Advertisement
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Water Logging

জলাজমি ভরাট, বন্ধ নালার জেরে জল জমছে গরফা আন্ডারপাসে

গত বছরের অভিজ্ঞতার পরে রাজ্য পূর্ত দফতরের হাইওয়ে বিভাগ কেন এখনও জমা জল সরাতে ব্যবস্থা নিল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা।

কোনা এক্সপ্রেসওয়ের গরফা আন্ডারপাসে জল জমার সমস্যার সমাধানও কার্যত বিশ বাঁও জলে চলে গিয়েছে।

কোনা এক্সপ্রেসওয়ের গরফা আন্ডারপাসে জল জমার সমস্যার সমাধানও কার্যত বিশ বাঁও জলে চলে গিয়েছে। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

দেবাশিস দাশ
হাওড়া শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৪ ০৭:৫১
Share: Save:

এক দিকে এলাকার কয়েক একর জলাজমি ভরাট করে তৈরি হওয়া বেসরকারি কলেজ। অন্য দিকে কংক্রিটের দেওয়াল তুলে এলাকার প্রধান নিকাশি নালা বন্ধ করে দেওয়া। মূলত, এই জোড়া-ফলার সৌজন্যেই ম ফলে বৃষ্টি হলেই প্রায় দু’ফুট জল
জমে যাচ্ছে ওই গুরুত্বপূর্ণ আন্ডারপাসের কলকাতামুখী দু’টি লেনে। গত বছরের মতো এ বছরেও বষার্র শুরুতে আন্ডারপাসটিতে হাঁটুসমান জল জমে যাওয়ায় বর্তমানে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে কলকাতামুখী দু’টি লেনই। ফলে সেখানে যানজট এখন নিত্যদিনের ঘটনা।

গত বছরের অভিজ্ঞতার পরে রাজ্য পূর্ত দফতরের হাইওয়ে বিভাগ কেন এখনও জমা জল সরাতে ব্যবস্থা নিল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। যদিও গরফা আন্ডারপাসে জল জমার সমস্যা নিয়ে অবিলম্বে জেলাশাসক ও নগরপালের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী পুলক রায়। তিনি বলেন, ‘‘যে মূল নিকাশি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তা খুলে দেওয়া হবে। দু’-এক দিনের মধ্যে আমরা নগরপাল ও জেলাশাসকের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠকে বসব।’’

কয়েক বছর আগে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের গরফা সেতুর পাশে আরও একটি কলকাতামুখী লেন তৈরি করার কাজ করে রাজ্য পূর্ত দফতরের হাইওয়ে বিভাগ। এ জন্য দক্ষিণ-পূর্ব রেলের রেলসেতুর নীচে তৈরি হয় আন্ডারপাস। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই আন্ডারপাসের রাস্তা তৈরির সময়ে পাশের শীতলাতলা এলাকা ও মৌখালি এলাকার একমাত্র কাঁচা নিকাশি নালাটি বন্ধ করে কংক্রিটের পাঁচিল দিয়ে দেওয়া হয়। সে সময়ে শীতলাতলার বাসিন্দারা এ নিয়ে বার বার অভিযোগ জানালেও ওই কাজ বন্ধ করেননি পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা। স্থানীয় বাসিন্দা অমর সর্দার বলেন, ‘‘ওই কাঁচা নিকাশি নালাটি সংযুক্ত ছিল ঊনসানি খালের সঙ্গে। বৃষ্টির অতিরিক্ত জল ওই নালা দিয়ে বেরিয়ে গিয়ে ওই খালে গিয়ে পড়ত। কিন্তু মাঝপথে পাঁচিল তুলে দেওয়ায় জল বেরোনোর রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। তাই সামান্য বৃষ্টিতেই নালা উপচে ভেসে যাচ্ছে পাশের বস্তি-সহ আন্ডারপাস।’’ তাঁরা আরও জানান, এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মৌখালি এলাকায় কয়েক একর জলাজমি ভরাট করে বেসরকারি কলেজ তৈরি হওয়ার ঘটনা। ওই জলাজমিটি ছিল জগাছার বিস্তীর্ণ এলাকার অন্যতম জলাধার। সেটি মাটি ফেলে উঁচু করে ভরাট করে নির্মাণকাজ হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই বানভাসি হচ্ছে গোটা ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড-সহ আন্ডারপাসটি।

হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী জানান, আপাতত পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঁচা নিকাশি খালটি জেসিবি দিয়ে কেটে চওড়া করে দেওয়া হচ্ছে। যাতে জলধারণ ক্ষমতা বাড়ানো যায়। সেই সঙ্গে জল পাম্প করে খালে ফেলার জন্য ২০ অশ্বশক্তিসম্পন্ন তিনটি পাম্প বসানো হচ্ছে। সুজয় বলেন, ‘‘পূর্ত দফতর ওই নিকাশি খালটি পাঁচিল তুলে বন্ধ করে দিয়েছিল। সেটি কী ভাবে সরানো হবে, তা পূর্ত দফতরকে দেখতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে পুরসভা জেসিবি দিয়ে খাল চওড়া করার কাজ শুরু করে দিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

water logging garfa Kona Expressway
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE