Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Hooch

Hooch: চোলাই বন্ধে প্রমীলা অস্ত্রে ভরসা পুলিশ-প্রশাসনের

আরামবাগের নৈসরাই, আরান্ডি দক্ষিণপাড়া, গোঘাটের মদিনায় ‘সংসার বাঁচাতে’ বিচ্ছিন্ন ভাবে চোলাই উচ্ছেদ অভিযানে সামিল হয়েছেন মহিলারাই।

আরামবাগের নৈসরাইতে মহিলাদের চোলাই উচ্ছেদ অভিযান।

আরামবাগের নৈসরাইতে মহিলাদের চোলাই উচ্ছেদ অভিযান। ফাইল চিত্র।

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২২ ০৭:৩৮
Share: Save:

দিনমজুরিতে না গেলে সংসার চলে না। তার উপর ১০০ দিনের কাজও বন্ধ। তবু চোলাই খাওয়া বন্ধ নেই স্বামী বা ছেলের। তাই গত দু’সপ্তাহের মধ্যে আরামবাগের নৈসরাই, আরান্ডি দক্ষিণপাড়া, গোঘাটের মদিনায় ‘সংসার বাঁচাতে’ বিচ্ছিন্ন ভাবে চোলাই উচ্ছেদ অভিযানে সামিল হয়েছেন মহিলারাই। কোথাও তাঁরা দল বেঁধে চোলাই কারবারীদের খেদিয়েছেন। কোথাও আবার উচ্ছেদ করা হয়েছে ভাটি। কোথাও আবার মদ্যপ স্বামী-ছেলেকে লাঠিপেটা করতেও পিছপা হননি তাঁরা। আর মহকুমা জুড়ে চোলাইয়ের বিরুদ্ধে এই নারীশক্তিকেই হাতিয়ার করতে চায় পুলিশ এবং আবগারি দফতর।

এসডিপিও (আরামবাগ) অভিষেক মণ্ডল বলেন, “কিছু জায়গায় মহিলারা অভিযান চালাচ্ছিলেন। তাঁরা যাতে আইন নিজের হাতে তুলে না নেন, সেই জন্য আমাদের দ্রুত খবর দিয়ে অভিযানে সামিল করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। সেই সংক্রান্ত সচেতনতা প্রচারও শুরু হয়েছে।” তিনি জানান, পুলিশ এবং আবগারি দফতরের যৌথ উদ্যোগে চারটি থানা এলাকার ৫০-৬০ টি করে চোলাই-গ্রাম চিহ্নিত করা হয়েছে। সে সব গ্রামগুলিতে রবিবার থেকে অভিযানও শুরু হয়েছে।

এক আবগারি কর্তার খেদ, ‘‘কর্মী সঙ্কটের কারণে নিয়মিত অভিযান চালানো সম্ভব হয় না। অধিকাংশ জায়গায় একজন ওসি তথা সাব ইন্সপেক্টর, আর একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর। এক জায়গায় অভিযান চালানোর পর সেই জায়গায় দ্বিতীয় বার যেতে কয়েক মাস সময় চলে যায়।’’ তবে মহিলাদের এমন তৎপরতায় খুশি আবগারি দফতরের অধিকারিকদের একাংশ। এক কর্তার কথায়, ‘‘আমরা দফায় দফায় মদের ভাটিখানা ভাঙচুর, মদ নষ্ট করে এলেও বিশেষ কাজের কাজ হয় না। স্থানীয় মহিলারা চোলাই ঠেকের সব সন্ধান জানেন। ফলে আমাদের অভিযানে তাঁরাই সবথেকে বড় সহায়ক।’’

পুলিশ এবং আবগারি দফতর সূত্রে খবর, গোঘাট, পুরশুড়া, আরামবাগ এবং খানাকুল থানার প্রায় ৭৫০ গ্রামে তিনশোর বেশি বেআইনি মদের রমরমা। আরামবাগের নৈসরাই গ্রামের রুকসানা বেগম, পুরশুড়া রিতার অভিযোগ, ‘‘পুলিশ মাঝে মাঝে এসে কিছু মদ তৈরির সরঞ্জাম ভাঙে। কিন্তু দু’দিন যেতে না যেতেই ফের আগের অবস্থা। আমরা মেয়েরাই আর গ্রামে চোলাইয়ের দোকান করতে দেব না।’’ আরামবাগের আরান্ডি দক্ষিণপাড়ার শিখা মালিকের খেদ, “খেটেরোজগার করতে হয় আমাদের। তার উপর এই নেশার জন্য সংসারে অশান্তি লেগেই রয়েছে। পঞ্চায়েত, পুলিশ কেউ কিছু করছে না। বাধ্য হয়ে আমরা মেয়েরা দল বেঁধে মদের কারবারীদের সরঞ্জাম ভেঙেছি, স্বামী ছেলেকেও পিটিয়েছি।’’

নিজেদের লড়াইয়ে পুলিশ-প্রশাসনকে পাশে পেয়ে খুশি তাঁরাও। শবনম বিবি নামে এক মহিলা হেসে বলেন, ‘‘পুলিশের উপর ভরসা করতে না পেরে আমরা লড়াইয়ে নেমেছিলাম। সেই মেয়েরাই এখন পুলিশের শক্তি, এটা ভেবে ভাল লাগছে। চোলাইকে গ্রামছাড়া করবই। না হলে সংসারে শান্তি আসবে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Hooch Arambagh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy