Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Kolkata High Court

ডানকুনি খাল বাঁচাতে আর্জি এ বার হাইকোর্টে

ডানকুনি খাল এখন ‘গোবর নদী’ বলেই পরিচিত। এলাকাবাসীর ক্ষোভ, এক সময় ওই খাল এলাকার সুষ্ঠু নিকাশির প্রধান মাধ্যম ছিল।

ডানকুনি খালের অবস্থা এমনই।

ডানকুনি খালের অবস্থা এমনই। ছবি: দীপঙ্কর দে।

প্রকাশ পাল
ডানকুনি শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২১ ০৭:২৫
Share: Save:

দীর্ঘদিন ধরেই গোবরে মুখ লুকিয়েছে ডানকুনি খাল। সেই গোবর বালিখাল দিয়ে বয়ে গিয়ে গঙ্গার দূষণ বাড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ। খাল বাঁচাতে বিভিন্ন সংগঠনের তরফে সরকারি নানা দফতরে আর্জি জানানো হয়েছে। কিন্তু প্রতিশ্রুতি আর চিঠি চালাচালি ছাড়া কিছু হয়নি বলে অভিযোগ। ওই খাল সংস্কার এবং দূষণমুক্ত করতে এ বার আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে তারকেশ্বরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছে তারা।

ওই সংগঠনের তরফে শুভ্রকান্তি সামন্ত জানান, মামলাটি আদালতে গৃহীত হয়েছে। শীঘ্রই শুনানি হবে বলে তাঁদের আশা। পরিবেশকর্মীদের একাংশ বলছেন, খালের হাল ফেরাতে আদালতের হস্তক্ষেপ জরুরি।

ডানকুনি খাল এখন ‘গোবর নদী’ বলেই পরিচিত। এলাকাবাসীর ক্ষোভ, এক সময় ওই খাল এলাকার সুষ্ঠু নিকাশির প্রধান মাধ্যম ছিল। এখন সেটি নিকাশি ব্যবস্থার অন্তরায়। বাম জমানায় কলকাতা থেকে খাটাল উচ্ছেদ হয়। তখন প্রায় দেড়শো খাটাল এই খালপাড়ে উঠে আসে। গরু-মোষের গোবর, তাদের ভ্যাকসিনের ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ-সহ খাটালের যাবতীয় বর্জ্য খালেই ফেলা হয়। বেশ কিছু কারখানার বর্জ্যও খালে পড়ে।

একটু বৃষ্টিতেই ডানকুনির বিস্তীর্ণ এলাকা জলে ভাসে। ডানকুনি খালের দুর্দশাকে এই অব্যবস্থার অন্যতম কারণ বলে মনে করেন অনেকেই। চণ্ডীতলার প্রবীণ বাসিন্দা, পরিবেশপ্রেমী শিবপ্রসাদ খাঁড়ার খেদ, ‘‘চোখের সামনে খালটাকে শেষ হতে দেখলাম। এখন গোবর, আবর্জনা, কচুরিপানায় ভর্তি। মশা, মাছি, পোকামাকড়ের আতুঁড়ঘর। দেখলে কান্না আসে।’’ পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খাল সংস্কারের জন্য আদালতে যেতে হচ্ছে, এটা সভ্য সমাজের জন্য লজ্জার।’’

ক্ষমতায় এসে তৃণমূল খাল সংস্কারে অজস্র প্রতিশ্রুতি বিলিয়েছে। কিন্তু কিছুই করে উঠতে পারেনি। সমস্যা মানছেন ডানকুনির পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন হাসিনা শবনম। তিনি জানান, ডানকুনি খাল সংস্কারের জন্য পুরসভার তরফে কেএমডিএ-কে চিঠি দেওয়া হয়। তাদের ইঞ্জিনিয়াররা এসে দেখে যান। কিন্তু কিছু হয়নি। এলাকার বিধায়ক স্বাতী খন্দকারকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। হাসিনা বলেন, ‘‘ডানকুনি খাল এবং সরস্বতী নদী দু’টোই সংস্কার করতে হবে। অত টাকা পুরসভার নেই। এ বার সেচমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার কথা ভাবছি।’’

পুরপ্রশাসকের দাবি, গোবরের সমস্যা সমাধানের জন্য গোবর-গ্যাসের প্ল্যান্ট তৈরির কথা ভাবা হয়েছিল। সে জন্য খাটাল মালিকদের বৈঠকে ডাকা হলেও দু’চার জনের বেশি আসেননি। ফলে, বিষয়টি এগোয়নি। এ বারে পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফের সেই চেষ্টা করা হবে।

পরিবেশকর্মীদের একাংশ জানান, বহু বছর আগে চাষাবাদ আর নিকাশির জন্য সরস্বতী নদী থেকে ডানকুনি খাল কাটা হয়েছিল। জনাই, পাঁচঘড়া, বেগমপুর, ডানকুনি, বন্দের বিল হয়ে তা বালিখালে গঙ্গায় মিশেছে। স্থানীয় প্রবীণেরা জানান, প্রথম দিকে খালটি মানুষের খুবই উপকারে এসেছিল।

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata High Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy