—ফাইল চিত্র।
অধিকাংশ মণ্ডপের কাজ শেষ। প্রতিমার সাজসজ্জাও সারা। আজ, শনিবার জগদ্ধাত্রী পুজোর পঞ্চমী। অন্যান্য বার ষষ্ঠী থেকে চন্দননগরে ঢোকার মুখগুলিতে ‘নো এন্ট্রি’ করত পুলিশ। এ বার ওই বিধিনিষেধ বলবৎ হচ্ছে আজ দুপুর ৩টে থেকে। একইসঙ্গে ওই সময় থেকে শহরে যান চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। যথারীতি এ বারেও শহরবাসীর
জন্য পুলিশের ‘এন্ট্রি পাস’ বিলিকে ঘিরে ক্ষোভ সামনে এসেছে। বহু মনুষের অভিযোগ, আবেদন করেও ‘পাস’ মেলেনি। প্রয়োজন মতো ‘পাস’ না পেয়ে আজ থেকে
সাত দিন চুঁচুড়া আদালতে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন সেখানকার আইনজীবীরা।
চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট সূত্রে দাবি করা হয়েছে, এ বার যে হেতু ষষ্ঠী ও সপ্তমী একই দিনে পড়েছে, তাই তারা মনে করছে আজ থেকে শহরের রাস্তায় দর্শনার্থীদের ঢল নামবে। শহরে ঢোকার রাস্তাগুলিতে ‘নো-এন্ট্রি’র পাশাপাশি আজ বিকেল ৩টে থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ থাকবে। এই বিধিনিষেধ থাকবে দ্বাদশীর সকাল পর্যন্ত। প্রয়োজনে সকালেও যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা হতে পারে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় চন্দননগর থানার সামনে স্ট্র্যান্ডে আয়োজিত পুলিশের তরফে পুজোর গাইড ম্যাপ উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে ওই কথা জানান পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেন, মেয়র রাম চক্রবর্তী প্রমূখ। এ দিন শিশুদের ব্যাচ, পুলিশ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পরিচয়পত্র দেওয়া হয়।
পুলিশ কমিশনারের কথায়, "জিটি রোড ও দিল্লি রোড থেকে শহরে ঢোকার মুখগুলি ছাড়া বেশিরভাগ নো-এন্ট্রি জ়োনে ঘুরপথে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে। ছটপুজোয় গঙ্গার পথে যাওয়া পুণ্যার্থীদের জন্য নিয়ম শিথিল করা হবে।’’
যথারীতি এ বারও শহরবাসীর যাতায়াতের সুবিধার জন্য কমিশনারেটের পক্ষ থেকে ‘এন্ট্রি পাস’ বিলি করা হয়েছে। কিন্তু ফের সেই পাস বিলিকে ঘিরে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ। অনেকের অভিযোগ, আবেদন জানানো সত্ত্বেও পাস মেলেনি। কারও অভিযোগ, পাস বিলিতে অনিয়ম হয়েছে। অনেকেরই অভিজ্ঞতা বলছে, পুজোর দিনগুলিতে পুলিশের ‘অতি সক্রিয়তা’র জেরে তাঁদের যাতায়াতে সমস্যা হয়। এমনকি, পাস না-থাকলে হেনস্থার মুখেও পড়তে হয় বলে অভিযোগ।
এ শহরের কয়েকশো আইনজীবীর কর্মক্ষেত্র চুঁচুড়া আদালত। প্রতি বারেই তাঁদের পাসের জন্য কমিশনারেটের কাছে আবেদন জানানো হয়। হুগলি জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শুভাশিস চন্দ জানান, গত বছর ৭০টি পাস মঞ্জুর করা হয়েছিল কমিশনারেটের তরফে। এ বারে ২৫০টি পাসের জন্য আবেদন করা হলেও হাতেগোনা কয়েকটি দেওয়া হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। তিনি বলেন, "চুঁচুড়া থেকে ফেরার সময়ে চন্দননগরের বহু আইনজীবী সমস্যায় পড়েন। প্রতি বছরই এমনটা হয়। আমরা তাই
আজ (শনিবার) থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত চুঁচুড়া আদালতে কর্মবিরতি পালন করব।’’
আইনজীবীদের অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার। সাংবাদিক বৈঠকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলেই তিনি মঞ্চ ছেড়ে বেরিয়ে যান। তবে, কমিশনারেটের আর এক কর্তা বলেন, ‘‘পাস সীমিত সংখ্যক হয়। প্রয়োজনের গুরুত্ব বুঝে তা বিলি করা হয়।’’
কিন্তু হঠাৎ প্রয়োজনে বেরোতে গিয়ে সাধারণ মানুষের নাকাল হওয়ার অভিজ্ঞতাও কম নয়। বছর দুয়েক আগে রথের সড়কের এক ব্যক্তি পুজোর সময়ে মাকে কলকাতায় চিকিৎসা করিয়ে নিয়ে আসার পথে চন্দননগরে ঢুকতে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন বলে অভিযোগ। বহু অনুনয়-বিনয়ের পর ঘুরপথে নিজের শহরে ঢুকতে দেওয়া হয় বলে তিনি জানান। ওই এলাকারই আর এক বাসিন্দার ক্ষোভ, বাবা অসুস্থ। মাঝেমধ্যে তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হয়। গত বছর থেকে পাসের আবেদন করে আসছেন। কিন্তু এক বারও পাননি। গোন্দলপাড়ার এক মহিলার দাবি, ‘‘নিজের স্কুটির জন্য গত চার বছর ধরে পাসের আবেদন করেও মেলেনি।’’
পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, পুজোর ক’দিন দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য মোটরবাইকে টহল দেবে পুলিশ। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া পুলিশের বড় গাড়ি পথে নামবে না। গত বছর পুজোয় ২৫০০ পুলিশকর্মী মোতায়েন ছিলেন। এ বার সংখ্যাটা বাড়বে। যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ৭০০ হোমগার্ড রাস্তায় থাকবেন। রাস্তাঘাটের পাশাপাশি রেল স্টেশনে লাগানো অতিরিক্ত সিসিক্যামেরাতেও নজরদারি চালানো হবে। থাকছে ড্রোনও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy