উদ্ধারে পুলিশ। শনিবার উলুবেড়িয়ার কুলগাছিয়া পিরতলায়। নিজস্ব চিত্র।
জাতীয় সড়ক দিয়ে দ্রুত গতিতে ছুটছে একটি গাড়ি। সেখান থেকে কিশোরীর কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে। এমন খবর পেয়ে গাড়ি আটকাল পুলিশ। মেয়েটির কান্নার কারণ জেনে পুলিশ থ। পনেরো বছরের ওই কিশোরীকে জোর করে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলেন তার মা-বাবা! পত্রপাঠ মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। শনিবার সকালে হাওড়ার রাজাপুরের কুলগাছিয়ার ঘটনা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়েটির বাড়ি সালকিয়ায়। সে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। তার বাবা বাসচালক। মা পরিচারিকার কাজ করেন। মাস ছয়েক আগে ওই দম্পতি পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের বছর চব্বিশের এক যুবকের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেয়। যদিও মেয়েটি জানিয়েছিল, এত কম বয়সে সে বিয়ে করবে না। পড়াশোনা করবে। তার আপত্তি ধোপে টেঁকেনি।
বিয়ের মাসখানেক পরে মেয়েটি বাপের বাড়িতে আসে। বাবা-মাকে জানিয়ে দেয়, আর শ্বশুরবাড়ি যাবে না। ফের স্কুলে যেতে চায় সে। বাবা-মা অবশ্য নিজেদের ইচ্ছে নাবালিকা মেয়ের উপরে জোর করেই চাপিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। অভিযোগ, মেয়েকে তাঁরা সংসার করার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। বুঝিয়ে-সুঝিয়ে কাজ না হওয়ায় এ দিন তাঁরা জোর করেই একটি গাড়িতে চাপিয়ে মেয়েকে শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসতে যাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ।
৬ নম্বর জাতীয় সড়কে চলন্ত গাড়ি থেকে মেয়েটির কান্না শুনে এক পথচারী রাজাপুর থানায় খবর দেন। পুলিশের তরফে সেই খবর ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ কুলগাছিয়ার পিরতলায় কর্তব্যরত ট্র্যাফিক পুলিশ গাড়িটি আটকায়। রাজাপুর থানা থেকেও পুলিশ পৌঁছে যায়। লোকজন জড়ো হয়ে যায়। মেয়েটি সব খুলে বলে। তার মা-বাবাও বিষয়টি স্বীকার করেন।
পুলিশকে মেয়েটি জানায়, স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে সংসারের নানা কাজকর্ম করায়। মেয়েটিকে উদ্ধার করে পুলিশ হাওড়া চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিতে (সিডব্লিউতে) পাঠায়। বাবা-মাকে আটক করা হয়।
কিশোরীর বাবার সাফাই, ‘‘মেয়ে বড় হয়েছে। তাই ভাল ছেলে পেয়ে বিয়ে দিয়েছিলাম। মেয়ে শ্বশুরবাড়ি যেতে চাইছিল না বলেই আমরা নিয়ে যাচ্ছিলাম।’’
হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, সাবালিকা না-হলে মেয়ের বিয়ে দেওয়া যে আইনত নিষিদ্ধ এবং তাতে ভবিষ্যতে মেয়েরই ক্ষতি হতে পারে, সে কথা দম্পতিকে বোঝানো হয়েছে। সিডব্লিউসি-র তত্ত্বাবধানে কিশোরীর কাউন্সেলিং করা হবে।
ওই পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘ভাগ্যিস মেয়েটি চিৎকার করে কান্নাকাটি করেছিল!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy