শ্যামপুরের বাসুদেবপুরে হুগলি নদীর বাঁধের হাল এমনই। নিজস্ব চিত্র
দুর্যোগ হাজির। অথচ, সাত মাসেও হুগলি নদীর ভাঙা বাঁধ মেরামত হয়নি। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সোমবার সকাল থেকে দমকা হাওয়া এবং নদীর জলস্তর বাড়ায় আতঙ্কে ভুগছেন শ্যামপুর-১ ব্লকের বাসুদেবপুরের বাসিন্দারা। না জানি কখন ঘরদোর ডোবে! প্রশাসন এবং সেচ দফতর অবশ্য তাঁদের আশ্বস্ত করছে।
মাস সাতেক আগে ভরা কটালের ধাক্কায় ওই গ্রামে প্রায় দেড়শো মিটার নদীবাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। সেচ দফতরের পক্ষ থেকে বালির বস্তা ও ভাঙা ইট দিয়ে বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু পাকাপোক্ত ভাবে বাঁধ মেরামত হয়নি বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। ওই পথে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। গ্রামবাসীদের প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে শ্যামপুরে যেতে হচ্ছে।
গ্রামবাসীরা এমনিতেই আতঙ্কে ভুগছিলেন। সোমবার সকাল থেকে হাওয়ার বেগ এবং নদীর জলস্তর বৃদ্ধিতে সেই আতঙ্ক আরও বেড়েছে। ইতিমধ্যেই নদীর ধারে বসবাসকারীদের অন্যত্র সরিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। দুর্যোগ নিয়ে মাইকে প্রচারও করা হচ্ছে।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে বিশ্বনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘নদীর পাড়ে বাস করি। সবসময় চিন্তা হয়। আবার বুঝি, বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল ঢুকবে। ছেলেমেয়ে, স্ত্রীকে নিয়ে কোথায় যাব! ভাঙা বাঁধ সাত মাস ধরেও মেরামত হল না। প্রশাসনের কর্তারা মাঝেমধ্যে আসেন। কিছু মাটি ফেলা হয়। ওঁরা ছবি তুলে চলে যান। নদীতে জোয়ার এলেই চিন্তা বাড়ে। আবার এই ঝড়বৃষ্টিতে কী হবে জানি না।’’ আর এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘বাঁধ মেরামতের জন্য গ্রামের মানুষ প্রশাসনের সব স্তরের কর্তাদের জানিয়েছেন। কর্তারা শুধু আশ্বাস দেন। কিন্তু কিছুই কাজ হয়নি। বালিরবস্তা দিয়ে কখনই বাঁধ মেরামত করা সম্ভব নয়।’’
ওই বাঁধের পাশেই বাসুদেবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, প্রশাসন কংক্রিটের বাঁধ না করলে কিছুদিনের মধ্যেই দোতলা স্কুলভবন নদীতে তলিয়ে যাবে।
বিডিও তন্ময় কারজি বলেন, ‘‘বাঁধের কাজ চলছে। তার মধ্যে দুর্যোগের খবর আসায় এলাকায় মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। মানুষকে সজাগ করে দেওয়া হয়েছে। কিছু মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন ও সেচ দফতরের লোকজন সব সময় নজরদারি চালাচ্ছেন। ভয়ের কিছু নেই।’’
হাওড়া জেলা সেচ দফতরের আধিকারিক চন্দ্রশেখর রওপান জানান, বাঁধ মেরামতের কাজ সব সময় চলছে। দুর্যোগের খবর আসায় মাটির বস্তা দিয়ে বাঁধ আরও এক মিটার উঁচু করা হয়েছে। যাতে মাটি ধুয়ে না-যায়, সে জন্য বাঁধের ধারে প্লাস্টিক পাতা হয়েছে। নদীতে জল বাড়লেও গ্রামে ঢুকবে না। সে ভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
ওই সেচকর্তার দাবি, ‘‘পাকাপাকি ভাবে বাঁধ মেরামতের জন্য উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে। সেচ দফতর দিনরাত ওই এলাকায় নজর রেখেছে। রাতে নজরদারি চালানোর জন্য আলো লাগানো হয়েছে। আধিকারিক-কর্মীরা ওখানে থাকছেন। আপাতত যে ভাবে বাঁধ বাঁধা হয়েছে, তাতে গ্রামে জল ঢুকবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy