সংঘর্ষের পরে এলাকায় পুলিশ ও র্যাফ। শনিবার, জগাছায়। নিজস্ব চিত্র
নির্বাচনের ফলাফল বেরিয়েছে প্রায় সপ্তাহ দুয়েক। সরকার গঠন করার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, রাজনৈতিক হিংসা বরদাস্ত করা হবে না। তার পরেও হাওড়ার জগাছার ১ নম্বর মৌখালি এলাকার চাঁদখান পাড়ায় শনিবার দুপুরে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে আহত হলেন তিন জন। পুলিশ সূত্রের খবর, তরোয়ালের আঘাতে এক জনের আঙুল কাটা গিয়েছে। ব্যাপক বোমাবাজির পাশাপাশি ভাঙচুর চলেছে দোকান ও বাড়িতে। পরে বিশাল পুলিশ ও র্যাফ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল থেকে ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ভোটের দিন বুথে বসা নিয়ে এলাকায় বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে চাপা উত্তেজনা ছিলই।
তৃণমূলের অভিযোগ, দুপুরে চাঁদখান পাড়া দিয়ে যখন তৃণমূলের তিন বুথ কর্মী যাচ্ছিলেন, তখন বিজেপির ২০-২৫ জনের দল বোমা, তরোয়াল, আগ্নেয়াস্ত্র, হকি স্টিক নিয়ে হামলা চালায়। ঘটনায় মহম্মদ মুর্শেদ, ইব্বো ও চাঁদ নামে তৃণমূলের তিন কর্মী আহত হয়েছেন। ইব্বোকে তরোয়াল দিয়ে আঘাত করলে তাঁর একটি আঙুল কাটা পড়ে। তিন জনই হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
মুর্শেদ হাসপাতালে বসে বলেন, ‘‘ভোটের দিন আমরা বুথে ছিলাম। ওই দিন বিজেপির লোক গোলমালের চেষ্টা করলেও করতে দিইনি।সেই রাগটা ছিল। তাই যখন চাঁদখান পাড়া দিয়ে আসছিলাম, ওরা আক্রমণ করল। আমাদের পাড়ার লোক এসে বাধা দিলে, ওরা বাড়ি এবং দোকান ভাঙচুর করে।’’
বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, চারদিকে ইট, ভাঙা কাচের টুকরো পড়ে রয়েছে। রাস্তায় বোমা মারার দাগ স্পষ্ট। ভাঙচুর করা হয়েছে দু’টি দোকান ও এক তৃণমূলকর্মীর বাড়ি। ওই বাড়ির গৃহবধূ ইয়াসমিন সুলতানা জানান, গোলমালের সময়ে তিনি দরজায় তালা দিয়ে কোলের সন্তানকে নিয়ে পাশের পাড়ায় আত্মীয়ের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। এসে দেখেন, বাড়ি তছনছ করে দিয়েছে। ওই গৃহবধূ বলেন, ‘‘বাড়ির দরজা ভেঙে ঢুকে ভাঙচুর করে গিয়েছে। আমরা আতঙ্কে আছি। রাতে আবার কী করবে জানি না।’’
অন্য বাসিন্দা মহম্মদ জামাল বলেন, ‘‘আমাদেরই কিছু আত্মীয় ও প্রতিবেশী বিজেপি করছিল। ভোটের পর হুমকি দিয়ে বলত, ২ তারিখের পরে খেলা হবে। ভোটে হেরে যাওয়ায় দমে গিয়েছিল। ইদ মিটতেই পরিকল্পনা করে আজ হামলা করল।’’
তৃণমূলের হাওড়া জেলা সদর সভাপতি ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন,‘‘বিজেপি সারা দেশেই অশান্তি করছে। এখানে এ সব করে লাভ হবে না।
তৃণমূলকর্মীদের উপরে আক্রমণ যারা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। বিজেপির বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর হয়েছে।”
বিজেপি অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বিজেপির হাওড়া জেলা সম্পাদক বিমল প্রসাদ বলেন, ‘‘এ দিন বিজেপির কর্মীদের উপরেই হামলা চালিয়েছে তৃণমূল। বুথে বসার জন্য গত ১০ এপ্রিল হাওড়ার ভোটের দিন থেকে এই হামলা হচ্ছে। কয়েক জন স্থানীয় নেতার ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। ভয়ে বাড়ি ছাড়া অনেকে।’’
হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘গোলমালের খবর পেয়েই পুলিশ ও র্যাফ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল থেকে দু’পক্ষের ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। তাদেরও ধরা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy