Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Aciidents on Mumbai Roads

মুম্বই রোডে দুর্ঘটনা রোধে সমন্বয়ে জোর

বৃহস্পতিবার রাতেই পুলিশ ওই সড়ক পরিদর্শন করে পথ-নিরাপত্তার ঘাটতি খুঁটিয়ে দেখে। পুলিশের পর্যবেক্ষণ, সড়কের নির্মাণ কৌশলে অনেক ঘাটতি রয়েছে।

ঘটনাস্থল ও দুর্ঘটনা গ্রস্থ গাড়ি পরীক্ষা করা চলছে।

ঘটনাস্থল ও দুর্ঘটনা গ্রস্থ গাড়ি পরীক্ষা করা চলছে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:০৪
Share: Save:

গ্রামীণ হাওড়ায় মুম্বই রোডে দুর্ঘটনার বিরাম নেই। প্রাণ যাচ্ছে সাধারণ মানুষ থেকে পুলিশকর্মীরও। দুর্ঘটনার দায় নিয়ে পুলিশ ও জাতীয় সড়ক সংস্থার মধ্যে চাপানউতোর চলে। বৃহস্পতিবার ভোরে বাগনানের বরুন্দায় পুলিশের টহলদার গাড়িতে ট্রাকের ধাক্কায় দুই পুলিশকর্মীর মৃত্যু এবং চালক-সহ তিন পুলিশকর্মীর আহত হওয়ার ঘটনায় ফের এ নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। দায়-ঠেলাঠেলি ভুলে দুর্ঘটনা রোধে এ বার সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের পথে হাঁটতে চাইছে পুলিশ।

হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার স্বাতী ভাঙালিয়া বলেন, ‘‘মুম্বই রোডে বেশ কিছু পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই পুলিশ করেছে। তাতে গত তিন বছরে দুর্ঘটনা ৫ শতাংশ এবং দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু ১০ শতাংশ হারে কমেছে। আমরা তা আরও কমাতে চাইছি। যে সব সমস্যা আছে, তার স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান করতে আমরা জাতীয় সড়ক সংস্থার সঙ্গে আলোচনায় বসব।’’ জাতীয় সড়ক সংস্থার কলকাতা প্রকল্প আধিকারিকের দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, পুলিশের তরফে প্রস্তাব এলে তাঁরা বৈঠকে বসতে রাজি।

শুক্রবার বিকেলে ঘটনাস্থল এবং দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি পরীক্ষা করেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ চিত্রাক্ষ সরকার। দু’জায়গা থেকেই কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন এসডিপিও (উলুবেড়িয়া) সিদ্ধার্থ ধাপলা এবং বাগনানের আইসি অভিজিৎ দাস। ওই দুর্ঘটনায় মৃত বাগনান থানার হোমগার্ড পলাশ সামন্তের বাড়িতে এ দিন যান আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল। পলাশের বাড়ি বাগনানের দ্বীপামালিতা গ্রামে। সুকান্ত বলেন, ‘‘ওঁর পরিবারের পাশে আছি।’’

বৃহস্পতিবার রাতেই পুলিশ ওই সড়ক পরিদর্শন করে পথ-নিরাপত্তার ঘাটতি খুঁটিয়ে দেখে। পুলিশের পর্যবেক্ষণ, সড়কের নির্মাণ কৌশলে অনেক ঘাটতি রয়েছে। কোথাও তিন লেনের রাস্তা আচমকা দুই বা এক লেনে পরিণত হয়েছে। অনেক জায়গায় সার্ভিস রোড নেই। ডিভাইডারে ত্রুটি আছে। ডিভাইডার বেশ নিচু হওয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়ি এক লেন টপকে অন্য লেনে চলে যায়। তাতে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশের অভিযোগ, রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা অপ্রতুল। অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশে আলোই নেই। যেখানে হাইমাস্ট আলো আছে, সেখানে চারটি বাতি থাকলেও জ্বলে একটি বা দু’টি। ফলে, এলাকা অন্ধকারই থাকে। এটিও দুর্ঘটনার একটি কারণ। সিসি ক্যামেরা বসানোর দায়িত্ব জাতীয় সড়ক সংস্থার বলে পুলিশের দাবি। তারা না-করায় পুলিশ নিজের দায়িত্বেই সিসিক্যামেরা বসিয়েছে। আরও বসানো হবে বলেও জানিয়েছে। এই সব বিষয় পুলিশের তরফে আগেও অনেক বার জাতীয় সড়ক সংস্থাকে জানানো হয়েছে।

জাতীয় সড়ক সংস্থার সংশ্লিষ্ট ইউনিটের এক কর্তার পাল্টা বক্তব্য, দুর্ঘটনার মূল কারণ জবরদখল। রাস্তার ধারে বহু জায়গায় জবরদখল করে দোকান হয়েছে। রাস্তার উপরেই বাজার বসে। এই সব জায়গায় দুর্ঘটনা ঘটে। সংস্থা সূত্রের অভিযোগ, জবরদখলকারী উচ্ছেদে পুলিশের সাহায্য চাইলেও, মেলে না। রাস্তার ধারে যত্রতত্র বেআইনি ভাবে ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকে ‘পুলিশের মদতে’ই।। সংস্থার এক আধিকারিকের দাবি, গাড়ি এক লেন থেকে অন্য লেনে যাওয়ার জন্য ‘মেডিয়ান’ (গাড়ি ঘোরানোর নির্দিষ্ট জায়গা) থাকলেও যত্রতত্র ডিভাইডারে বেআইনি ‘কাট’ বানিয়েছেন বাসিন্দারা। পুলিশ ব্যবস্থা নেয় না। এই ‘কাট’ দিয়ে পারাপারের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে।

পুলিশের বক্তব্য, অনেক বেআইনি ‘কাট’ তারা বন্ধ করেছে। ঘনবসতির কারণে পথচারি, সাইকেল, মোটরবাইকের রাস্তা পারাপার লেগেই থাকে। তাঁরা নিজেদের সুবিধামতো কাট বানিয়ে নেন। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘মুম্বই রোডের সব জায়গায় পুলিশ প্রহরা বসানো সম্ভব নয়।’’ এর প্রতিকারে ওই পথে একাধিক ফুট ওভারব্রিজ তৈরির দাবি জানিয়েছে পুলিশ।

অন্য বিষয়গুলি:

Uluberia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy