Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
কর্ম সংস্থান/ ৩
Mamata Banerjee

‘মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই’

কারিগরি শিক্ষায় কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন বিভাগে স্থানীয় হাজিপুর ইউনিয়ন হাই স্কুল থেকে এ বছর পাশ করেছেন। স্কুলের ব্যবাস্থপনায় গত ১৬ অগস্ট অনলাইনে চাকরির আবদেন করেন।

ভুয়ো ‘অফার লেটার’ হাতে পিয়ালি ঘোষাল। নিজস্ব চিত্র

ভুয়ো ‘অফার লেটার’ হাতে পিয়ালি ঘোষাল। নিজস্ব চিত্র

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:৫৮
Share: Save:

ভুয়ো ‘অফার লেটার’ পেয়েছেন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় আস্থা হারিয়েছেন। তবু ভেঙে পড়েননি। কাজের খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছেন গোঘাটের হরিহর গ্রামের পিয়ালি ঘোষাল।

নিয়োগপত্র নিতে সম্প্রতি কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রীর সভায় ডাক পাওয়া হুগলির কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত ১০৭ জন চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে পিয়ালিও রয়েছেন। ‘উৎকর্ষ বাংলা’ কর্মসূচিতে অন্যদের মতোই গত ১৪ সেপ্টেম্বর হুগলি ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে পেয়েছেন ভুয়ো ‘অফার লেটার’। পরের দিন উত্তরপ্রদেশের একটি সংস্থা থেকে ‘অফার লেটার’ পেতে আবেদনকরার জন্য ফোন এসেছিল তাঁর কাছে। সাড়া দেননি।

দুঃস্থ পরিবারের বছর উনিশের ওই তরুণী বলেন, ‘‘স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী কথা দিলেও চাকরির নিয়োগপত্র মেলেনি। কাজের ফের সুয়োগ পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। জুন মাসের গোড়ায় রাজ্য পুলিশের মহিলা কনস্টেবল পদে আবদেন করছি। জানি না কী হবে? কলকাতা বা চুঁচুড়ায় বিভিন্ন সংস্থায় কাজ খুঁজছি। ব্যাঙ্কঋণ নিয়ে নিজেই কিছু করা যায় কি না, সেটাও ভাবছি। একই সঙ্গে পড়াশোনা চালাতে আরামবাগ নেতাজি মহাবিদ্যালয়ে কলা বিভাগে ভর্তিও হয়েছি।”

পিয়ালির ভাই সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। বাবা সুভাষের তিন বিঘা জমি আছে। কোমরের সমস্যায় ভারী কাজ করতে পারেন না। এই অবস্থায় পরিবারকে দেখতে এবং নিজের পায়ে দাঁড়াতে রোজগারের পথ খোঁজা চালিয়ে যাচ্ছেন পিয়ালি। কারিগরি শিক্ষায় কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন বিভাগে স্থানীয় হাজিপুর ইউনিয়ন হাই স্কুল থেকে এ বছর পাশ করেছেন। স্কুলের ব্যবাস্থপনায় গত ১৬ অগস্ট অনলাইনে চাকরির আবদেন করেন। ২৫ অগস্ট যাদবপুরের একটি টেকনিক্যাল কলেজে আয়োজিত ‘জব ফেয়ারে’ ডাক পান ইন্টারভিউয়ের জন্য। স্কুল থেকে খবর পান, ১২ সেপ্টেম্বর কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রী সভায় তাঁদের নিয়োগপত্র দেওয়া হবে। রাজ্যের কারিগরি দফতরের আয়োজনেই আরামবাগ মহকুমা থেকে পিয়ালি এবং তাঁ মতো আরও কয়েকজনকে বাসে করে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সভায় নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ১৪ তারিখ হুগলি ইনস্টিটিউট ব টেকনোলজি থেকে নিয়োগপত্র নিতে গিয়ে পিয়ালিরা দেখেন, সেটি আদতে ভুয়ো ‘অফার লেটার’।

পিয়ালির মা সুপ্রিয়া বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নিজের হাতে নিয়োগপত্র দেবেন শুনে অনেক আশা জেগেছিল। এখন তো কোনটা সঠিক, কোনটা ভুয়ো বাছাই করাই মুশকিল। সংসার চালানো দুষ্কর হয়ে উঠছে। ভেবেছিলাম, মেয়ে কারিগরি শিক্ষা নিয়ে পড়াশোনারা পরে একটা কাজ পেলে কিছুটা সুরাহা হবে। কিছুই হল না!’’

সুভাষ বলেন, “সরকারি ব্যবস্থপনায় চাকরির বিষয়টায় হতবাক হয়েছি। রাজ্যে কর্মসংস্থান নিয়ে খুব আশা জাগছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির সঙ্গে বাস্তবের মিলথাকছে না।”

পিয়ালির স্কুলের কারিগরি বিভাগের শিক্ষক শ্রীকান্ত সেনাপতি জানান, সরকারি নির্দেশমতোই নিয়োগপত্র পাবেন, এমন পড়ুয়াদের মুখ্যমন্ত্রীর সভায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তারপর কী হয়েছে, কী ভাবে হয়েছে এ সব তাঁর জানা নেই।

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Fake Offer Letter Arambagh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy