ঝড়-বৃষ্টিতে তিল জমিতে জলে দাঁড়িয়ে গিয়েছে। গোঘাটের কুমুড়সায়। নিজস্ব চিত্র।
গত রবি ও সোমবার ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বৃষ্টি। তার পরে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টি। এর ফলে হুগলির বিভিন্ন ব্লকে তিল ও বাদাম চাষের ক্ষতি হয়েছে। চাষিরা চিন্তায় পড়েছেন। চাষিদের অনেকে জানান, বাদাম সবে তোলা শুরু হয়েছিল। বৃষ্টিতে গাছ ডুবে থাকায় বাদামের গায়ে কালো ছোপ হয়ে যাবে। দাম মিলবে না। ভেজা জমি থেকে বাদাম তুলতে শ্রমিকের খরচও বাড়বে। তিল উঠতে মাসখানেক দেরি থাকলেও জমিতে জল দাঁড়ালে গাছ বাঁচে না। ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষি দফতরও।
জেলা কৃষি দফতরের কর্তারা জানান, ওই দুই চাষে ক্ষয়ক্ষতির সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। দফতর সূত্রে খবর, হুগলিতে বাদাম চাষের এলাকা ১৯ হাজার ৫০০ হেক্টর। তার মধ্যে আরামবাগ মহকুমায় চাষ হয় ১৩ হাজার ৯৬৪ হেক্টরে। জেলায় তিল চাষ হয় ৪০ হাজার হেক্টর। তার মধ্যে আরামবাগে ওই চাষের এলাকা ১৫ হাজার ২১ হেক্টর।
আরামবাগ মহকুমার পাশাপাশি অর্থকরী ফসল হিসেবে গত তিন বছরে তারকেশ্বর, ধনেখালি-সহ কয়েকটি ব্লকেও তিল এবং বাদাম চাষ ব্যাপক হারে বেড়েছে। চাষিদের বক্তব্য, এই চাষ লাভজনক। আলু ওঠার পরপরই চাষিরা সেই জমিতে তিল ও বাদাম চাষ করেন। এ বার ফলন ভাল হলেও শেষ মুহূর্তের বৃষ্টি চাষিদের সমস্যায় ফেলেছে। কোথাও কোথাও খেতে জল জমেছে। চাষিদের আশঙ্কা, তিল চাষ সব নষ্ট হবে। বাদাম তোলার মুখে ছিল। তা কিছুটা পাওয়া গেলেও গুণমান বজায় থাকবে না। ফলে, দাম মিলবে না। আলুর পরে বাদাম এবং তিলকেই বিশেষ অর্থকরী ফসল হিসাবে চাষ করে থাকেন আরামবাগ মহকুমার খানাকুল ১ ও ২, গোঘাট ইত্যাদি এলাকার চাষিরা।
১২ বিঘা জমিতে তিল এবং ৪ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছেন পুরশুড়ার কেলেপাড়ায় বাপ্পাদিত্য ধোলে। তিনি বলেন, ‘‘রেমালের বৃষ্টিতে মাটি ভেজাই ছিল। বৃহস্পতিবার রাতের ব্যাপক বৃষ্টিতে জমিতে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। মাঠ ভর্তি থাকায় জল নামানোরও জায়গা নেই। তিল, বাদাম সবই নষ্ট।’’ ওই দুই চাষে ক্ষতির আশঙ্কা আরামবাগের রাংতাখালির দিলীপ মালিক, খানাকুলের অরুন্ডার বিমল মাইতি প্রমুখেরও।
ধনেখালির সোমসপুর ১ ও ২ পঞ্চায়েত, ভান্ডারহাটি, কানানদীর বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়েও প্রায় একই পরিস্থিতি। ধনেখালির চাষি কাশীনাথ পাত্রের কথায়, ‘‘এ বার চাষ ভাল হয়েছিল। পরিণত বাদামে বৃষ্টির জল পেলে কল বেরিয়ে যায়। সেই বাদাম খাওয়া যাবে না। আমাদের বেশিরভাগ চাষিরই বিমা করা আছে। সেটাই ভরসা।’’ তারকেশ্বরের রামনগরের অনুপ ঘোষ বলেন, ‘‘পাঁচ বিঘে জমিতে তিল চাষ করেছি। আলুর জমিতেই বসিয়েছি। তাতে সারের খরচ কমে। তিল চাষে খরচ কম। জমি থেকে তোলার পরে গাছ থেকে তিল ছাড়ানো এবং পেশাইয়ের কাজে শ্রমিকের খরচ বেশি। তবে এ বার পুরো মুশকিল হয়ে গেল। জমিতে জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। চাষ নষ্ট।’’
ধনেখালি ব্লকের সহ-কৃষি অধিকর্তা দীপক হাজরা বলেন, ‘‘এ বার এই ব্লকে ৬৬০ হেক্টর জমিতে তিল এবং ৫০০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ হয়েছে। পরিণত ফসল বৃষ্টির জল পেলে ক্ষতির মাত্রা বেশি হয়। সমীক্ষার কাজ চলছে।
বিষয়টি আমরা ইতিমধ্যেই জেলা কৃষি দফতরে জানিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy