Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
পুজোর মরসুমে ‘কাজের’ জন্য উদগ্রীব কারবারিরা
Illegal Fireworks Seized

৭০০ কেজি বাজি ও মশলা উদ্ধার বেগমপুরে, ধৃত দুই

এলাকায় কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, পুজোর দোরগোড়ায়, দেশের মাটিতে বিশ্বকাপের আসরের বছরে বেগমপুর মোটেই হাত গুটিয়ে বসে ছিল না।

চণ্ডীতলা থানার বেগমপুর থেকে উদ্ধার হওয়া বাজি।

চণ্ডীতলা থানার বেগমপুর থেকে উদ্ধার হওয়া বাজি। —নিজস্ব চিত্র।

প্রকাশ পাল , দীপঙ্কর দে
চণ্ডীতলা শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৩ ০৮:১৮
Share: Save:

গত রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পরেই হুগলিতে বাজি তৈরির অন্যতম কেন্দ্র বেগমপুরে হানা দিয়েছিল পুলিশ। তবে, হুগলি গ্রামীণ জেলা পুলিশের আধিকারিকেরা দাবি করেছিলেন, এখানে বাজি তৈরি বন্ধ। এক দিন পরে, মঙ্গলবার রাতে সেই বেগমপুর থেকেই ৩০০ কেজি বাজি, ৪০০ কেজি বাজির মশলা উদ্ধারের কথা জানাল পুলিশ।

উদ্ধার হওয়া বাজির মধ্যে আতশবাজির পাশাপাশি চকলেট বোমার মতো শব্দবাজিও রয়েছে। পুলিশ জানায়, ওই বাজি এবং বাজি তৈরির মশলা একটি দোকানের গুদামে মজুত করা ছিল। সেগুলি মজুতের অভিযোগে স্বপন সাধুখাঁ এবং রঞ্জন চৌধুরী নামে দু’জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। ধৃতদের বুধবার শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

এলাকায় কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, পুজোর দোরগোড়ায়, দেশের মাটিতে বিশ্বকাপের আসরের বছরে বেগমপুর মোটেই হাত গুটিয়ে বসে ছিল না। পুলিশের অভিযানে বাজি এবং বাজির মশলা উদ্ধারও সেই কথার প্রমাণ দিচ্ছে। সাধারণ মানুষের একাংশের প্রশ্ন, বাজি বানানো না হলে মশলা মজুত থাকবে কেন?

ওই এলাকায় বাজি-শ্রমিকদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন, কয়েক মাস আগে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় বাজি বিস্ফোরণে ১১ জনের মৃত্যুর পরে পুলিশ-প্রশাসনের আনাগোনায় কিছু দিন কাজ কিছুটা গুটিয়ে ছিল। পুজো-মরসুমের আগে ফের তা দানা বাঁধছিল। তার মধ্যে দত্তপুকুর-কাণ্ড আবার থামিয়ে দিয়েছে।

‘অভিজ্ঞ’ বাজি-কারবারিরা বিলক্ষণ জানেন, রাজ্যের কোথাও বাজি বিস্ফোরণ হলে কয়েক দিন পুলিশের অভিযান চলে। দত্তপুকুরের ঘটনার পরেও তা শুরু হয়েছে। এক কারবারির কথায়, ‘‘আপাতত কয়েক দিন বাজি তৈরি বন্ধ রাখতে হচ্ছে আমাদের। খবরের কাগজে লেখালেখি, টিভিতে দত্তপুকুর দেখানো বন্ধ হলেই, সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে।’’ পুলিশ অবশ্য চেনা সুরে জানিয়েছে, অভিযান চলবে।

বছরভর বিভিন্ন পারিবারিক অনুষ্ঠানে বাজি পোড়ানো কার্যত উৎসবের অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বহু জায়গায় অনুষ্ঠান বাড়িতে গভীর রাত পর্যন্ত বাজি ফাটে। আশপাশের বাসিন্দারা নাকাল হন। তাঁদের বক্তব্য, পুরসভা বা পঞ্চায়েত তৎপর হলেই এই ‘অনাচার’ বন্ধ হয়। কিন্তু শব্দের তাণ্ডব নিয়ে তারা নীরব! অভিযোগ পেলে পুলিশ অবশ্য ইদানীং কিছুটা নড়ে বসছে। কিন্তু, নিয়মভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না বললেই চলে।

আবার, পুলিশের বিস্তর প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও চকলেট বোমা-সহ সব ধরনের বাজি বাজারে হাত বাড়ালেই মেলে। কালীপুজোর সময় তার বহর মাত্রা ছাড়ায়। বিভিন্ন জায়গায় বাজির প্রদর্শনী হয়। আদালতের নির্দেশ ভেঙেই বিপুল পরিমাণ বাজির সরবরাহ এবং ব্যবহার চলতেই থাকে। ক্রিকেট বিশ্বকাপের সময় বাজির চাহিদা আরও বাড়বে বলে কারবারিরা মনে করছেন।

এ দিকে, আসন্ন উৎসবের মরসুমে নিয়ম ভেঙে বাজি পোড়ানো ও ডিজে বাজানো বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে রাজ্য প্রশাসন এবং পুলিশের সংশ্লিষ্ট নানা দফতরে সোমবার চিঠি পাঠানো হয়েছে বাজি ও ডিজে বিরোধী মঞ্চের তরফে।

অন্য বিষয়গুলি:

chanditala
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy