ধান কেনার পোস্টার। গোঘাটের কামারপুকুর ডাকবাংলো এলাকায়। —নিজস্ব চিত্র।
চলতি আর্থিক বছরে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হল বুধবার। যদিও প্রথম দিন হুগলির কোনও ক্রয় কেন্দ্রেই চাষিরা এক ছটাক ধানও বিক্রি করেননি বলে জেলা খাদ্য দফতর থেকে জানা গিয়েছে।
চাষিরা জানিয়েছেন, আমন ধান এখনও ওঠেনি। কিছু চাষির আউস ধান উঠলেও তার গুণমান নিয়ে ক্রয় কেন্দ্রে অনেক হয়রানি পোয়াতে হয়। আবার সরকারের কেনা ধান থেকে চাল প্রক্রিয়াকরণে চুক্তিবদ্ধ জেলার চালকল-মালিকেরাও চান না, এখন ধান কেনা হোক। দফতরের কাছে তাঁদের আর্জি, ভাল গুণমানের চাল পেতে ধান কেনার বিষয়টি এক মাস পিছিয়ে দেওয়া হোক।
জেলা খাদ্য নিয়ামক তরুণ মণ্ডল বলেন, ‘‘সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আমাদের মোট ৪২টি ‘সিপিসি’ (সেন্ট্রালাইজ়ড প্রোকিয়োরমেন্ট সেন্টার) খোলাই আছে। চাষিরা ধান নিয়ে এলে ধান কেনা হবে।’’
জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার ধানের সহায়ক মূল্য কুইন্টালপ্রতি গত বারের থেকে ১৪৩ টাকা বেশি দিয়ে ধার্য হয়েছে ২১৮৩ টাকা। সরকারি ক্রয় কেন্দ্র তথা সিপিসি-তে দিলে আরও ২০ টাকা উৎসাহ-ভাতা যোগ করে
চাষিরা পাবেন ২২০৩ টাকা। গত বারের চাহিদার কথা বিবেচনা করে জেলায় এ বার ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা প্রায় আড়াই লক্ষ টন বাড়িয়ে করা হয়েছে ৭ লক্ষ ৭৬ হাজার ৯০ টন। সিপিসি ছাড়াও সমবায় সমিতি, স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং এফপিও
(ফার্মার্স প্রোডিউসার অর্গানাইজেশন) ধান কিনবে।
এ বছর হুগলি জেলায় সরকারি কেনা ধান প্রক্রিয়াকরণ করতে এ দিন পর্যন্ত চুক্তিবদ্ধ হয়েছে ৭৬টি চালকল। গতবার চুক্তিবদ্ধ ছিল ৮৩টি। কেন এ বার কম? চালকল মালিক সংগঠনের সভাপতি সুনীলকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘লোকসানের আশঙ্কায় এ বার ৫টি চালকল এই কাজ করবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। তাদের লোকবল কম। ৭৬টি চালকলের কাগজপত্র ঠিক থাকায় চুক্তি হয়ে গিয়েছে। আরও দু’টিরও হবে।’’
এখন ধান কেনায় কেন আপত্তি?
সুনীলের বক্তব্য, এখনও আমন ধান ওঠেনি। আউস উঠলেও তা অত্যন্ত ‘কমা’ ধান। এক কুইন্টাল ধান থেকে যে চাল পাওয়ার কথা, সেই অনুপাত আসবে না। অনুপাত ঠিক করতে কুইন্টালপ্রতি যে ধান বাদ দিতে হবে, তা নিয়ে চাষিদের সঙ্গে
সমস্যা হয়। সেই কারণেই পয়লা ডিসেম্বর থেকে ধান কেনার আবেদন করা হয়েছে।
চাষিদের মধ্যে আরামবাগের রামনগরের বিদ্যাপতি বাড়ুই, তারকেশ্বরের চাঁপাডাঙার শেখ কাশেম আলি প্রমুখ জানান, আমন ধান কেটে ঘরে তুলতে এখনও এক মাস সময় লাগবে। আউস ধান চাষের এলাকা খুবই কম। আলু চাষের এলাকাগুলিতে নভেম্বরের মাঝামাঝি ধান কাটা শুরু হয়। এ ছাড়া আনেক চাষির পুরনো ধান মজুত থাকলেও তা সরকারি দামের চেয়ে বাজারে বেশি। পুরনো ধানের দাম বাজারে ২৪০০ টাকা কুইন্টাল। সেই ধান ২২০৩ টাকায় চাষিরা দেবেন কেন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy