পিয়ালি বসাক। ছবি: তাপস ঘোষ
হাতছানি দিচ্ছে এভারেস্ট। কিন্তু ‘অক্সিজেন’ জোগাবে কে! অতএব, বঙ্গকন্যার শৃঙ্গ ছোঁয়ার আকাঙ্ক্ষা এখন অনিশ্চয়তার মুখে!
গত বছর বিনা অক্সিজেন সিলিন্ডারে ২৬ হাজার ৭৯৫ ফুট উচ্চতার ধৌলাগিরি পর্বতশৃঙ্গের চূড়ায় পৌঁছে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন চন্দননগরের পিয়ালি বসাক। এ বার তাঁর গন্তব্য প্রায় ২৯ হাজার ৩৫ ফুট উচ্চতার এভারেস্ট। তা-ও অক্সিজেন ছাড়া। আগামী ২৮ মার্চ চন্দননগর থেকে যাত্রা শুরু করতে হবে। কাঠমাণ্ডু থেকে ৬-৭ দিন হেঁটে লুকলায় পৌঁছে সেখান থেকে বেস ক্যাম্প হয়ে এভারেস্টের শৃঙ্গে উঠতে হবে। একই যাত্রায় ২৮ হাজার ফুট উচ্চতার লোৎসে শৃঙ্গে ওঠার পরিকল্পনাও রয়েছে তাঁর। কিন্তু, পরিকল্পনার গতিরুদ্ধ করছে অর্থাভাব।
অঙ্কে স্নাতক পিয়ালি চন্দননগরের কানাইলাল বিদ্যামন্দিরের (ইংরেজি বিভাগ) প্রাথমিক বিভাগের শিক্ষিকা। শহরের কাঁটাপুকুরে তাঁদের বাড়ি। বাড়িতে বাবা-মা এবং বোন আছেন। বাবা তপনবাবু অসুস্থ, শয্যাশায়ী। সংসার চলে পিয়ালির উপার্জনে। তিনি জানান, অভিযানের খরচ ৩৫ লক্ষ টাকা। আনুষঙ্গিক খরচ মিলিয়ে আরও কয়েক লক্ষ। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত কোনও সাড়া পাইনি। সরকার পাশে না দাঁড়ালে অতগুলো টাকা জোগাড় হবে কী করে!’’
চিন্তায় ঘুম উবেছে পিয়ালির। জানান, আগে যত অভিযানে গিয়েছেন, ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিতে হয়েছে। এ বার সম্ভব হয়নি। চন্দননগরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সবুজের অভিযান’ পিয়ালির জন্য অর্থ সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে নানা জায়গায়। সংগঠনের সভাপতি বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়া উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গে আরোহণ করছেন পিয়ালি। এশিয়ার আর কোনও অসামরিক নারীর এই কৃতিত্ব নেই। এই সব অভিযানের পর্বতপ্রমাণ খরচ। সে জন্য ব্যাঙ্কে তাঁর লক্ষ লক্ষ টাকা ঋণ। সরকার বা সহ-নাগরিকরা পাশে না দাঁড়ালে আরও অনেক কৃতিত্ব তাঁর হয়তো অধরাই থেকে যাবে।’’
পিয়ালির ব্যাঙ্কের ঋণ মকুবের দাবিও জানাচ্ছেন ওই সংগঠনের কর্মকর্তারা। ‘সবুজের অভিযান’-এর ৭৫ বছর পূর্তি উৎসব চলছে। উৎসবের খরচ কাটছাঁট করে পিয়ালিকে অর্থ সাহায্যের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্মকর্তারা। বিশ্বজিৎবাবুর ক্ষোভ, ‘‘কর্পোরেট কর্তাদের ঋণ মকুব করা হয়, পিয়ালিদেরটা হয় না। কার্যত অসাধ্য সাধনের চেষ্টাতেও স্পনসরও মেলে না। ওঁকে কতটুকু অর্থ সাহায্য আমরা করতে পারব জানি না। তবে, চেষ্টা করব।’’
কিন্তু, এ যাত্রায় তা হবে তো! দিন যত এগিয়ে আসছে, ততই যেন একটু একটু করে দূরে চলে যাচ্ছে বঙ্গকন্যার স্বপ্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy