Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
Underage Marriage

বিয়ের আসর থেকে উদ্ধার নাবালিকা পাত্রী, আশ্রয় হোমে

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কিশোরীর সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় ওই ব্লকেরই বছর চব্বিশের এক যুবকের সঙ্গে। পাত্র কারখানারশ্রমিক। শুক্রবার ছিল বিয়ে।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডোমজুড় শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:০৪
Share: Save:

পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকেরা যখন পৌঁছলেন, ঘড়িতে রাত ১১টা। বিয়ের আসর সবে বসেছে। সেই আসর থেকে পাত্রীকে তুলে নিয়ে গেলেন তাঁরা। কারণ, তার বিয়ের বয়স হতে ঢের দেরি। হাওড়ার ডোমজুড় ব্লকের একটি গ্রামের বছর চোদ্দোর ওই নাবালিকাকে পাঠানো হয়েছে হোমের আশ্রয়ে। শুক্রবার রাতের ঘটনা। প্রশাসন জানিয়েছে, ফের বইখাতা উঠবে তার হাতে। স্কুলছুট মেয়ে আবার স্কুলে যাবে।

মেয়েটির বাবা-মা প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে দাবি করেন, অভাবের সংসারে ‘ভাল পাত্র’ পেয়ে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে দায়মুক্ত হতে চেয়েছিলেন। প্রশাসনের তরফে তাঁদের বলা হয়, আঠেরো বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দেওয়া আইনত অপরাধ। বোঝানো হয়,ওই বয়সের আগে বিয়ে দিলেমেয়ের নানা সমস্যা হতে পারে। পাত্রপক্ষকে তিরস্কার করা হয়। সাবালিকা হওয়ার আগে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা আর করবেন না বলে মেয়েটির বাবা প্রশাসনের কাছে মুচলেকা জমা দেন।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কিশোরীর সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয় ওই ব্লকেরই বছর চব্বিশের এক যুবকের সঙ্গে। পাত্র কারখানারশ্রমিক। শুক্রবার ছিল বিয়ে। ওই রাতেই সেই খবর পান প্রশাসনের কর্তারা। দেরি না করে রাতেই ডোমজুড় থানার পুলিশ এবং ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা মেয়েটির বাড়িতে যান। বিয়ে বন্ধ করা হয়। পাত্রপাত্রী এবং তাঁদের বাড়ির লোকজনকে থানায় নিয়ে আসা হয়। মেয়েটিকে হোমে পাঠানো হয়।

ওই কিশোরীর বাবা ঠিকাশ্রমিক। মা গৃহ-সহায়িকা। দম্পতির দুই ছেলেমেয়ে। মেয়ে বড়। মায়ের দাবি, আর্থিক সমস্যার কারণে করোনা-পর্বে মেয়ের পড়া বন্ধ হয়ে যায়। ছেলে এ বার ষষ্ঠ শ্রেণিতে উঠেছে। টাকার অভাবে তাকেও নতুন ক্লাসে ভর্তি করাতে পারেননি। তাঁর আরও বক্তব্য, সকালে তিনি এবং স্বামী কাজে বেরিয়ে যান। ছেলে খেলতে বেরিয়ে যায়। ফলে, দিনের অনেকটা সময় মেয়েকে বাড়িতে একা থাকতে হয়। এ নিয়ে পাড়া-পড়শিদের একাংশের কটূক্তি শুনতে হয়তাঁদের। সেই কারণেই মেয়ের বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। প্রশাসন বোঝানোর পরে এই ‘ভুল’ তাঁরা আর করবেন না বলে তিনি জানান। ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘রীতিমতো আয়োজন করে, শতাধিক নিমন্ত্রিতের উপস্থিতিতেই চলছিল বিয়ের অনুষ্ঠান।’’

ডোমজুড় ব্লকের জনকল্যাণ আধিকারিক শোভনা কর জানান, নাবালিকা হোম থেকে ফিরলে তাকে আবার স্কুলে ফেরানোর জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে। নাবালিকা বিয়ে বন্ধে ওই এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হবে। নাবালিকার ভাইকেও স্কুলে ভর্তি করতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন।

অন্য বিষয়গুলি:

domjur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy