Advertisement
E-Paper

কাজের চাহিদা মিটবে না, আশঙ্কার মেঘ দুই জেলায়

কেন্দ্রীয় বাজেটে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ব্যয় বরাদ্দ কমেছে। জনজীবনে তার কতটা প্রভাব পড়বে? খোঁজ নিল আনন্দবাজার। আজ ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প।

১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে কাটা হচ্ছে মাটি।

১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে কাটা হচ্ছে মাটি। ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৬:৫৪
Share
Save

বাজেটে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের বরাদ্দ কমে যাওয়ায় গ্রামবাসীরা বিপাকে পড়বেন বলে অনেকে মনে করছেন। তার ফলে আখেরে গ্রামীণ অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে বলে তাঁদের ধারনা। ভোটের মুখে এই নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে দুই জেলার পঞ্চায়েত স্তরে। বরাদ্দ সংকোচনের ফলে গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষের কাজের পরিধি অনেকটা কমে যাবে বলে বিজেপি বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের অভিমত।

গত বছর বাজেটে এই প্রকল্পে ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। এই বার তা ৭৩ হাজার কোটিতে নেমে গিয়েছে। এই অবস্থায় প্রান্তিক সব মানুষ এই কাজ পাবেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
হুগলি জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কেন্দ্র এই প্রকল্প তুলেই দিতে চাইছে। তাই প্রতি বছর ধাপে ধাপে বরাদ্দ কমিয়ে দিচ্ছে। এর আঘাত সরাসরি গ্রামে গিয়ে পড়বে। আমাদের জেলায় আদিবাসী অধ্যুষিত পাণ্ডুয়া, ধনেখালি, বলাগড় থেকে জাঙ্গিপাড়া, চণ্ডীতলা, গোঘাট, খানাকুলের মত এলাকায় মানুষ কাজ পাবেন না।’’ সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের কৃষি ও গ্রামীণ মজুর সমিতির রাজ্য সম্পাদক সজল অধিকারীর অভিযোগ, গ্রামবাসীরা জবকার্ড চেয়ে পাচ্ছেন না। যে পরিবারে তিনটে জব কার্ড দেওয়ার কথা, সেখানে মিলছে একটা। তিনি মনে করছেন, বরাদ্দ কমানোয় কাজ পাওয়া কঠিন হবে। দারিদ্র বাড়বে।

পঞ্চায়েতের কর্তাদের চিন্তা, প্রকল্পের টাকা অপ্রতুল হলে চাহিদা অনুযায়ী কাজ দেওয়া যাবে না। করোনা-পর্বে লকডাউনে রোজগার হারিয়ে বহু মানুষ ১০০ দিনের কাজ করে সংসার চালিয়েছেন। পরিযায়ী শ্রমিকেরা বাড়ি ফিরে এই কাজকেই আঁকড়ে ধরেন। এ বার এমন পরিস্থিতি হলে অথবা কোনও গ্রামবাসী বেকায়দায় পড়লে তাঁদের হাতে কাজ তুলে দেওয়া যাবে না বলে বলে তাঁদের মনে হচ্ছে।

চুঁচুড়া-মগরা ব্লকের মগরা-১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রঘুনাথ ভৌমিক বলেন, ‘‘বহু গ্রামবাসী এই কাজে যুক্ত। তাঁদের হাতে সরাসরি এই টাকা পৌঁছে যায়। টাকা কমে গেলে গ্রামবাসীদের পেটে টান পড়বে। এই খাতে বরাদ্দ কমানো অনুচিত হয়েছে।’’ জাঙ্গিপাড়া ব্লকের রাজবলহাট-২ পঞ্চায়েতের প্রধান তুষার রক্ষিতের বক্তব্য, ‘‘আমার এলাকায় প্রচুর তাঁতী। তাঁতশিল্পে মন্দা বলে তাঁরা ১০০ দিনের কাজ করছেন। বরাদ্দ কমে গেলে মানুষের প্রয়োজনের সময় সামাল দেওয়া যাবে না। টাকা যেখানে বাড়ানো উচিত ছিল, সেখানে উল্টে কমিয়ে দেওয়া হল।’’

বিজেপি নেতা স্বপন পালের অবশ্য দাবি, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে ধাক্কা খাওয়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সব দিক ভেবেই বাজেট পেশ করা হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে পঞ্চায়েতে পঞ্চায়েতে দুর্নীতি করেছে তৃণমূল। তাই বরাদ্দ কিছুটা কমায় হাহুতাশ করছে।’’
হাওড়ায় চলতি আর্থিক বছরে ১০০ দিনের প্রকল্পে ২০৪ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। ৭৭ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরি হয়েছে। আর্থিক বছরের শেষে ৮০ লক্ষ শ্রমদিবস সৃষ্টি হওয়ার কথা। টাকা খরচ বেড়ে দাঁড়ানোর কথা ২২০ কোটিতে। এই হার গত আর্থিক বছরের থেকে বেশি। বাজেটে বরাদ্দ কমানো হলেও তার প্রয়োগ বাস্তবে কতটা সম্ভব, তা নিয়ে জেলা প্রশাসনেরর আধিকারিকদের একাংশ সংশয় প্রকাশ করেছেন। তাদের বক্তব্য, আইন অনুযায়ী কোনও জবকার্ডধারী এই প্রকল্পে কাজ চাইলে, সরকার তা দিতে বাধ্য। ফলে কাজের চাহিদা থাকলে সরকারকে সাপ্লিমেন্টারি বাজেট পাস করে এই প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
(তথ্য : গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রকাশ পাল, নুরুল আবসার)

MNREGA Budget 2021

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}