—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পেরিয়ে গিয়েছে দু’বছরেরও বেশি সময়। চালকদের দু’পক্ষের গোলমালের জেরে হুগলির উত্তরপাড়া এবং হাওড়ার বালিখালের মধ্যে টোটো চলাচল এখনও স্বাভাবিক হয়নি। একদিকের টোটো জেলার সীমানা পেরিয়ে এখনও অন্যদিকে যেতে পারে না। যাত্রীদের ভোগান্তি অব্যাহত। এই পরিস্থিতিতে রবিবার রাতে একটি টোটো ‘রিজ়ার্ভ’ করে অসুস্থ বৃদ্ধা মা, শিশুকন্যা এবং স্ত্রীকে নিয়ে বালি থেকে উত্তরাপড়ায় ফিরতে গিয়ে টোটোচালকদের চরম ‘হেনস্থা’র শিকার হলেন এক শিক্ষক। নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠল উত্তরপাড়া থানার বিরুদ্ধে। প্রতিকারের আশায় রাজ্য প্রশাসন, কলকাতা পুলিশ এবং পরিবহণ দফতরে লিখিত ভাবে ঘটনাটি জানিয়েছেন তিনি।
পুলিশ থেকে মন্ত্রী— ওই এলাকার টোটো চলাচলে সমস্যার কথা সকলের জানা। কিন্তু কোনও প্রতিকার না হওয়ায় সাধারণ মানুষ এমনিতেই ক্ষুব্ধ ছিলেন। রবিরারের ঘটনায় সেই ক্ষোভ আরও বেড়েছে।
কী হয়েছিল রবিরার?
অনির্বাণ মণ্ডল নামে ওই শিক্ষক জানান, একটি টোটো ‘রিজ়ার্ভ’ করে বালির দুর্গাপুরে পৈতৃক বাড়ি থেকে তাঁরা উত্তরপাড়ার ভদ্রকালীতে নিজেদের বাড়িতে ফিরছিলেন। একাধিক ব্যাগ ছিল। তাঁর অভিযোগ, রাত ৯টা নাগাদ বালিখালে উত্তরপাড়ার টোটোচালকেরা তাঁদের নামতে বাধ্য করেন। অনুরোধ-উপরোধেও লাভ হয়নি। ঢিল ছোড়া দূরত্বে উত্তরপাড়া থানা। সেখানে বারবার ফোন করেও সাড়া মেলেনি। তখন তিনি ইন্টারনেট থেকে নম্বর খুঁজে লালবাজারে ফোন করেন। লালবাজারের পরামর্শ অনুযায়ী ভবানী ভবনে ফোন করেন। সেখান থেকে তাঁর ফোন নম্বর নিয়ে বলা হয়, তারা উত্তরপাড়া থানায় যোগাযোগ করছে। থানা সাহায্য করবে। যদিও কিছুই হয়নি।
ওই শিক্ষকের দাবি, টোটোচালকেরা তাঁদের নিয়ে হাসাহাসি করেন। বিদ্রুপ করে দাবি করেন, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী এলেও টোটো ছাড়া হবে না। শেষে তাঁরা ক্যাব ‘বুক’ করে বাড়ি ফেরেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা মর্মাহত। অপমানিত।’’
চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (৩) আলি রাজা বলেন, ‘‘ওখানে টোটোর সমস্যা দীর্ঘদিন চলছে। দুই জেলার পুলিশ মিলে সমাধানের চেষ্টা হয়েছিল। ফল হয়নি। ফের সর্বোচ্চ মহলে চেষ্টা করা জরুরি।’’ রবিবার রাতের ঘটনায় উত্তরপাড়া থানার নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এই বিষয়ে নির্দিষ্ট করে জানা নেই। খোঁজ নেব।’’ থানা সূত্রের দাবি, সেখানে ফোন এসেছে অথচ, কেউ ধরেননি, এমনটা হওয়ার কথা নয়। ভবানী ভবন থেকেও কোনও ফোন আসেনি। পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওখানে টোটো চলাচলে সমস্যার ব্যাপারে আমি অবহিত। তার সমাধানে কী করা যায়, ফের দুই জেলার আরটিওদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত দেখব। রবিবারের ঘটনা নিয়ে পুলিশের সঙ্গেও কথা বলব।’’
বালিখাল থেকে ধাড়সা রুটের টোটোচালক সংগঠনের সভাপতি বিপ্লব ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘বয়স্ক এবং অসুস্থদের ক্ষেত্রে সব সময়ে ছাড় দেওয়া হয়। উনি মায়ের কথা বলেছিলেন কি না, খোঁজ নেব। তবে উত্তরপাড়া থানা থেকে আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়। তার আগেই ওঁরা বিকল্প ব্যবস্থা করে চলে যান।’’
বহু যাত্রীর ক্ষোভ, সীমানায় এসে টোটো থেকে নেমে অন্য প্রান্তে যেতে হলে সেখানকার টোটো ধরতে হয়। বালিখালের মুখ থেকে বালিঘাট স্টেশন বা শ্রীকৃষ্ণ বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত হেঁটে যাতায়াত করতে হচ্ছে। টোটোচালকদের হেনস্থার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষজন। দুই জেলার প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহলে জানিয়েও প্রতিকার মেলেনি। বালিখালে জিটি রোডের উপরেই পুলিশের নাকের ডগায় দু’দিকে টোটো স্ট্যান্ড গজিয়ে উঠেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy