।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)