হাওড়ায় উদ্ধার হওয়া অলিভ রিডলে। ছবি: হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চ সূত্রে পাওয়া।
প্রশান্ত এবং ভারত মহাসাগর বাসিন্দা অলিভ রিডলে প্রজাতির কচ্ছপ উদ্ধার হল হাওড়ার রূপনারায়ণ নদে। শুক্রবার গভীর রাতে বাগনান থানার অন্তর্গত বাকসীহাট পঞ্চায়েতের মানকুর শীতলাতলায় প্রায় ৪০ কিলোগ্রাম ওজনের বিরাট সামুদ্রিক কচ্ছপটি উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, কচ্ছপটি রূপনারায়ণের পারে পড়েছিল। স্থানীয় যুবক রাজু কোটাল ও বাদল পাত্র নদীর পারে কচ্ছপটিকে দেখতে পেয়ে ডাঙায় তুলে এনে বাগনান থানায় খবর দেন। বাগনান থানার তরফে যোগাযোগ করা হয়, বাগনানের বন্যপ্রাণপ্রেমী সংগঠন হাওড়া জেলা যৌথ পরিবেশ মঞ্চের সদস্য ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণকারী চিত্রক প্রামাণিকের সঙ্গে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই চিত্রক এবং তাঁর সঙ্গী ঝিন্দন প্রধান, সুমন্ত দাস, তিতাস প্রধানকে নিয়ে এলাকায় গিয়ে দেখেন সেটি একটি অলিভ রিডলে কচ্ছপ।
চিত্রক বলেন, ‘‘কচ্ছপটি ভীষণ ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিল। নড়াচড়ার ক্ষমতা প্রায় ছিল না। বাম দিকের ফ্লিপারে চোটও ছিল। প্রশান্ত মহাসাগর, ভারত মহাসাগরে এদের বসবাস। গভীর সমুদ্রে থাকে। মূলত ওড়িশার উপকূলে ডিম পাড়তে আসে। কোনও কারণে দিগ্ভ্রান্ত হয়ে নদীতে চলে এসেছে।’’ শুক্রবার রাতেই হাওড়া বনবিভাগের কর্মীরা এসে অলিভ রিডলে কচ্ছপটিকে উদ্ধার করে গড়চুমুক প্রাণী উদ্ধারকেন্দ্রে নিয়ে যান।
গড়চুমুকের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ অফিসার রাজেশ মুখোপাধ্যায় শনিবার বলেন, ‘‘আমাদের প্রাণী চিকিৎসাকেন্দ্রে কচ্ছপটির চিকিৎসা করা হচ্ছে। যদি সুস্থ হয়ে ওঠে তবে তাকে আবার তার প্রাকৃতিক পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হবে।’’ গড়চুমুকের প্রাণী চিকিৎসকদের চিকিৎসায় সেটি সাড়া দিচ্ছে বলেও জানিয়েছেন রাজেশ। চিত্রক জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগে ওই এলাকায় আরও দু’টি অলিভ রিডলে কচ্ছপ পাওয়া গিয়েছিল। তাদের একটিকে ভুলবশত মানুষ মেরে ফেলে ও অন্যটি বন বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
ভারতীয় প্রাণী সর্বেক্ষণ (জেডএসআই)-এর ডেপুটি ডিরেক্টর তথা সরীসৃপ বিজ্ঞানী কৌশিক দেউটি বলেন, ‘‘অলিভ রিডলে মূলত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বাসিন্দা। শীতের গোড়া থেকে এরা ভারত, বাংলাদেশ, মায়ানমারের বঙ্গোপসাগর উপকূলে ডিম পাড়তে আসে।’’ তিনি জানান, ওড়িশার গহিরমাথা, ঋষিকুল্যা এবং দেবী নদীর মোহনার অস্তরং সৈকতে প্রতি বছর লক্ষাধিক অলিভ রিডলে ডিম পাড়তে আসে। তিনি বলেন, ‘‘সুন্দরবনের মেছুয়া, কলস, ছাইমারির মতো দ্বীপেও বালির তটে এরা ডিম পাড়তে আসে। শীতের শেষ পর্বেই ফিরে যায়। এপ্রিল থেকে ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোনো শুরু হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy